নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী থেকে সাবেক স্ত্রীকে (২২) তুলে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা ও রাতভর মারধরের অভিযোগে সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পীকে (২৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

 

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) রাত ৮টায় সাবেক স্বামী ও তার ৩ সহযাগী, সিএনজি চালক এবং অজ্ঞাত আরও ৩ জনকে আসামি করে ভুক্তভোগী ওই নারী সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

আসামিরা হলো, সাবেক স্বামী কবির হাট উপজেলার নবগ্রামের মো. ইউসুফের ছেলে ইসমাইল হোসেন বাপ্পী, তার সহযোগী একই গ্রামের রহিম (২৪), আরমান (২৫) সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের সাগর (৩৫) ও সিএনজি চালক।

স্বজনরা জানান, ছোটবেলায় বাবাকে হারান এই ওই নারী। মাও আরেকটি বিয়ে করে, স্বামীর সংসার করেন। কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নানীর কাছে থাকা অবস্থায় বখাটে ইসমাইল হোসেন বাপ্পির নজরে পড়েন তিনি। বাপ্পি অনেকটা জোরপূর্বক অপ্রাপ্ত বয়সেই তাকে বিয়ে করতে বাধ্য করে। কিন্তু বিয়ে করেও বাঁচতে পারেননি তিনি। প্রায় সময়ই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হতে হতো তাকে। শ্বশুরবাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আড়াই মাস আগে স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পীকে তালাক দেন। নির্যাতিতা নারী জেলা সদরের একটি হাসপাতালে শিক্ষানবিশ নার্স হিসাবে কর্মরত আছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৪ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নিজ কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন। সিএনজিটি এগিয়ে যাওয়ার পর সাবেক স্বামী ও আরও একজন ভুক্তভোগীর দু’পাশে উঠে বসেও। সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠার পর থেকেই তার ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে তার সাবেক স্বামী বাপ্পী ও তার সহযোগী রহিম ও আরমান। চোখ-মুখ চেপে ধরে কবিরহাট উপজেলার নবগ্রামে নিয়ে যায় তাকে। সিএনজি থেকে নামানোর পর বুঝতে পারে এটি তার সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পির বাড়ি। ফাঁকা বাড়িতে সাবেক শ্বশুর-শাশুড়ি কেউই ছিল না। ঘরের ভিতর একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে বেদম মারধর করে তার সাবেক স্বামী। রাতে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় জ¦লন্ত সিগারেটের আগুণে মুখমন্ডলে ছ্যাকা দেয় এবং অপর ২ সহযোগি ধর্ষণের চেষ্টা করে। ভোরের দিকে অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে ওই নারী পালিয়ে মাইজদী চাচার বাসায় এসে আশ্রয় নেয়। পরে, তার চাচা ও স্বজনরা হাসপাতালের চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র নিয়ে বর্তমানে এক আত্মীয়ের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে চাচার সহায়তায় সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

সুধারাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নবীর হোসেন জানান, ৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর মামলা নেয়া হয়েছে। প্রধান আসামি সাবেক স্বামী ইসমাইল হোসেন বাপ্পীকে ভোর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন