লালমনিরহাটে ‘ধর্ষণের শিকার তরুণীর গর্ভপাতের’ পর তাদের পরিবারকে একঘরে করেছে মসজিদ কমিটি।
সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের দালালবাড়ি এলাকায় পরিবারটির বসবাস।
দালালবাড়ি মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরফান আলী বলেন, “সমাজের সবার সিদ্ধান্তে পরিবারটিকে বয়কট করা হয়েছে। মেয়ের পরিবার বিয়ের প্রমাণাদি দেখাতে পারলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হবে।”
এলাকাবাসী জানান, ১৯ বছরের এই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই এলাকার ভোলারচওড়া গ্রামের এক যুবক (২৬) ধর্ষণ করেন। পরে বিয়ে না করে গর্ভপাত করানো হয়। এ ঘটনায় শুক্রবার দালালবাড়ি মসজিদ কমিটির সদস্যরা সালিশে তরুণীর পরিবারকে একঘরে করে রাখে।
তরুণীর পরিবার থানায় অভিযোগ দেয়নি বলে থানা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মঙ্গল ও বুধবার সাংবাদিকরা তরুণীর বাড়ি গিয়ে কাউকে পায়নি। বাড়িতে তালা দেওয়া দেখা গেছে। সাংবাদিকদের দেখে স্থানীয়রা ভিড় করলে পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান বলে এলাকাবাসী জানান। পাশের বড়বাড়ি ইউনিয়নে তরুণীর নানাবাড়ি। সেখানে গিয়েও তরুণী পরিবারের সদস্যদের পাওয়া যায়নি।
নানাবাড়ির স্বজনরা জানান, তরুণীর পরিবারের কেউ এখানে আসেনি। আতঙ্কে ও লজ্জায় তারা বাড়ি ছাড়া হয়েছে।
এলাকার খোরশেদ মিয়া, আমিনুর ও ছামিদুলসহ একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে তরুণীর পরিবার বাড়িছাড়া। এলাকার লোকজন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে না।
যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ সেই যুবকের বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ভাবির সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা হয়।
তিনি বলেন, তার দেবর এখন ঢাকায় রয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিকের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করা হয়েছে।
আবু বক্কর সিদ্দিক পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তিনি টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে। তবে আবু বক্কর সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “আমি শুনেছি পরিবারটিকে বয়কট করা হয়েছে। আমি এর সঙ্গে জড়িত না।”
অভিযোগ দেওয়া হলে পুলিশ পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি শাহা আলম।
ওসি বলেন, “এলাকার লোকজনের একটি গণপিটিশন পেয়েছি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের কোনো সদস্য অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”