প্রবন্ধবাঙালি । আনিসুজ্জামান

বাঙালি । আনিসুজ্জামান

ইতিহাসে বাঙালির গৌরব সন্ধান করতে গিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র পাঠান আমলের কথা বলেছেন : ‘পাঠান শাসনকালে বাঙ্গালীর মানসিক দীপ্তি অধিকতর উজ্জ্বল হইয়াছিল।’ তার মতে, ‘পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাঙ্গালীর মানসিক জ্যোতিতে বাঙ্গালার যেরূপ মুখোজ্জ্বল হইয়াছিল, সেরূপ তৎপূর্বে বা তৎপরে আর কখনও হয় নাই’। তিনি বলেছেন, ‘তখন বাংলার সম্পদ দেশের বাইরে চলে যেত না; তখন চৈতন্যের আবির্ভাব ঘটেছিল; তখন বৈষ্ণব সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল; তখন ন্যায়শাস্ত্রের নতুন বিকাশ ঘটেছিল।’

বাঙালি । আনিসুজ্জামান

ইতিহাসে বাঙালির গৌরব সন্ধান করতে গিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র পাঠান আমলের কথা বলেছেন : ‘পাঠান শাসনকালে বাঙ্গালীর মানসিক দীপ্তি অধিকতর উজ্জ্বল হইয়াছিল।’ তার মতে, ‘পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাঙ্গালীর মানসিক জ্যোতিতে বাঙ্গালার যেরূপ মুখোজ্জ্বল হইয়াছিল, সেরূপ তৎপূর্বে বা তৎপরে আর কখনও হয় নাই’। তিনি বলেছেন, ‘তখন বাংলার সম্পদ দেশের বাইরে চলে যেত না; তখন চৈতন্যের আবির্ভাব ঘটেছিল; তখন বৈষ্ণব সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল; তখন ন্যায়শাস্ত্রের নতুন বিকাশ ঘটেছিল।’

বাঙালি কারা? এর সরূপই বা কী? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। উপহমাদেশের জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ‘বাঙালি’ সত্তা নিয়েই বোধ হয় সবেচেয় বেশি বিতর্ক হয়েছে। এবং হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরেই প্রগতি ও প্রতিক্রিয়াশীলতার মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ‘বাঙালি’ সত্তা। তাই প্রতিক্রিয়শীল মৌলবাদি গোষ্ঠীর প্রধান লক্ষ্য ‘বাঙালি’ সত্তা। এই সত্তাকে পরাভূত করতে পরালে এই অঞ্চলে তারা ওড়াতে পারবে অন্ধকারের নিশান। তাই বাঙালি সত্তার সরূপ উন্মোচন জরুরী। — অবিশ্বাস টিম।


জাতিবাচক শব্দ হিসেবে বাঙালি কথাটার প্রয়োগ কত পুরোনো, তা ঠিক করে বলার উপায় নেই। বাংলা ভাষার আদি নমুনা চর্যাগীতিতে ‘বঙ্গালি’ শব্দটি পাওয়া যায়, তবে পণ্ডিতেরা তার এক এক রকম অর্থ করেছেন। কেউ বলেন, এটা বঙ্গাল শব্দের স্ত্রীলিঙ্গে প্রযুক্ত; কেউ বলেন, ওতে নিরাশ্রয় নিম্নশ্রেণি বোঝানো হয়েছে। চৌদ্দ শতক থেকে হয়তো আঞ্চলিক পরিচয়রূপে বাঙালি কথাটার চল হয়। তবে আঠারো শতকে ভারতচন্দ্রের কবিতায় স্পষ্টভাবে বাঙালির উল্লেখ আছে, অবশ্য পশ্চিমাদের প্রতিতুলনায়।

ইতিহাসে আমরা অন্তত তিনজনের কথা জানি যারা নিজের নামের শেষে পরিচয় হিসেবে বাঙালি কথাটি ব্যবহার করেছিলেন। এঁদের প্রথম ছিলেন শেখ নূর কুতব আলম। পঞ্চদশ শতাব্দীর বাংলার দরবেশদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ বিবেচিত হতেন। যেখানে থেকেই আসুন না কেন, তিনি পরিচিত ছিলেন শেখ নূর বাঙালি বলে। আঠোরো শতকে মুঘল সম্রাট মাহমুদ শাহের দরবারে এক সঙ্গীতজ্ঞ সাদরে বৃত হয়েছিলেন। তাঁর নাম ছিল লালা বাঙালি। উনিশ শতকে সৈয়দ আহমদ বেরিলভির এক শিষ্য ছিলেন ফেনীর সন্তান মওলানা ইনামউদ্দীন বাঙালি।

