নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি আসিফকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৪ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর দেওয়ানপাড়ার সামনের হাওর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসিফ দেওয়ানপাড়া গ্রামের সান্তু মিয়ার ছেলে ও একই গ্রামের রুপ্তন মিয়ার পালিত সন্তান।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ফতেপুর ইউনিয়ের দেওয়ানপাড়ার গ্রামে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর (১৫) পরিবার জীবিকা নির্বাহের জন্য হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌরসভার শিবপাশা নামক স্থানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। মদন উপজেলার ফতেপুর গ্রামের রুপ্তন মিয়া তার ভাগ্নে (পালিত সন্তান) আসিফকে নিয়ে ওই কিশোরীর পরিবারের পাশাপাশি বাসায় বসবাস করছেন। নবীগঞ্জের একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়শোনা করে ওই কিশোরী। ধর্ষণে অভিযুক্ত আসিফ প্রায় সময়েই ওই কিশোরীকে প্রেম নিবেদন করে কু-প্রস্তাব দিত। ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে ওই কিশোরী ঘর থেকে বের হলে আসিফসহ কয়েকজন তাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার পর থেকে আসামি আসিফ পলাতক। এদিকে আসামির মামা (পালিত পিতা) রুপ্তন তার লোকজনকে দিয়ে নানাভাবে হুমকি দিয়ে ওই কিশোরীর পরিবারে লোকজনের নামে হবিগঞ্জ আদালত ও নেত্রকোনা আদালতে চাঁদাবাজির দুটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার (১৪ মে) ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাতে আসিফকে মদন উপজেলার ফতেপুরের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আসিফকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই আসামিপক্ষের রুপ্তনসহ কয়েকজন ওই কিশোরীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার (১৫ মে) সরজমিনে ওই কিশোরীর বাড়িতে গেলে তার মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। জীবিকা নির্বাহের জন্য নবীগঞ্জ থাকি। সেখানে আমার স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছে আসিফ। ঈদের দিন রাতে পুলিশ আসিফকে গ্রেপ্তার করায় তার মামা রুপ্তনসহ কয়েকজন নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। যেকোনো সময় তারা আমাদের বাড়িতে হামলা করতে পারে। এমতাবস্থায় আমরা আতঙ্কে আছি।
আসিফের মামা (পালিত পিতা) রুপ্তন মিয়া বলেন, আসিফ আমার পালিত সন্তান। তারা আমার ছেলের নামে ধর্ষণ মামলা করেছে। নবীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই ঈদে বাড়ি আসছিলাম। ঈদের দিন রাতে পুলিশ আসিফকে গ্রেপ্তার করেছে। বাদীর পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যান।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, আসিফের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি ফতেপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নবীগঞ্জ থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।