গত ১৫ মার্চ ২০০৪ রাত ১১টায় আমার অনুজপ্রতিম সালাম আজাদ টেলিফোন করে বল্লেন-সা’দ উল্লাহ ভাই শুনেছেন, সরকার এই চলতি সপ্তাহের ‘দেশ’ পত্রিকা ‘ব্যান’ করেছে? বললাম কেন? সালাম আজাদ বললেন- সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ‘প্রথম মানবী’ বলে একটি ছোটগল্পে ‘লিলিথ’ বলে এক রমণীকে প্রথম মানবী বলেছেন এবং ঐ গল্পে আদম ও লিলিথের প্রেমলীলার এক চিত্র এঁকেছেন। আমি বললাম-পড়ে দেখবো।
সরকার কতৃক নিষিদ্ধ বই-ম্যাগাজিন আজকাল রাস্তায় যাযাবর শ্রেণীর হকারদের কাছে পাওয়া যায় । কারণ এই সব বই-ম্যাগাজিনের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ, কৌতুহল ইত্যাদি বাড়ে। সব নিষিদ্ধ বস্তুর উপর মানুষের আকর্ষণ বেশি। সুতরাং জোগাড় করতে বেশি বেগ পেতে হয়নি।
পড়লাম।
এই ছোট গল্পে এমন কোনো আপত্তিকর শব্দ বা বক্তব্য ছিল না । তবে শিল্পী কৃষ্ণেন্দু চাকীর অলঙ্কার ছিল গল্পের সুত্র ধরে। তখনো আদম নিষিদ্ধ ফল ভক্ষন করেনি তাই উভয়েই ছিল আবরণহীন। গল্পে সাপ আছে, কিন্তু কুমন্ত্রনা নেই। তবে যেহেতু সাপ ‘ফ্যালাস সিম্বল’, সেই কারণে স্নানরত নগ্ন পুরুষকে দেখে নগ্ন নারীর ‘উত্তাল বক্ষস্পন্দন’ শুরু হলো। লেখক বর্ণনা করেছেন-
‘… এক সময় আদম বলল, লিলিথ তুমি কাঁদছ? তুমি শুয়ে পড়, আমি তোমাকে আচ্ছাদিত করে থাকব।
পরম যত্নে সেই পুরুষ তার সঙ্গিনীকে শীতের বাতাস ও বৃষ্টির ছাঁট থেকে রক্ষা করার জন্য সর্বাঙ্গ আবৃত করে রইল। বুকে বুক, মুখে মুখ, হাতে হাত, উরুতে উরু।
উষ্ণতা ক্রমশ সঞ্চারিত হতে লাগলো শরীরের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আগুনের মতো এতে দহন নেই, আছে পরস্পরের মধ্যে মিলিয়ে যাওয়ার জন্য আশ্লেষ। এক সময় আদম অনুপ্রবেশ করল লিলিথের গভীরে।’
লিলিথ নারী-পুরুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। কিন্তু আদম তা নয়। আদম পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে। এরপর লিলিথ বিপরীত বিহারের দাবি তুললো। কিন্তু আদম রাজি হলো না। ‘আদম সবলে লিলিথকে ভূপাতিত করতে যেতেই সে কোনোক্রমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড় দিলো।
এরপর শুরু হলো আদম-লিলিথের মানসিক দ্বন্দ্ব। দেবদূত এসে লিলিথের অবাধ্যতার জন্য তাকে দিলো চিরনির্বাসন। তার গর্ভের সন্তানও নস্ট করা হলো। অতৃপ্ত রতি নিয়ে লিলিথ আদমকে অনুসরণ করে দেখল, আর একটি নারী লিলিথের মতো। আদমের জন্য সৃষ্টিকর্তা গড়ে দিয়েছেন, প্রকৃতির উপাদান দিয়ে নয়, হাওয়া কে গড়া হয়েছে আদমেরই একটি পঞ্জর দিয়ে। তাই সে আদমের সঙ্গে একাত্ম; সে সব সময়ে আদমের কথা মান্য করে …।’
শেষে লেখক বলেছেন-‘তারপর কেটে গেলো বহু ঋতু ও যুগ। অনেক পুত্র-কন্যার জন্ম দিলো দুজনে। তাদেরও সন্তান-সন্ততি হলো। বৃদ্ধ হয়ে পিতামহ ও পিতামহী হিসেবে সুখ ভোগ করে এক সময় আদম ও হাওয়া বরণ করলো মৃত্যু।
কিন্তু লিলিথ রয়ে গেলো। অতৃপ্ত, বঞ্চিত, অপূর্ণ রতির ক্ষোভ নিয়ে সে বেঁচে রইল যুগের পর যুগ। তার নশ্বর শরীর অদৃশ্য হয়ে গেল বটে, তবু সে দেখা দেয় যুবা পুরুষের স্বপ্নে।
