সাক্ষাৎকারওয়াজ মাহফিলের ভিতর বাহির | সুষুপ্ত পাঠক | সাক্ষাৎকার
ক্যাটাগরি:
কথোপকথন

ওয়াজ মাহফিলের ভিতর বাহির | সুষুপ্ত পাঠক | সাক্ষাৎকার

সুষুপ্ত পাঠক বর্তমান সময়ের বেশ পরিচিত ও সক্রিয় একজন ব্লগার। এই সাক্ষাৎকারে তিনি তার ভাবনা-চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মতামত প্রদান করেছেন। আমরাও চেষ্টা করেছি ওয়াজের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন করতে। আশাকরি সাক্ষাৎকারটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে।

হারাম হালালের দোটানায় পড়ে আলেম সমাজ দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এড়িয়ে চলেছেন। কিন্তু বেশিদিন এড়িয়ে যেতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তারা ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ অন্যান্য মাধ্যমে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে বাধ্য হন। কেবল সম্পৃক্ততা নয়, বরং তারা বেশ সক্রিয়ও বটে। এখন ইউটিউব ও ফেসবুকে ওয়াজ মাহফিলের হাজার হাজার ভিডিও। এসব ভিডিওতে চলে অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ, ধর্মহীনদের প্রতি সহিংসতার আহবান। আরো চলে আলেমদের বিভিন্ন গ্রুপের মাঝে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য। মাঠ ঘাট থেকে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনে উঠে আসা এসব ওয়াজ মাহফিল নিয়ে সব শ্রেণীর ব্লগার ও এক্টিভিস্টদের মাঝে চলে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, আলোচনা-সমালোচনা।

ব্লগারদের মধ্যে যিনি এ বিষয়ে সবচে বেশি আলোচনা সমালোচনা করেন, তার নাম সুষুপ্ত পাঠক। এটি তার ছদ্মনাম। সুষুপ্ত পাঠক বর্তমান সময়ের বেশ পরিচিত ও সক্রিয় একজন ব্লগার। এই সাক্ষাৎকারে তিনি তার ভাবনা-চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে মতামত প্রদান করেছেন। আমরাও চেষ্টা করেছি ওয়াজের বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশ্ন করতে। আশাকরি সাক্ষাৎকারটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং কাজে আসবে।


 

অবিশ্বাস: প্রথমে আমরা ওয়াজ মাহফিল প্রচলনের শুরুর সময়টা সম্পর্কে জানতে চাই। মুসলমানদের কোন শ্রেণীর হাত ধরে ওয়াজ মাহফিলের জন্ম? শুরুর দিকে ওয়াজের বিষয়বস্তু কেমন ছিলো?

সুষুপ্ত পাঠক: ওয়াজের ধারণা ইসলামের একদম শুরু থেকেই ছিলো। ওয়াজ অর্থ উপদেশ দেয়া। জুম্মার নামাজের খুতবাকে ‘ওয়াজ’ বলা হয়। মুহম্মদ ওয়াজ (খুতবা) করতেন মসজিদে একটা মোটা লাঠি বা ছড়ি হাতে নিয়ে। দেখবেন এখনকার মসজিদের ইমামরা সেই অনুকরণে হাতে লাঠি রেখে মসজিদে খুতবা বা ওয়াজ করছে মুসল্লিদের সামনে। কুরআনের একটি নামও ‘ওয়াজ’ বা উপদেশ। মুহাম্মদের বিদায় হজের ভাষণকে ‘ওয়াজ’ ধরে পরবর্তীকালে মুসলমানদের মধ্যে উপদেশ নির্দেশ দিতে ওয়াজ ‘মাহফিল’ অর্থ্যাৎ উপদেশ দেয়ার জমায়েত অনুষ্ঠান আয়োজন করা হতো।

