প্রবন্ধধর্মইসলামোফোবিয়া এবং ধ্বংস বিষয়ক ভাবনা
প্রবন্ধ ও নিবন্ধ

ইসলামোফোবিয়া এবং ধ্বংস বিষয়ক ভাবনা

পৃথিবী ইশ্বরের বানানো কি না, এই ব্যাপারে আপনার সন্দেহ থাকলেও, পৃথিবী যে ইশ্বরের ইচ্ছায় ধংস হবে, এটা একশভাগ সত্য। মানুষের হাতে, ইশ্বর বা স্রষ্টার নামেই পৃথিবী ধংস হবে, এটা নিশ্চিত।

ইদানিং এসক্যাটোলজি নিয়ে গভীরভাবে জানার চেষ্টা করছি।

বিষয়টা খুবই আগ্রহদ্দীপক ও চিত্তাকর্ষক। ধর্মগ্রন্থে মানুষের ভবিষ্যৎ, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কি পরিমান স্পষ্ট ইংগিত আছে, তা জানলে মানুষ খুবই চমকে যাবার কথা। এসক্যাটোলজি নিয়ে নিজ নিজ ধর্মের মধ্যে চর্চাটা আগে থেকেই ছিল। এখন মুক্ত অবাধ তথ্যের যুগে এসে, প্রতিটা ধর্মের ধ্বংসের আগাম বাণীকে পাশাপাশি এনে মিলিয়ে দেখার সুযোগ আছে, এই সুযোগটাই সামনে নিয়ে আসছে অনেক বড় বড় প্রশ্নের। সেসব প্রশ্নের গভীরে ঢুকলে, আরো অনেক বড় প্রশ্ন সামনে চলে আসে।

আমার উম্মতের দুটি দল, আল্লাহ্ তা‘আলা তাদেরকে জাহান্নাম হতে পরিত্রাণ দান করবেন। একদল যারা হিন্দুস্থানের জিহাদ করবে, আর একদল যারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আঃ)-এর সঙ্গে থাকবে।

-সুনানে আন-নাসায়ী ৩১৭৫

আবু হুরায়রা বলেছেন,

রাসুলুল্লাহ আমাদেরকে হিন্দুস্থানের জিহাদের (ভারত অভিযানের) ওয়াদা দিয়েছিলেন। যদি আমি তা (ঐ যুদ্ধের সুযোগ) পাই, তা হলে আমি তাতে আমার জান-মাল ব্যয় করবো। আর যদি আমি তাতে নিহত হই, তাহলে আমি শহীদের মধ্যে উত্তম সাব্যস্ত হবো। আর যদি আমি ফিরে আসি তা হলে আমি হবো আযাদ বা জাহান্নাম হতে মুক্ত।

-সুনানে আন-নাসায়ী ৩১৭৩

ইসলাম ধর্মের শেষ জামানার ভবিষ্যদ্বাণীতে ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’ বলে একটা ‘মহিমান্বিত’ যুদ্ধের কথা বলা আছে। এই যুদ্ধের যোদ্ধারা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ পাবেন বলে স্পষ্ট উল্লেখ আছে। এই যুদ্ধের ফলাফল হলো মুসলিমদের বিজয়। হিন্দ হবে মুসলিমদের ভুমি। ইমাম মাহদীর আগমনের পর ঘটবে এই ঘটনা। এই ভবিষ্যদ্বাণীটা একজন মুসলমানের জানার কথা, মানার কথা, বিশ্বাস করার কথা। একজন ‘খাঁটি’ মুমিন-মুসলমান মনে মনে ভাবেন —যদি ইমাম মাহদীর আগমন হয়, তাহলে তিনি এই যুদ্ধে শহীদ হবার আশা রাখবেন। যারা খাঁটি মুমিন না, তাদের হয়তো এই যুদ্ধ নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা নাই। আর যারা মুসলমান নয়, তারা কোনোভাবে তথ্যটা জানলেও বিশ্বাস করার দায় নেই।

কিন্তু ভেবে দেখেন, হাদিসের বইতে বলা আছে গাজওয়া-ই-হিন্দ হবেই। তার মানে হিন্দ বলতে তখনকার বিশ্বে যেই এলাকা বোঝানো হতো তা হচ্ছে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং মিয়ানমারের কিছু অংশ। তো, গাজওয়া-ই-হিন্দ হবার এই ভবিষ্যদ্বাণী এই এলাকার উপরই বর্তায়।