এইভাবে লেখক গল্পটি শেষ করেছেন। আর একটি কথা তিনি বলেছেন- টিট্টিভ লিললিথ পাখির ডাক থেকেই রমণীটির নাম লিলিথ। উপন্যাসে, গল্পে অনেক কল্পনা থাকে, থাকে প্রকৃতির বর্ণনা, কিংবদন্তি ও কল্পকাহিনীর কথা। এর উপর ভর করেই গল্পকার ও ঔপন্যাসিক এগুতে থাকেন। এই গল্পে আপত্তিকর এমন কিছু নেই যে জন্য একটি বহুপঠিত পত্রিকা নিষিদ্ধ হতে পারে। আর এতে মুসলিমদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করার মতো কোন আপত্তিকর বক্তব্যও নেই। আদম ও হাওয়া বাইবেলের কথা। হাওয়া আদমের পাঁজরের হাড়ের দ্বারা তৈরি বা সৃষ্ট, এটাও বাইবেলের কথা। কুরআনের কোনোখানেই নেই যে হাওয়া আদমের পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্ট। হাদিসে থেকে থাকলেও তা বাইবেলের অনুকরণে বর্ণিত হতে পারে। কুরআনের বাণী নয়। তাই এই গল্প মুসলমানদের গায়ে না লাগার কথা। কিভাবে এবং কাদের সুপারিশে সরকার কতৃপক্ষ না পড়ে আবেগতারিত হয়ে বইপুস্তক-ম্যাগাজিন ইত্তাদি নিষিদ্ধ করেছেন, সাধারন পাঠকের বোধে আসে না।
লিলিথের কথা কুরআন হাদিসে কথাও নেই। এর রেফারেন্স পাওয়া যায় ওল্ড টেস্টামেন্টে ইসাইয়া পুস্তকে চ্যাপ্টার ৩৪ আয়াত ২৪ এ। এখানে বলা হয়েছে …and the satur shall cry to his fellow; the screech owl also shall rest. বাংলা বাইবেল বলছে,’ এবং ছাগেরা আপন আপন মিত্রকে আহবান করিয়া আনিবে; আর সেখানে নিশাচর বাস করিয়া বিস্রামের স্থান পাইবে’। এখানে ‘Screech owl’- এর বাংলা করা হয়েছে ‘নিশাচর’ বলে।
আইজাক এসিমভ তার ‘Guide to bible’ গ্রন্থে বলেছেন- এখানে -‘the screech owl also rest there’ হলো হিব্রু শব্দ লিলিথ এর ইংরজি অনুবাদ; এবং এই নামটা দেয়া হয়েছিল নৈশ দানবকে। লিলিথ শব্দটা এসেছে লিলিটু থেকে যা ব্যাবিলন কিংবদন্তিতে ছিল। এই লিলিটু সেমেটিক শব্দ, অর্থ রাত্রি। রিভাইসড স্ট্যান্ডার্ড ভার্সান এ বলা হয়েছিল there shall be night Gag alight.
অন্ধকার সবসময়েই ভয়ের বা ভীতির কারণ হয় । মনে হয় কি একটা ভয়ঙ্কর দানব বা ভুত তেড়ে আসছে; যা দেখা যায় না। স্তিমিত চন্দ্রালোকের আধো ছায়া আধো আলোর মাঝে দানবটা দেখা দেয় আবার মিলিয়ে যায়-যা মানুষকে আতঙ্কিত করে তোলে।
পরে ইহুদি রাবিগণ এই ভীতিসূচক অন্ধকারকে পরিবরতন করে, রুপান্তরিত করে একটি সুন্দর রমণীতে এবং এই রমণী ইভের সৃষ্টির পূর্বে অ্যাডামের স্ত্রী ছিল। অ্যাডাম লিলিথকে সহ্য করতে পারেনি কারণ সে খুব অবাধ্য রমণী (কিংবা আদমের গুরুগম্ভীর ভাব লিলিথের সহ্য হয়নি), তাই শেষে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। তারপর লিলিথ নৈশ দানবীতে পরিনত হয়। অন্য এক বর্ণনা মতে দানবী হয়ে সর্পের সঙ্গে যোগ দিয়ে অ্যাডাম ও ঈভকে স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে। এরপর লিলিথ, বিশেষ করে, শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হয়েছিল, কেননা তার সন্তানাদি ছিল না বিধায় মেজাজ সবসময় তিরিক্ষি হয়ে থাকতো। (পৃ.৫৪৫-৪৬)
মোস্তফা মীর তার পুস্তক ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র’-এ লিখেছেন ‘ইহুদি পুরাণ অনুসারে আদি নারী হচ্ছেন লিলিথ। আদমের স্ত্রী। সর্বগুণে গুনান্বিতা এই সুন্দরী নারীতে উপগত হওয়ার সাধ্য ছিল না কোনো পুরুষের। তার উপর তিনি ছিলেন রীতিমতো অবাধ্য। লিলিথ যৌন সঙ্গমকালে আদমের নিচে শয়ন করতে রাজি হননি। তার অকাট্য যুক্তি, দুজনেই তারা মাটির তৈরি। সুতরাং মানুষ হিসেবে দুজনের মর্যাদাই সমান। ধস্তাধস্তি চলতে চলতে উত্তেজিত আদম এক পর্যায়ে লিলিথকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে সে মন্ত্র পড়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। তারপর ঈশ্বর আদমের দ্বিতীয় স্ত্রী অর্থাৎ প্রথম হাওয়া তৈরি করতে শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ করে সেই প্রক্রিয়া দেখে আদম ঘৃণাবোধ করতে থাকেন। তখন প্রথম হাওয়াকে নিশ্চহ্ন করে তৈরি করা হয় দ্বিতীয় হাওয়া।’