হযরত মুহম্মদের মৃত্যুর ১৫০ বছরের মধ্যে মাহযাব গঠন করা হয়েছিলো। তখনো হাদিস সংকলন হয়নি। কুফার মুসলমান আর মদিনার মুসলমান ধর্মকর্মে এক রকম ছিলো না। তাদের কুরআনের ভাষা রীতিও ছিলো ভিন্ন। দেখা যেতো, কুফার আরবী যদি নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় লেখা হয়ে থাকে বিপরীতে মদিনার কুরআন ছিলো বরিশালের ভাষায়। হাদিস যেহেতু মুহম্মদের মৃত্যুর ২৫০ বছর পর সংকলিত হয় কাজেই আজকের আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের মত মুসলমান তখন সাহাবীরাও ছিলেন না! কারণ হাদিস তখন সাহাবীদের কাছে বিচ্ছিন্নভাবে রক্ষিত ছিলো। ইমাম বুখারী গোটা আরব চষে ফেলেছিলেন সেগুলো সংগ্রহ করতে। মক্কায় হাদিস পাওয়া গেলো নবী জয়তুনের ডাল দিয়ে দাঁত মাজতেন, এটা হয়ত বহুদূরের সিরিয়ার লোকজন জানতই না। বিষয়টা এরকম। হাদিস একত্রিত হবার পর একটা অভিন্ন মুহাম্মদের জীবন পাওয়া গিয়েছিলো। তার নির্দেশ, স্বভাব, অভ্যাস পাওয়া গিয়েছিলো। তার মানে মুহম্মদের সময়ই ‘সহি মুসলমান’ বলতে কিছু ছিলো না। তার মৃত্যুর ২৫০ বছর পর্যন্ত কেউ জানতই না কিভাবে ‘প্রকৃত ইসলামকে’ অনুসরণ করতে হবে! মাহযাব যেহেতু হাদিসের আগেই ইমামদের দ্বারা গঠিত হয়েছিলো তাই হাদিস আসার পরও ইমামদের অনুসারীদের রীতিতে বিশ্বাসে ভিন্নতা থেকেই গেলো। মানে ‘সহি মুসলমান’ হওয়া আর মুসলমানদের কপালে রইল না। এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে মুহাম্মদের মৃত্যুর ২৫০ বছর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মটি পূর্ণগঠিত তখনো হয়ে উঠেনি। এই সময়টার অর্ধেকের বেশি ইসলামের গৃহযুদ্ধ চলছিলো। ক্ষমতা নিয়ে মুহম্মদের সরাসরি সাহাবী ও তাদের পরবর্তী প্রজন্ম যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালিয়ে গেছে তখন কুরআন হাদিস নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় ঘটেনি। যদিও তখনো আলীর অনুসারীরা অন্যদের কাফের মুরতাদ বলছে, অপর পক্ষও একই অভিযোগ তুলছে তাদের বিরুদ্ধে। কুরআন বিকৃত করার একটা অভিযোগও তখন উঠেছিলো। মুহম্মদের প্রিয় সাহাবী আবদুল্লাহ বিন মাসুদ ছিলেন আলীর একনিষ্ঠ অনুসারী। তার কাছে রক্ষিত কুরআন থেকে ভিন্ন ছিলো ওসমান যুগের কুরআন। এই টালমাটাল সময়েই ইসলাম প্রসারে একদল সাহাবী আরব সীমান্তে পৌঁছে যান, সেখান থেকে তারা জিহাদের নির্দেশ পাওয়ার আশায় বছরের পর বছর ঘরবাড়ি