নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর রাউৎগাঁও এলাকায় এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে ৩ দিন আটকে রেখে তিন বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

১৬ জুন বুধবার দুপুরে অপহৃত ওই স্কুলছাত্রীকে উপজেলার বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।

এ ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নে একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী গত রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় মুদি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে যায়। ওই সময় দোকানের পাশে ওতপেতে থাকা পেঁচাইন গ্রামের আম্বর আলীর ছেলে রমজান আলীর নেতৃত্বে দোকানদার জাকারিয়া, রাউৎগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে রায়হান ও আবু তালেবের ছেলে মেহেদী হাসান মিলে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাতভর খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে সোমবার সকালে স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ ঘটনাস্থল তদন্ত করে ও স্কুলছাত্রীর সন্ধান বের করতে বিভিন্ন তৎপরতা চালায়।

একপর্যায়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ঘটনায় জড়িতদের তথ্য উদঘাটন করে। অপহরণকারীরা এ ঘটনা জানার পর বুধবার দুপুরে উপজেলার বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকায় ওই স্কুলছাত্রীকে অসুস্থ অবস্থায় রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের ফাঁড়ি পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।

অভিযোগ উঠেছে, অপহরণকারী মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় তিন বন্ধু রমজান, রায়হান ও জাকারিয়া তাকে আটকে রেখে জোরপূর্বক গণধর্ষণ করেছে। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে বিকালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নারায়ণগঞ্জ ভিক্টেরিয়া হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

অপহৃত স্কুলছাত্রীর পিতার অভিযোগ- তার মেয়েকে অপহরণ করে তিন দিন অজ্ঞাত স্থানে একটি কক্ষে আটকে রেখে তিন নরপশু গণধর্ষণ করেছে। অপহরণকারীদের চিহ্নিত করার পর তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ও পুলিশি তৎপরতার কারণে অপহরণকারীরা তার মেয়েকে রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে।

তিনি জানান, অপহরণকারীদের শর্ত ছিল মেয়েকে ফিরে পেতে ওই সড়কে আমাদের কোনো লোকজন উপস্থিত থাকতে পারবে না। তাদের কথামতো ওই স্থানে কেউ উপস্থিত ছিল না। ফেলে যাওয়ার পর তাকে উপজেলার বাগবাড়িয়া কবরস্থান এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভিকটিমকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হলে ভিকটিমের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হবে।

তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

যুগান্তর

মন্তব্য করুন