তাহলে এবার চুলচেরা ভেবে দেখা যাক। দিনক্ষণ বিষয়ক অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণীকে যদি গোনায় না ধরে চিন্তা করা হয়, তাহলে গাজওয়া-ই-হিন্দ কবে হবে সেটা কেউ জানে না। সেক্ষেত্রে এই এলাকার মানুষদের মধ্যে কেউ যদি বিষয়টা সিরিয়াসলি নেয়, তাহলে তার দিক থেকে জিনিসটা কেমন হবে? একজন ভারতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু যদি দেখেন গাজওয়া-ই-হিন্দ হবে তার দেশে, আর তাতে মুসলিমরা জিতেই যাবে —তখন এই হিন্দু ব্যক্তি গাজওয়া-ই-হিন্দ এর আগে নিজেকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করবে। তার ধর্ম, তার দেশ সে নিশ্চয়ই হাসতে হাসতে মুসলমানের হাতে তুলে দিবে না। তাই একজন হিন্দু মনে মনে একজন মুসলমানকে আগামী দিনের শত্রু ভেবে আজ থেকেই ঘৃণা করতে শুরু করবে, তাই না? যার কাছে আগামীতে একটা যুদ্ধে আমার হারতে হবে, দেশ ছাড়া হতে হবে —এটা একজন মুসলমানকে তার ধর্ম শেখাচ্ছে। পুরো মুসলমান সমাজ বিষয়টি বিশ্বাস করছে কি করছে না, সেই বিচার ছাড়াই সব মুসলমানকে নিজের শত্রু ভেবে আঘাত আসার আগেই হয়ত আঘাত করে বসতে চাইবে।

গাজওয়া-ই-হিন্দ আদৌ হবে কি হবে না, তা নিয়ে দুনিয়ার ৬১০ কোটি মানুষের হয়তো কিছু যায় আসে না। কিন্তু ৯০ কোটি হিন্দু এই ভবিষ্যদ্বাণীর জন্য একজন মুসলিমকে শত্রুজ্ঞান করার চিন্তা শুরু করতে পারে। আর মুসলিম বলতে এখানে আমি কট্টর উগ্রবাদী, ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী চিন্তা করে -সেই মুসলিম বুঝাইনি। হিন্দুদের মধ্যে এই ঘৃণা হয়তো জন্ম নিবে খুব সাধাসিধে নামেমাত্র মুসলমানের উপরও। একজন বিশ্বাসী হিন্দুর মনে এমন আশংকার কথা আসা খুবই যৌক্তিক। সে হয়তো ভাববে, বলা তো যায় না, কয়েকশ কোটি মুসলমানের মনে যে গাজওয়া-ই-হিন্দে শহীদ হবার লোভ হবে না, তার গ্যারেন্টি কী? মুসলমান তো সাবানের মধ্যেও হালাল লেখা দেখলে লোভে পড়ে গড়াগড়ি খায়, তাহলে শতভাগ নিশ্চয়তায় শহীদ হয়ে বেহেস্তে যাবার টিকেটের সুযোগ থাকলে, নামকাওয়াস্তা মুসলমানেরও ঈমান টনটনে হয়ে যাবে। ভেড়ুয়া মুসলমানও তখন যুদ্ধে ফাল দিয়ে পড়তে পারে। তাই এই ভবিষ্যদ্বাণী চিরদিনের জন্য হিন্দ জাতিকে ইসলাম বিরোধী চিন্তা করতে শিখিয়ে দিলো।