সংসার স্ত্রী সন্তান ফেলে পড়ে থাকেন। এই মানুষগুলি জিহাদ করার জন্য পাগল হয় উঠেছিলো। তখনো ইসলাম একটা মলাটে প্রস্তুত হয়ে উঠেনি। এইসব ঘরছাড়া ধর্মের রাস্তায় শহীদ হবার বাসনায় দূর বিদেশে মরুভূমিতে তাবু ফেলে বছরের পর বছর পরে ছিলো কেবল জিহাদের হুকুম আসার অপেক্ষায়। কয়েক প্রজন্ম ধরে জিহাদের আশায় দূর সীমান্ত দেশে গিয়ে গৃহহীন সংসারহীন কাফেলা যুবকদের প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে তুলে। এই সীমান্ত এলাকার সাহাবীদের উত্তরপুরুষরাই যে ইসলামের ফকির সন্ন্যাসী সেটা আজকে সবাই জানে। মূলত আরবের মূল ইসলাম থেকে ঘর পরিবার বিচ্ছিন্ন এইসব মানুষের হাতেই একদেড়শ বছরের মধ্যে প্রাথমিক ‘সুফিবাদ’ বা দরবেশ ধারা গড়ে উঠে যা আসলে আরবের মুহম্মদের মূল ইসলাম থেকে খানিকটা ভিন্ন। এদেরই পরবর্তী প্রজন্ম ভারতবর্ষে আসেন ধর্ম প্রচার করতে। এই ধর্মপ্রচার আসলে ভারতে ইসলাম কায়েমের অংশ। আফগান তুর্কি রাজবংশের অনুকুল্যে এরা ভারতে আসেন। এদের প্রায় সবাই অস্ত্র হাতে ভারতীয় রাজাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জিহাদের অংশগ্রহণ করেন। তারা রাজআনুকূল্যে খানকা তৈরি করে সেখানে নৃত্যগীতের মাধ্যমে আল্লার জিকির করেন। ‘ওয়াজ’ করে মানুষদের ইসলামের দিকে আহ্বান করেন। তাদের গুরুদের যারা হয়ত আরবে গত হয়েছিলেন তাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে যে ‘ওরস’ পালন হতো সেখানে সুফি ফকির আগত ভক্ত আশেকানদের উদ্দেশ্যে ‘ওয়াজ’ করতেন। গ্রামবাংলার ‘ওয়াজ’ এখান থেকেই ছড়িয়ে পড়েছিলো ফকিরদের শিষ্য মসজিদের মোল্লার হাত ধরে। যেহেতু কৃষি প্রধান ছিলো বাংলাদেশ, তাই অগ্রহায়ণ মাসে নতুন ধান উঠার পর কৃষকের হাতে পয়সা আসত। তাই কেবল শীতকালীন সময়ে গ্রামবাংলায় মেলা যাত্রা বাউল গানের মত ওয়াজও হতো একই সময়ে। মাছের পিঠে চড়ে নদী পার হওয়া ফকির বা কুমিরের পিঠে চড়ে সাগড় পারি দেয়া দরবেশকে নিয়ে গড়ে উঠা কিংবদন্তি তখন ওয়াজের বক্তারা ভক্তিভরে প্রচার করতেন। কিচ্ছাকাহিনী এভাবেই ওয়াজে তখন আসা শুরু করে। শুরুতে ফকিরদের ওয়াজে মূর্তি পূজার মত শিরকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে বেশি আলোচিত হতো। কারণ চারপাশে হিন্দুরা বসবাস করত। আমরা যদি শাহজালাল শাহ পরাণের সময়কার কথা বলি তখন তাদের শিরকের বিরুদ্ধে প্রচন্ড রূদ্রমূর্তির কথা জানতে পারি। এতে বুঝা