বাঙালি বলতে গর্ববোধ না করলে এঁরা কেউ নামের সঙ্গে সেই পরিচয় জুড়ে দিতেন না। তবে প্রাচীন যুগে বাঙালির অনেক অখ্যাতির কথা হিন্দুশাস্ত্রে পাওয়া যাবে। জৈনধমের প্রবর্তক মহাবীরের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের রূঢ় আচরণের উল্লেখ জৈনগ্রন্থে পাওয়া যায়। বাঙালি সম্পর্কে সবচেয়ে কঠোর উক্তি করেছিলেন উনিশ শতকের ইংরেজ শাসক ও ইতিহাসবিদ মেকলে। তিনি লিখেছিলেন, ‘মোষের যেমন শিং, বাঘের যেমন থাবা, ভ্রমরের যেমন হুল, প্রাচীন গ্রীক গান-অনুযায়ী স্ত্রীলোকের যেমন সৌন্দর্য, তেমনি বাঙালির হলো প্রতারণা।’

‘গোরু হইতে বাঙ্গালি কিসে অপকৃষ্ট?’– বঙ্কিমচন্দ্র জানতে চেয়েছিলেন। অবশ্য সে, বাঙালি উনিশ শতকের নব্য বাঙালি। প্রায় মেকলের ধাঁচে বঙ্কিমচন্দ্র সে-বাঙালির চরিত্র এঁকেছেন। বলেছেন, ‘বিধাতা শৃগাল হইতে শঠতা, কুকুর হইতে তোষামোদ ও ভিক্ষানুরাগ, মেষ হইতে ভীরুতা, বানর হইতে অনুকরণপটুতা এবং গর্দভ হইতে গর্জন— এইসকল একত্র করিয়া দিনমণ্ডল উজ্জ্বলকারী, ভারতবর্ষের ভরসার বিষয়ীভূত এবং ভট্ট মক্ষমূলরের আদরের স্থল নব্য বাঙালিকে সমাজাকাশে উদিত করিয়াছেন।’ বঙ্কিমচন্দ্র এ কথাগুলো বলেছিলেন এক বিশেষ ধরনের বাঙালিকে মনে রেখে এবং পরবর্তীকালে নিজেই মেকলের উক্তির প্রতিবাদ করেছিলেন। সে কথায় আমরা পরে আসব। তবে বঙ্কিমচন্দ্রের উপরিউদ্ধৃত প্রবন্ধ-প্রকাশের কিছুকাল পরে বিদ্যাসাগরের প্রতি শ্রদ্ধানিবেদন করে রবীন্দ্রনাথ যে-প্রবন্ধ লিখেছিলেন, তাতে তিনি বাঙালিকে অভিহিত করেছিলেন ‘দুর্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কর্মহীন, দাম্ভিক, তার্কিক জাতি’ বলে। এর আগের বাক্যগুলো সুপরিচিত হলেও বর্তমান প্রসঙ্গে উদ্ধৃতির যোগ্য:

আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না; যাহা বিশ্বাস করি, তাহা পালন করি না; ভূরি পরিমাণ বাক্য রচনা করিতে পারি, তিল পরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না; আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতালাভের চেষ্টা করি না। আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ক্রটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি; পরের অনুকরণে আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সম্মান, পরের চক্ষে ধূলি নিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিকস এবং নিজের বাক্‌চাতুর্যে নিজের প্রতি ভক্তিবিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। বাঙালি-চরিত্রের অধিকতর নিন্দার পরিচয়স্থল সন্ধান করা অনাবশ্যক। এবারে অন্যদিকটা লক্ষ্য করা যাক।

বঙ্কিমচন্দ্র বলেছিলেন যে, মেকলে যেমন বাঙালির নিন্দা করেছেন, আর কোনো লেখক আর কোনো জাতি সম্পর্কে তেমন কুৎসার কথা লেখেননি। আর তা পাঠ করে শুধু যে অন্য জাতীয় ব্যক্তিই বাঙালি সম্পর্কে একটা বিশেষ ধারণার বশবর্তী হয়েছেন, তা নয়, বাঙালিরা নিজেরাও তা বিশ্বাস করে নিয়েছেন। বঙ্কিমচন্দ্র বলেন: ‘ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙ্গালীর চরিত্র সমালোচনা করিলে কথাটা কতকটা যদি সত্য বোধ হয়, তবে বলা যাইতে পারে, বাঙ্গালীর এখন এ দুর্দশা হইবার অনেক কারণ আছে। মানুষকে মারিয়া ফেলিয়া তাহাকে মরা বলিলে মিথ্যা কথা বলা হয় না। কিন্তু যে বলে যে, বাঙ্গালীর চিরকাল এই চরিত্র, বাঙ্গালী চিরকাল দুর্বল, চিরকাল ভীরু, স্ত্রীস্বভাব, তাহার মাথায় বজ্রাঘাত হউক, তাহার কথা মিথ্যা।’

ইতিহাসে বাঙালির গৌরব সন্ধান করতে গিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র পাঠান আমলের কথা বলেছেন : ‘পাঠান শাসনকালে বাঙ্গালীর মানসিক দীপ্তি অধিকতর উজ্জ্বল হইয়াছিল।’ তার মতে, ‘পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে বাঙ্গালীর মানসিক জ্যোতিতে বাঙ্গালার যেরূপ মুখোজ্জ্বল হইয়াছিল, সেরূপ তৎপূর্বে বা তৎপরে আর কখনও হয় নাই’। তিনি বলেছেন, ‘তখন বাংলার সম্পদ দেশের বাইরে চলে যেত না; তখন চৈতন্যের আবির্ভাব ঘটেছিল; তখন বৈষ্ণব সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল; তখন ন্যায়শাস্ত্রের নতুন বিকাশ ঘটেছিল।’ রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আমাদিগকে যদি কেহ বাঙালি বলিয়া অবহেলা করে আমরা বলিব, রামমোহন রায় বাঙালি ছিলেন।’ বিদ্যাসাগরকে এই বঙ্গদেশে একক’ বলে রবীন্দ্রনাথ গর্ব করেছিলেন। আমরা রবীন্দ্রনাথের গৌরব করি।

আরেকজন বিশিষ্ট লেখক বাঙালি সম্পর্কে বিশেষ গৌরবকথা লিখে গেছেন। তিনি এস. ওয়াজেদ আলি। তার মতে, বিভিন্ন জাতির শত শত বৎসরের সংমিশ্রণের ফলে উদ্ভূত বাঙালি জাতির কতকগুলো সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে: যথা: বাঙালি শান্তিপ্রিয়; যুদ্ধবিগ্রহ, মারামারি, কাটাকাটি সে ভালবাসে না। বাঙালি বুদ্ধিমান, ভাবপ্রবণ, সঙ্গীত, সাহিত্য, কলাবিদ্যা প্রভৃতিকে অন্তরের সঙ্গে সে ভালবাসে; ধর্মের বিষয়ে সে উদার মত পোষণ করে; গোঁড়ামি সে মোটেই পছন্দ করে না। বিদেশের আমদানী করা কৃত্রিম উত্তেজনা কখনও কখনও বাঙালির মনে ধর্মের গোঁড়ামির সৃষ্টি করে বটে, কিন্তু সে মনোভাব বেশী দিন স্থায়ী হয় না। কেননা, ধর্ম বিষয়ে সঙ্কীর্ণতা বাঙালির প্রকৃতিবিরুদ্ধ। নূতনের প্রতি একটা স্বাভাবিক ভালবাসা বাঙালি তার অন্তরে পোষণ করে। নূতন ভাব, নূতন প্রথা, নূতন আদর্শকে নূতন বলেই সে বর্জন করে না, পক্ষান্তরে যাচাই করে নূতনের মূল্য নিরূপণ করতে চায়। কায়িক পরিশ্রমের চেয়ে ভাবের চর্চাই বাঙালির বেশী প্রিয়। সুযোগ এবং সুবিধা পেলেই সে কাজকর্ম ছেড়ে ভাবের চর্চায় বিভোর হয়ে যায়। নাগরিক জীবনের চেয়ে বাঙালি পল্লীজীবন ও স্বভাব সৌন্দর্যকে বেশী পছন্দ করে। বাংলার ইতিহাস ধর্মের উৎকট দ্বন্দ্বে কলঙ্কিত নয়। বাংলার হিন্দু ও মুসলমান সহজে এবং স্বচ্ছন্দে পাশাপাশি বাস করে। আর গত হাজার বৎসরের ইতিহাস তাদের মধ্যে এক নিবিড় আত্মীয়তা এবং ঐক্য স্থাপন করেছে। তাদের এক জাতি বলতে এখন আর দ্বিধা বোধ হয় না।… তারপর ইউরোপীয় সভ্যতার সঙ্গে দীর্ঘ এবং ঘনিষ্ঠ সংস্রবের ফলে বাংলাদেশে এমন এক কৃষ্টি এসে দেখা দিয়েছে, যার দৃষ্টি স্বাভাবতই ভবিষ্যতের দিকে এবং বিশ্বমানবতার দিকে। পশ্চাৎমুখী সাম্প্রদায়িক কৃষ্টি সব ক্ষেত্রেই পিছে হটে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক ভাব (Democratic spirit) ভারতের অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশী গভীর এবং ব্যাপক। ভারতের রাজনীতি ক্ষেত্রে বাঙালিই গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদের প্রধান এবং বিশ্বস্ত সমর্থক।

এস. ওয়াজেদ আলির এই প্রেক্ষণ যদি অতিরঞ্জিত বলে মনে হয় তবে ভবিষ্যতের বাঙালির যে- চিত্র তাঁর চোখে ফুটে উঠেছিল, তা খুবই আদর্শায়িত বলে মনে হবে। তার ভবিষ্যতের বাঙালি এখনো দেখা দেয়নি। কিন্তু স্বপ্ন কি তিনি একা দেখেছিলেন, অন্যেরা দেখেননি? বাঙালির ভবিষ্যতে কি অন্যদের আস্থা ছিল না?