দিন দিন সারা পৃথিবীতে মুসলিমদের মতবাদ যতটা আলোচিত এখন, এমন করে আর কখনোই পুরো পৃথিবী কোনো একটা ধর্মকে বিচার করেনি। একসাথে পুরো পৃথিবীর মানুষ একটা ধর্মের আচার, অনুষঙ্গ, বিশ্বাস বা বিধি নিয়ে এত সচেতনভাবে ঘেঁটে দেখেনি। মুসলিম ফোবিয়া এখন পৃথিবীর একটা কমন ফেনোমেনা। পৃথিবীতে মুসলিম ফোবিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা নেহায়েত কম না। এই মুসলিম ফোবিকরা ইসলাম ধর্মের সমস্ত স্ক্রিপচারকে খুব খুটায়ে খুটায়ে পড়ে, জানার চেষ্টা করে। তাই এসক্যাটোলজির মত গবেষণার ধারা চর্চা প্রাধান্য পাচ্ছে। এখন একজন মুসলিম ফোবিক লোক এই গাজওয়া-ই-হিন্দ সম্পর্কে জানার পর প্রিকশন নিতেই চাইবে। কারন তার মুসলিম ফোবিক হবার প্রধান কারণই হচ্ছে মুসলমানদের টেরর ডেমন্সট্রেশান। আল্লাহর নামে কতশত মানুষ নিয়মিত সন্ত্রাস করছে, ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার জন্য হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করছে -সেই ইসলাম বলছে হিন্দে যুদ্ধ হবেই, মুসলমানরা জিতবেই। সুতরাং ইসলাম ফোবিক লোক ফোবিয়ার এক্সট্রিম শকে গেলে অবাক হবার কিছু নেই, তাই না?

ইসলাম ফোবিক মানুষেরা আসন্ন এই বোম এলার্ট জানার পর কি করা উচিত বলে মনে করেন? তারা তাই করছে। সব ইসলাম ফোবিক লোক অস্ত্রে বলিয়ান হয়ে তৈরি হয়ে উঠতে চাচ্ছে। যুদ্ধ যে একটা হবেই, এটা এখন আসলে বিশ্বের সামনে সুনিশ্চিত। কারণ মুসলিমদের যুদ্ধ করার প্রয়োজন না থাকলেও মুসলমানদের সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতির ফুলকিতেই হয়ত যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। ইসলামই ইসলাম বিদ্ধেষী একটা বড় জনগোষ্ঠীকে সংঘাতে উদ্বুদ্ধ করলো না? ইসলামের পক্ষে এবং বিপক্ষে ধ্বংসকামী মানুষের সংখ্যাটা ইসলামের কারনেই বেড়ে কয়েকগুণ হয়ে গেলো। যারা ইসলাম মানে না, তারা এই যুদ্ধের আগামবাণী বিশ্বাস করতে না পারলেও, ফেলে দিতে পারবে না কোনোদিন। কারণ হাদিসে যেহেতু উল্লেখ আছে, সেহেতু মুসলমানদের একটা অংশ এই যুদ্ধটা করেই ছাড়বে। এমনকি অনেক মুসলমান আগে আগে বেহেস্তে যাবার জন্য উম্মুখ হয়ে পারলে দরকারের দুই দিন আগেই যুদ্ধ লাগিয়ে দিতে চাইছে। সংঘাতের এই সুতীক্ষ্ণ বীজবোনা ধর্মটাকে ‘শান্তির ধর্ম’ইবা কেন বলে?

আমি জানি না, গাজওয়া-ই-হিন্দ হবে কি না। তবে আমি এটা জানি, ভারত ইসরাইলসহ অন্যান্য সমর-সমৃদ্ধ বন্ধু দেশের সাথে মৈত্রী আরো শক্ত করে নিজেকে তৈরী করে অপেক্ষা করবে। একই সাথে ইসলাম ফোবিক শক্তিদের সাথে মৈত্রী বাড়াবে, কারন মুসলিমরা তাদের ধর্মবিশ্বাস থেকে কবে গাজওয়া শুরু করবে এই অপেক্ষাতেই তো আছে। পাকিস্তানকে বর্তমান শত্রু মনে করা ছাড়াও আগামীতে বিজয়ী হবার স্বপ্ন দেখা সংঘাত উম্মুখ একজন চিরশত্রু হিসাবে দেখার কথা। এইসব ভাবনাটা শুধু আমার মনের অমুলক কল্পনা বা অর্বাচীন ভুল হিসাব হলে হয়তো বেশি ভালো লাগতো। কিন্তু খবর দেখলে মনে হয়, আমার চিন্তার গতির সাথে বৈশ্বিক রাজনীতির গতিরেখায় খুব মিলে মিলে যায়। বৈশ্বিক শক্তির মেরুকরণ হচ্ছে খুব প্রত্যক্ষভাবে ধর্মীয় অবস্থান বিচার করে।