যায় তাদের খানকার ওয়াজে উনারা কি ধরণের ওয়াজ করতেন। এছাড়া তীতুমীর, শরীয়তউল্লাহ আর দুদুমিয়ারা ইংরেজ বিরোধী অবস্থান নিলেও মন্দিরে গরুর রক্ত ছিটিয়ে দেয়ার মত কাজ তাদের শিরকের বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট হয়। হাজি শরীয়তউল্লাহ ভারতবর্ষকে ‘দারুল হার্ব’ বলে মনে করেতন তাই কাফের শাসিত দেশে মুসলমানদের জন্য ঈদের নামাজ আদায় করা হারাম বলে ফতোয়া দেন। চিন্তা করুন, কোন সময়কালে এই ফতোয়া দেয়া হয়েছিলো! কত গভীরভাবে ধর্মীয় শাস্ত্র চর্চা তখন হয়েছিলো। শোলাকিয়া ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিলো ইসলামের এই দিক থেকেই। যারা হামলা করেছিলো তারাও বাংলাদেশকে দারুল হার্ব মনে করে। তাই ঈদের নামাজ আদায় করা এখানে মুনাফেকির পর্যায়ে পড়ে। কাজেই এই সময়কালের ওয়াজ, ইসলামী আন্দোলন, জঙ্গি হামলা দেখে হঠাৎ গাছ থেকে ফল পড়ার মত ভাবার কোন কারণ নেই। তখনকার ওয়াজে কিংবদন্তি কিচ্ছা কাহিনীর পরিমাণ বেশি হলেও ইসলামের শিরক বিরোধী, কাফের মুশরিকদের প্রতি বিদ্বেষ একই পরিমাণ জারি ছিলো অনুমান করা যায়। তীতুমীর, শরীয়তউল্লাহ ইংরেজ বিরোধী লড়াই করেছিলেন, তারা ইংরেজ শাসন হটিয়ে ভারতকে ‘দারুল ইসলাম’ করতে চেয়েছিলেন। শরীয়তউল্লাহ’র ফতোয়া মেনে তখন মুসলমানরা ঈদের নামাজ পড়েনি। এই যে আমরা আবহমানকাল ধরে বাঙালীর অসাম্প্রদায়িকতার কিচ্ছা ইতিহাসের নামে চালিয়ে দিই, তার কোন ভিত্তি নেই। শরীয়তউল্লাহ যখন মুসলমানদের নেতা ছিলেন তখন হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা করেনি। কেউ কারোর মন্দির মসজিদ ভাঙ্গতে যায়নি। কেউ কারোর পূজাআর্চা ভাঙ্গতে যায়নি। তার প্রেক্ষিততো ভিন্ন। কারণ জিহাদটা তখন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। কোন দাঙ্গা লাগেনি তার ইতিহাস যেহেতু নেই তাই তখন অসাম্প্রদায়িক উদার এক ইসলাম বজায় ছিলো, এই মতামতে আসা অবিবেচনা প্রসূত। যারা দারুল হার্ব মনে করে ঈদের নামাজ পড়েনি তাদের কোন ধরণের মুসলমান কাতারে আমরা ফেলতে পারি? আমরা জানি লালন ফকিরের বিরুদ্ধেও মোল্লাদের ফতোয়া ছিলো। কাজেই আমরা বলতে পারি না এক-দেড়শো বছর আগে আজকের ওয়াজের মত তখনকার ওয়াজ ভায়োলেন্ট ছিলো না। তবে ধরণে চেহারায় ভিন্ন ছিলো। আজকের মত অর্থ উপার্জন করার জন্য পেশাদার ওয়াজকারীর জন্ম তখন হয়নি। যেটা এখন হয়েছে। আসছি সেকথায় পরে…।

