নওগাঁর পত্নীতলায় স্বনামধন্য ব্যবসায়ীর ছেলের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের বিষয়টি এতদিন চাপা দিয়ে রাখা হলেও ওই গৃহকর্মী বর্তমানে সাড়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
ধর্ষণকারীর পরিবার বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ওই তরুণী ২২ মার্চ জেলা লিগ্যাল এইডের সহায়তায় আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। সাড়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে নিয়ে বর্তমানে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর পরিবার দুশ্চিন্তায় আছে।
আদালতে প্রদত্ত মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পুরাতন বাজারের স্বনামধন্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আকতার হোসেন ওরফে সাবুর একমাত্র ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে সৈকতের (৪০) স্ত্রী অসুস্থ। এজন্য বাসার কাজ ও সন্তান দেখভালের জন্য দিনরাত্রী সেবা দেওয়ার জন্য পলিপাড়া মহল্লার দরিদ্র দিনমজুর আ. সামাদের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়েকে গৃহকর্মী হিসেবে নিযুক্ত করেন।
ওই গৃহকর্মী রাতে গৃহকর্তার বাড়িতেই অবস্থান করত। কাজ শুরু করার কিছুদিন পর থেকেই আসামি গৃহকর্মীকে কুপ্রস্তাব দিতে শুরু করেন। তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নানাভাবে ফুসলাতে থাকেন। এতে রাজি না হলে ১ আগস্ট রাত ২টার দিকে গৃহকর্মীর ঘরে ঢুকে জোর করে ধর্ষণ করে এবং বিয়ে করবে বলে আশ্বস্ত করেন সৈকত। পরবর্তীতে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গৃহকর্মীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি।
এভাবে ৪-৫ মাস কেটে যাওয়ায় গৃহকর্মীর শারীরিক পরিবর্তন দেখা দিলে সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি সৈকতকে জানালে পেটের বাচ্চা নষ্ট করতে বলেন। কিন্তু গৃহকর্মী এতে রাজি না হয়ে বিয়ে করার জন্য সৈকতকে চাপ প্রয়োগ করে। গৃহকর্মীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি সৈকতের পরিবার জানতে পারলে ২০ ফেব্রুয়ারি গৃহকর্মীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে বাড়ি ফিরে বিষয়টি সে পরিবারকে জানায়।
গত ১৮ মার্চ ওই অন্তঃসত্ত্বা গৃহকর্মী থানায় মামলা করতে যান। থানা মামলা গ্রহণ না করে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন। বাধ্য হয়ে গৃহকর্মী জেলা লিগ্যাল এইডের সহায়তায় ২২ মার্চ মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে সৈকতকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে ওই গৃহকর্মীর পিতা আ. সামাদের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য লোক মারফত নানাভাবে চাপ প্রয়োগ এবং হুমকি প্রদান করছে। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম ওরফে সৈকতের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।