এবার অন্য দিক থেকে দেখি। ইসলামে প্রফেসী আছে, শেষ জামানায় ইহুদীদের উত্থান হবে দাজ্জালের আবির্ভাবের মাধ্যমে। জেরুজালেম থেকে দাজ্জাল পৃথিবী শাসন করবে। নিজেকে খোদা দাবি করবে। তখন ইমাম মাহদী আসবে। দাজ্জালের সাথে ইমাম মাহদীর যুদ্ধ হবে। ‘মালহামা’ নামের সেই যুদ্ধে ৯৯% যোদ্ধা মারা যাবে। সেই যুদ্ধে ঈসা নবী আবার পৃথিবীতে ফিরে এসে দাজ্জালকে মারবে। তারপর পুরো পৃথিবী একবার ইসলাম এর শাসনের নীচে আসবে। ইমাম মাহদীর খেলাফতে ইসলামের শাসনে পৃথিবী চলবে জেরুজালেম থেকে।

এদিকে ইহুদী ধর্মের প্রফেসী হচ্ছে, পৃথিবী ধংসের আগে তাদের ধর্মে মসিয়া আসবে, তাদেরকে সেই মসিয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সেই মসিয়ার সময়ে ইহুদীরা পুরো পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবে। সেই মসিয়া শুধু ইহুদী রাষ্ট্র না, পুরা পৃথিবীকেই শাসন করবে জেরুজালেম থেকে।

খ্রিষ্টান ধর্মে আছে, ‘আর্মাগেডন’ বা ইসলামে বলা ‘মালহামা’, সেই যুদ্ধের পরে জেরুজালেমে শাসনরত এন্টি-ক্রাইস্টকে মারতে যীশু আবার ফিরে আসবেন। এই এন্টি-ক্রাইস্ট কিন্তু প্রতিষ্ঠা করবে ইহুদীরা।

তিনটা ধর্মই একজন মাত্র আব্রাহামিক খোদার কথা বলে। তিন ধর্মের খোদাই নিজেকে বাকি দুই ধর্মে বর্ণিত খোদা হিসেবেই নিশ্চিত করেন। একজনমাত্র স্রষ্টার ধারণার এই ত্রিমুখী বিশ্বাসই মানবজাতিকে নিজের ধংস নিজে আঙ্গুল দিয়ে খুঁচিয়ে নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট। আসলে নিজেই নিজের অনুসারীদের মধ্যে কুস্তি করার জন্য বাজানো ঘন্টা এটা। আলাদা করে শয়তানের কিছু করার জন্য বাকি দেখতে পারছি না। আর অন্যান্য ধর্মের খোদারা এখনো মঞ্চই ফাঁকা পায়নি গ্যাঞ্জাম লাগানোর জন্য।

ভাবতে কেমন লাগে তাই না?

মানুষ অন্য সব প্রজাতির প্রাণীদের থেকে একটু একটু করে আলাদা হয়ে, কত কত কিছু শিখে, কত কত জ্ঞান অর্জন করে, কত কত জ্ঞান চর্চা করে কতদুর আসার পর ধর্মের মতন একটা বিশ্বাস ধারন করতে শুরু করলো ভাল থাকার জন্য। নিয়ম অনুশাসন আর শান্তির দোহাই দিয়ে এই ধর্মই মানুষকে সংঘাতময় ধংসের দিকে ঠেলে দিলো। আজ না হোক কাল, আগামী কোনো এক দিন গাজওয়া না হোক অন্য নামে, হিন্দে না হোক অন্য কোথাও আগামীর যুদ্ধে ধর্মই হচ্ছে প্রধান প্রভাবক। মানুষ নিজেদের ধংস ডেকে আনবে ধর্মের নামে, ধর্মের জন্য, ধর্মের পক্ষে বা বিপক্ষে থেকে। অথচ একসময় মানুষ ভালো থাকার জন্য একটু শান্তির জন্য ধর্মে আশ্রয় খুজতে গিয়েই ধর্মকে মাথায় তুলেছিলো। মাঝে মাঝে মনে হয়, কী হতো যদি পৃথিবীতে ধর্ম না থাকতো? আমার মনে হয় মানুষ হয়তো নিজেরা অন্তত সংঘাত করে শেষ হতো না, সেটা যে কোনো কিছুর জন্যই হোক।

ধর্ম -শান্তি ছড়ানোর চেয়ে বিষ ছড়িয়েছে বেশি। সব ধর্মেই বিষ আছে, কয়েকফোটা কম আর বেশি এই যা।