অবিশ্বাস: ইসলাম ধর্ম যেমন আরব থেকে আসা, ওয়াজ মাহফিলের রীতিও কি তেমন? নাকি বাঙালি তথা উপমহাদেশীয় সংস্কৃতি বা ধর্মীয় রীতির অনুকরণ?

সুষুপ্ত পাঠক: শায়খ আবদুল্লাহ আযম যিনি ওসামা বিন লাদেনের গুরু হিসেবে বেশি পরিচিত তিনি আফগানিস্থানে মুজাহিদ হিসেবে যোগ দিতে জোহরের নামাজের পর মসজিদে আগতদের উদ্দেশ্যে ওয়াজ শুরু করতেন, আসর ওয়াক্তে গিয়ে একটা বিরতি দিয়ে আবার মাগরিব, তারপর এশার নামাজের আগ পর্যন্ত চলত তার টানা ওয়াজ। এসব ওয়াজ আরো ভয়ানক। বাংলাদেশে এখন যে ধরণের ওয়াজ করা সম্ভব সেটা হয়ত ভারতের সব জায়গা করা সম্ভব হবে না। চীনে তো ওয়াজই করতে পারবে না। বিষয়টা জিহাদের বিধানেই বলা আছে। শক্তি ও সামর্থ অনুযায়ী মুসলমান মুখ ও পেশি ব্যবহার করবে। অন্যান্য ইসলামিক দেশে যে ওয়াজ হয় সেটা আমাদের দেশের মত নয়। সেখানকার আদলটা ভিন্ন। প্যান্ডেল টানিয়ে, মঞ্চ তৈরি করে মাইক লাগিয়ে ওয়াজ কেবলই উপমহাদেশের স্টাইল। আরব দেশে বড় বড় অডিটরিয়ামে সুধি সমাবেশের মত ওয়াজ হয়। বক্তারা ঠান্ডাভাবে কুরআন ও হাদিস থেকে ওয়াজ করেন। আমাদের এখানে বক্তারা উপস্থিত জনগণকে উত্তেজিত করে তুলতে চান। এটাকে ওয়াজ জমানো বলে। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশের ওয়াজ আদলের দিক থেকে একেবারেই আলাদা। টিপিক্যাল ‘ওয়াজ মাহফিল’ উপমহাদেশর চেহারা এখনকার নিজস্ব একটা চেহারা পেয়েছে। জসিমউদ্দিন রাহমানির একটা বয়ান নেটে পাওয়া যায়, খুব উত্তেজিতভাবে তিনি মুসলমানকে জিহাদ করতে বলছেন। মোল্লা ওমর একইভাবে জিহাদের উদ্দেশ্যে তালেবানদের কাছে একটা উত্তেজিত বক্তৃতা রেখেছিলো। হাদিসে আমরা পাই মুহম্মদ যখন সাহাবীদের ধর্মোপদেশ দিতো তখন তিনি গলা উঁচিয়ে কথা বলতেন আর তার চক্ষু রক্তবর্ণ হয়ে উঠত। একজন সেনাপতির মত তার সাহাবীদের দিকে রাগান্বিতভাবে সতর্কবাণী করতেন। ওয়াজে যে চিৎকার উত্তেজিতভাবে বক্তা ওয়াজ করেন তার উৎস সম্ভবত সচেতনভাবে এখান থেকেই এসেছে। এর মানে আমার মনে হয় ওয়াজের উপমহাদেশীয় যে চেহারা সেটা এখানকার হলেও সেটা ভারতীয় কোন ধর্মীয় জলসার মিশ্রণ বা প্রভাব নেই। হিন্দুদের ‘পাঠ’ মোটেই ওয়াজের মত কিছু নয়। ইসলামে সাম্রাজ্যবাদ একজন ইমামকে সেনানায়কের মত তার সামনে থাকা মুসলমানদের প্রতি আচরণ করতে শেখায়। শায়খ আবদুল্লাহ আযম বা মোল্লা ওমর জিহাদের রিক্রুটমেন্টে যে উত্তেজিত বক্তব্য রাখতেন সেটা ওয়াজ ধরা যাবে কিনা সেটা বিবেচনার বিষয়। আমরা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মুফতিদের সেমিনারের মত করে যে ইসলামী সম্মেলন করতে দেখি সেটাও আমাদের এখানকার ওয়াজের কাতারে ফেলে বিবেচনা করবেন কিনা তাও বিবেচনার বিষয়। তবে আভিধানিক অর্থে এগুলো সবই ওয়াজ।

