ঝালকাঠিতে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণের পর ১৯ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ মিলেছে। পুলিশ ঘটনা অবহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এমদাদুল থলপহরী সাবেক ইউপি সদস্য এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার পুত্র। প্রভাবশালী চক্র নানাভাবে কিশোরীর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে।
স্বজনরা জানান, বাউকাঠি গ্রামের কিশোরী ১৫ নভেম্বর পাশেই পিপলিতা গ্রামে ফুপুর বাড়িতে যাচ্ছিল। এ সময় নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য এমদাদুল থলপহরী অপহরণ করেন কিশোরীকে। তাকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় সংলগ্ন বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। বর্ষা নামে একটি মেয়ে এ ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে। এরপর সেটি দেখিয়ে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপর একাধিকবার ধর্ষণ করা হয় কিশোরীকে। এক পর্যায়ে এমদাদুল কিশোরীকে নিয়ে যান বাকেরগঞ্জের বোয়ালিয়া গ্রামে। সেখানে ফাতেমা নামে এক নারীর বাসায় আটকে রেখে ফের ধর্ষণ করা হয়। এমনকি অপরিচিত অন্য পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করা হয় কিশোরীকে। এ জিম্মি অবস্থা থেকে কিশোরী গত ৫ ডিসেম্বর পালিয়ে আসে কৌশলে। পূর্বচাঁদকাঠি এলাকায় পৌছে কিশোরী পুলিশকে ঘটনা জানায়। পরে বাড়িতে ফিরে পরিবার সদস্যদের পুরো ঘটনা অবহিত করে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে ৭ ডিসেম্বর শনিবার নিজ গ্রামে ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত এমদাদুল থলপহরী আত্মগোপন করেন। তার বাবা স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজেদ আলী থলপহরী বলেন, ‘আমাকে ওসি সাহেব থানায় ডেকেছিলেন। আমি মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেছি। ধর্ষণের কোন ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু ওরা আমাদের এলাকার লোক, সেহেতু একটা মিমাংসা করে ফেলবো।’
কিশোরীর মা বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুর। মেয়েকে ১৯ দিন ধরে খুঁজে না পেয়ে থানায় জিডি করেছি। পরে ঘটনা জানতে পারলাম। এমাদুল প্রভাবশালী, আর আমরা গরিব মানুষ। আমার মেয়ের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, আমরা তার বিচার চাই।’
ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনে মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’