বিবর্তনে মানুষ বিলুপ্ত হবার কারন হিসাবে আর্কিওলজিক্যাল রিজন যাই থাকুক আসল কারণ হবে ধর্ম।

এই বেলায় এসে একটা ইন্টারেস্টিং কথা বলি। সব ধর্মগ্রন্থে আলাদা আলাদাভাবে স্রষ্টা নিজেই এই জগত মানুষ সৃষ্টি করছেন, আবার নিজেই তা ধংস করবেন এটা বলেছেন। তাওরাতে বিশ্বাস রাখতে ইহুদীকে বলেছেন। বাইবেলে এই কথা খ্রিষ্টানকে বলেছেন, কোরানে মুসলিমকে বলেছেন। যে যার নিজের মত বিশ্বাস করে। অন্য ধর্মের স্রষ্টাদেরও এমন কাছাকাছি দাবি আছে, সেসব ধর্মের মানুষের বিশ্বাস তাই। কিন্তু যার ইশ্বরের অস্তিত্বেই বিশ্বাস নাই, সেই নাস্তিকও যখন দেখবে পৃথিবী ইশ্বর সৃষ্টি না করলেও, পৃথিবী যে ধংস হচ্ছে তার চোখের সামনে, ইশ্বরের কারনেই, তখন আসলে হিসাবটা কি দাঁড়ায়?

ইশ্বর আছে নাকি নাই?

যদি ইশ্বর না থাকে, তাহলে নানা ভাষায় দাবী করা ধংসটা হলো কার জন্য? ধ্বংসটাতো চেপে বসলো ইশ্বরের নামে জপা ধর্ম থেকে। তার মানে ধর্মের ডাকা ধংসের ক্রেডিটওতো তার। স্রষ্টার। শুধু তাই নয়, যেখানে একজন ইশ্বরের না থাকায় সম্মত হওয়ার কথা, পৃথিবী বানাতে একজন ইশ্বরের প্রয়োজন হয়নি বলে একমত হওয়ার কথা, সেখানে পৃথিবী ধংসে মোটামুটি সমস্ত ধর্মের ইশ্বরের অবদানের প্রমান পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে দাঁড়ায় সব ধরনের ধর্মের স্রষ্টার দাবী যৌক্তিক হয়ে যাচ্ছে। তার মানে এখন একজন না, সব ইশ্বরকেই স্বীকার করে নিতে হচ্ছে ধ্বংসকারী হিসাবে। কি একটা অবস্থা!!

পৃথিবী ইশ্বরের বানানো কি না, এই ব্যাপারে আপনার সন্দেহ থাকলেও, পৃথিবী যে ইশ্বরের ইচ্ছায় ধংস হবে, এটা একশভাগ সত্য।

…মানুষের হাতে, ইশ্বর বা স্রষ্টার নামেই পৃথিবী ধংস হবে —এটা নিশ্চিত।

টীকা:
১. এসক্যাটোলজি – ধর্মতত্ত্বের অন্তর্ভুক্ত। ধ্বংস, শেষ বিচার -এসব নিয়ে।

নতুন প্রবন্ধের নোটিফিকেশন পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

কপিরাইট সংক্রান্ত

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা ভালো লাগলে, গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে, কিংবা অপছন্দ করলে নিজে বকা দিয়ে অন্যকে বকা দেয়ার সুযোগ করে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। লেখার শুরুতে এবং শেষে ফেসবুকসহ ডজনখানেক এপসে শেয়ার দেয়ার অপশন আছে। চাইলে কপি করেও শেয়ার দিতে পারেন। কিন্তু দয়া করে নিজের নামে অথবা জনাবা সংগৃহীত ভাইয়ের নামে, কিংবা মিস্টার কালেক্টেড এর নামে চালিয়ে দিবেন না। মূল লেখক এবং ওয়েবসাইটের নাম উল্লেখ করবেন। এবং দোহাই লাগে, এখান থেকে কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন না।

কালের সাক্ষী
কালের সাক্ষী
একজন পেশাজীবী মানুষ, তুমুল ব্যস্ত। কিন্তু পেশাগত ব্যস্ততা তার অনুসন্ধিৎসু মনে প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি যুক্তির আলোয় মুক্তি খুঁজে বেড়ানো একজন সত্যান্বেষী। 'কালের সাক্ষী' তার ছদ্মনাম।

1 মন্তব্য

মন্তব্য করুন