‘ইহুদি পুরাণে আদি নারী একজন কিন্তু আদমের স্ত্রী তিনজন। খ্রিস্ট ধর্মে একজন এবং ইসলাম ধর্মেও একজন। খ্রিস্ট ও ইসলাম ধর্মের আদি নারী হাওয়া ইহুদি ধর্মে আদমের তৃতীয় স্ত্রী। প্রথম দুজনার প্রসঙ্গ পরিহার করে এই তৃতীয় স্ত্রীর কাহিনী প্রথম আদি নারী হয়ে বাইবেলে উঠে এসেছে। ইসলাম ধর্মের হাওয়া সেই বাইবেলের কাহিনীর যুগোপযোগী উন্নয়ন।’
‘এই তিন ধর্মের কাহিনী থেকে এটা পরিষ্কার যে, ইহুদি পুরাণের লিলিথ মানব ইতিহাসের প্রথম নারী’ চরিত্র। প্রথম হাওয়া দ্বিতীয় চরিত্র এবং দ্বিতীয় হাওয়া তৃতীয় চরিত্র। উল্লেখ্য, আমরা এই কাহিনী পেয়েছি লিপিবদ্ধ অবস্থায় মুসার সময়ে, যখন আদমকে প্রেরিত পুরুষ আখ্যা দেওয়া হয়। তার আগে আদমের কাহিনীর সঙ্গে আদি নারীর গল্পও মুখে মুখে চলে এসেছে এবং স্মৃতিতে বহন করেছে আদমের বংশধরেরা। দেখা যাচ্ছে, আদি মানব, আদি মানবী, যৌনকর্ম, ঈশ্বর ও ধর্ম এই বিষয়গুলোকে পরস্পর সংযুক্ত করে একটি অন্যটির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করার উদ্দেশ্যে তাওরাতের লিপিকাররা-এই কাহিনী এভাবে সাজিয়েছেন। হিব্রু লিপিকাররা মানুষের মুখে মুখে কোন কাহিনী শুনেছিলেন তা আজ আর জানা সম্ভব নয়। তবে বর্ণিত কাহিনীতে দেখা যায়, এই নারীরা আদমের সময়ের মানুষ। আদম ছিলেন আদিম যুগের নিম্নপর্যায়ের মানুষ অর্থাৎ তখন অযাচার যুগ। লিলিথ, প্রথম হাওয়া এবং দ্বিতীয় হাওয়া ছিলেন অযাচার যুগের মানুষ। খাবার জোগাড় ও যৌনলিপ্সা মিটানোই ছিল তখনকার দলবদ্ধ মানুষের একমাত্র কাজ। কারো নিজস্ব নারী বলে কিছু ছিল না। গাভীর যোনি যেমন বনের সব ষাঁড়ের জন্য উন্মুক্ত ছিল ঠিক তেমনি ছিল আদিম মানুষের যৌন অভ্যাস। স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হোক যা কোনো নারী তখন ছিল যে কোনো পুরুষের। মোট কথা গম্য অগম্যের কোনো বাধানিষেধ ছিল না। সমাজ গড়ে ওঠেনি। বিয়ে চালু হয়নি। কেউ কারো স্বামী নয়। কেউ কারো স্ত্রী নয়। সবাই সবার পুরুষ। সবাই সবার নারী। মাতা-পুত্র, পিতা-কন্যা,ভাই-বোন সবাই সবার জন্য। মানুষ তখন দলবদ্ধ হয়ে থাকে কেবলই প্রয়োজনে। শিকারের প্রয়োজন,হিংস্র প্রাণীর হাত থেকে বাঁচার প্রয়োজন আর প্রয়োজন যৌন তৃষ্ণা মেটানো। সম্ভবত মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থাই মানব জাতির শুরুতে এরকম জীবনযাপন গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষকে উপহার দিয়েছিল (পৃ. ২৩,২৪,২৫)।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এই ছোট গল্প লেখার আগে নিশ্চয়ই ইহুদি পুরাণ থেকে এই গল্পের নায়িকা লিলিথের কাহিনী সংগ্রহ করেছেন। যদি করে থাকেন তাহলে বাইবেলের (ইসরাইয়া পুস্তকের) Screech owl বা লিলিথ এর কথা জেনেছেন। তাই খটকা লাগছে লিলিথ নাম টিট্টিভ বা লিললিথ পাখির ডাক থেকে কি করে হলো। আর আদম ও হাওয়া অনেক পুত্র কন্যা জন্ম দিয়ে মৃত্যুবরণ করলো কিন্তু লিলিথ রয়ে গেলো অতৃপ্ত, বঞ্চিত ও অপূর্ণ রতির ক্ষোভ নিয়ে গল্পের এই যে সমাপ্তি এর সঙ্গে এসিমভের ‘গাইড টু বাইবেলে’ বর্ণিত বক্তব্যের সঙ্গে যেন মিলছে না। আদমের জবরদস্তির জন্য লিলিথ যে মন্ত্র পড়ে অদৃশ্য হলো আর দেখা গেলো না, তা হলে গেলো কোথায়?