বঙ্কিমচন্দ্র মনে করতেন, ‘জাতির উন্নতির জন্যে চাই বাহুবল, তবে বাহুবল মানে শারীরিক শক্তি নয়। উদ্যম ঐক্য সাহস ও অধ্যবসায়ের যোগফল হলো বাহুবল। তাঁর মতে, এই চারিটি বাঙ্গালির কোন কালে নাই, এজন্য বাঙ্গালির বাহুবল নাই। কিন্তু সামাজিক গতির বলে এ চারিটি বাঙ্গালি চরিত্রে সমবেত হওয়ার অসম্ভাবনা কিছুই নাই।’

কী করে তা হবে?

যদি কখন (১) বাঙ্গালির কোন জাতীয় সুখের অভিলাষ প্রবল হয়, (২) যদি বাঙ্গালি মানেরই হৃদয়ে সেই অভিলাষ প্রবল হয়, (৩) যদি সেই প্রবলতা এরূপ হয় যে, তদর্থে। লোকে প্রাণপণ করিতে প্রস্তুত হয়, (৪) যদি সেই অভিলাষের বল স্থায়ী হয়, তবে বাঙ্গলির অবশ্য বাহুবল হইবে। বাঙ্গালির এরূপ মানসিক অবস্থা যে কখন ঘটিবে না, একথা বলিতে পারা যায় না। যে কোন সময়ে ঘটিতে পারে। ১৯৭১ সালে আমাদের দেশে তাই ঘটেছিল।

আর রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, বাঙালির উন্নতির উপায় মানুষ হওয়া। কীভাবে আমরা মানুষ হতে পারি, সে সম্পর্কে তাঁর দীর্ঘ, ব্যাপক ও গভীর বক্তব্য ছিল। তার মধ্যে একটির উল্লেখ করি। গত শতাব্দীর শেষে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন:

বাঙালির প্রতি বাঙালি কিরূপ ব্যবহার করে সেইটে গোড়ায় দেখা উচিত। কারণ, তাহারই উপর আমাদের সমস্ত শিক্ষা নির্ভর করে।… আমাদের আজন্মকালের প্রতিনিয়ত অভ্যাস ও দৃষ্টান্তে আমাদিগকে অন্ধ বাধ্যতার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করিয়া রাখে; তাহাতে আমরা অধীনস্থ লোকের প্রতি অত্যাচারী, সমকক্ষ লোকের প্রতি ঈর্ষান্বিত এবং উপরিস্থ লোকের নিকট ক্রীতদাস হইতে শিক্ষা করি। সেই আমাদের প্রতিমুহূর্তের শিক্ষার মধ্যে আমাদের সমস্ত ব্যক্তিগত এবং জাতীয় অসম্মানের মূল নিহিত রহিয়াছে। গুরুকে ভক্তি করিয়া ও প্রভুকে সেবা করিয়া ও মান্য লোককে যথোচিত সম্মান দিয়াও মনুষ্যমাত্রের যে একটি মনুষ্যোচিত আত্মমর্যাদা থাকা আবশ্যক তাহা রক্ষা করা যায়।

গৃহে এবং সমাজের শিক্ষায় আমরা যখন সেই মনুষ্যত্ব উপার্জন করতে পারব, তখন আমরা অন্যেরও সম্মানলাভ করব। নির্বিশেষে সকল মানুষকে ঐক্যবন্ধনে বেঁধে দেশের কাজে অগ্রসর হতে পারলে সিদ্ধি আসবেই।

১৯৯২ সালেও আমরা তা করতে পারিনি। বিশ্বাস করি, একদিন পারব।

নতুন লেখার নোটিফিকেশন পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

কপিরাইট সংক্রান্ত

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা ভালো লাগলে, গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে, কিংবা অপছন্দ করলে নিজে বকা দিয়ে অন্যকে বকা দেয়ার সুযোগ করে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। লেখার শুরুতে এবং শেষে ফেসবুকসহ ডজনখানেক এপসে শেয়ার দেয়ার অপশন আছে। চাইলে কপি করেও শেয়ার দিতে পারেন। কিন্তু দয়া করে নিজের নামে অথবা জনাবা সংগৃহীত ভাইয়ের নামে, কিংবা মিস্টার কালেক্টেড এর নামে চালিয়ে দিবেন না। মূল লেখক এবং ওয়েবসাইটের নাম উল্লেখ করবেন। এবং দোহাই লাগে, এখান থেকে কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন না।

মন্তব্য করুন