এসিমভের ধারণাটা মনে হয় যুক্তিযুক্ত ঘটনার সঙ্গে কারণ, লিলিথকে ছেড়ে অন্য নারীতে আদমের জীবন, লিলিথের নারী মনে ক্ষোভের সঞ্চার হওয়ারই কথা, তাই সাপের সঙ্গে মিশে আদম ও ইভকে স্বর্গচ্যুতি করার মাঝে তার প্রতিহিংসা চরিতার্থের ইঙ্গিত বহন করে । অতৃপ্ত কামনা নিয়ে তার মতো সাহসী ও স্বাধীনচেতা নারীর বেঁচে থাকার কথা নয়।
সে যাই হোক, গল্প গল্পই । বাইবেলের সঙ্গে যে হুবুহু মিল থাকতে হবে এমন কথা কেউ বলে না, কারণ লেখক গল্প লিখেছেন, ইতিহাস নয়। আর এই জন্য দেশ পত্রিকা ‘ব্যান’ করার কোনো যুক্তি খুঁজে পাই না যখন মোস্তফা মীর এর ‘আদম ইতিহাসের প্রথম চরিত্র’ বইটি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
এই কয়েক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকটি বইপুস্তক ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ করে তাদের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন; কারন, আগেই বলা হয়েছে নিষিদ্ধ বস্তুর প্রতি মানুেষর একটা অদম্য আকর্ষণ আছে। তসলিমার ‘ক’ উপন্যাস বন্ধ হওয়ায় তার চাহিদা এমন বেড়েছে যে, রাস্তাঘাটে হকাররা পুলিশের নাকের ডগায় বিক্রি করেছে । তারপর আহমদিয়াদের সকল প্রকাশিত বইপুস্তক ও প্রকাশনা নিষিদ্ধ হওয়ায় মানুষ আহমদিয়া সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী হয়েছে; ইয়ং মুসলিম সোসাইটি প্রকাশিত ‘সংস্কার’ গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয়েছে; তারপর হলো ‘দেশ’ পত্রিকা। আরও কিছু নিষিদ্ধ হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।
তসলিমা নাসরিনের ‘দ্বিখণ্ডিত’ বইটি পশ্চিমবঙ্গ বামফ্রন্ট সরকার নিষিদ্ধ করলে এক সমালোচনায় মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন, ‘নিষিদ্ধকরন কোনো পন্থা নয়। তাকে সমর্থনও করা যায় না…যদি সঙ্ক্রান্তও স্পর্শকাতরতার প্রশ্ন ওঠে, খোলাখুলি আলোচনা করে তার নিষ্পত্তি হোক। আজ পাঠক মন যথেষ্ট পরিণত। কি পড়বে, তার কতটুকু নেবে, কতটা নেবে না, তা পাঠক বোঝে। সে ক্ষেত্রে দেখা গেলো, পাঠকদের ভাবতেই দিলেন না সরকার। এতো অবিশ্বাস জনমতের পরোয়া না করেই বইটি ‘নিষিদ্ধ’ করা?
আমরাও তাই বলি। কোনো পুস্তক বা উপন্যাস নিষিদ্ধ করার আগে পাঠককে পরোয়া না করে সরকার এক শ্রেণী গোষ্ঠীর চাপে বই নিষিদ্ধ করেছেন। আসলে মনে হয় তারা পড়েন না, পড়লে হয়তো ফল অন্য রকম হতে পারতো। বাংলাদেশে এখন সেটি হওয়ার জো নেই।
ভোরের কাগজ .০৪.২০০৪