অবিশ্বাস: এই যে মারফতি অথবা মারিফতি বলে একটা বিষয় আছে, এর অনুসারীদেরকে খাজা মঈনউদ্দিন চিশতির গুনগান গাইতে দেখা যায়। ‘ইসলামে গান জায়েজ’ এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন তারা। এ বিষয়ে তথ্য ও যুক্তি উপস্থাপন করে একক কথাগান গাইতে দেখা যায়। এসব গানকে তারা ‘মেহফিল’ বলে পরিচিত করেন। এটাও কি ওয়াজ মাহফিলের অংশ?

সুষুপ্ত পাঠক: হ্যাঁ, এটা ওয়াজ মাহফিলের অংশ। এরকম মারফতি হুজুরদের ওয়াজ এখনো হয়। ইউটিউবে সেগুলো পাওয়া যায়। তবে তারা কোণঠাসা হয়ে গেছে। বিদাআত শিরকি অভিযোগে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান যেহেতু আগে থেকেই জানে ইসলামে বাদ্য গান হারাম তাই তারা তেমন প্রসার করতে পারেনি। তবে এই গ্রুপটা খানিকটা উদার। এদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি তারা অমুসলিমদের বিষয়ে অন্যদের মত ততখানি কট্টর নয়। সুফিদের ইতিহাস যাই থাকুক, মাজারপন্থিদের উদার না বলে উপায় নেই। মারফতিদের কুরআন হাদিসের সমর্থন খুবই সামান্য। তারা কয়েকটা হাদিস দেখিয়ে বাদ্যযন্ত্রকে হালাল বলেন। মাওলানা ফারুকী যিনি খুন হয়েছিলেন আনসারুল্লার হাতে, তিনি সুফি, মাজারপন্থি ছিলেন। ইহুদী-নাসারা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে- এরকম ঢালাও অভিযোগের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলতেন। তিনি খুন হবার পিছনে এগুলোই কারণ ছিলো। উপমহাদেশের ইসলামের প্রবেশ সুফিদের হাতে। যে কারণে এখানে প্রচুর খানকা, মাজার, দরগা দেখা যায়। ইসলামী জলসা বা মাহফিলের সূচনা তাদের হাতেই। ছোটবেলায় আমরা যে ওয়াজ দেখেছি সেখানে প্রথমে এই ‘মেহফিল’ গান চলত। হযরত মুহম্মদের দাসী ঈদের দিন সকালে একটা চামড়ার বাদ্য বাজিয়ে আল্লার রসূলের প্রশংসামূলক গান গাইছিলো। এমন সময় আবু বকর মুহাম্মদের ঘরে প্রবেশ করে গান শুনতে পেয়ে দাসীকে ধমক দিয়ে বলেন, গান হচ্ছে শয়তানি কারবার সে কোন সাহসে আল্লার নবীর সম্মুখে বসে এই কাজ করার সাহস করছে? তখন মুহম্মদ আবু বকরকে বলেন, থাক, আজকে তো ঈদের দিন, তাছাড়া সে তো আল্লার গুণগান গাইছে…। এই হাদিসটা দেখিয়ে গানকে জায়েজ করার একটা দুর্বল চেষ্টা চলে। হাদিসটা খেয়াল করলে দেখা যাবে আবু বকর গান বাদ্যকে শয়তানের কাজ বলছে, তার মানে আবু বকর জানত এটা শয়তানের কাজ যা আল্লার রসূল পছন্দ করেন না। এটা সে কিভাবে জেনেছে? অবশ্যই মুহম্মদ সেই শিক্ষাটা দিয়েছেন। তারপর মুহম্মদই বলছে ঈদের দিন বলে আজকে একটা ছাড় দিতে, সঙ্গে যোগ করেছেন গানটা ছিলো আল্লার রসূলের প্রশংসামূলক তাই দোষের কিছু হয়নি। এর অর্থ হচ্ছে ইসলামে গান হারাম, শয়তানের কাজ। তবে বিশেষ দিনে আল্লাহ নবীকে নিয়ে প্রশংসামূলক সংগীত গাওয়া যেতে পারে…। ‘মেহফিল’ বাদ্য বাজিয়ে গাওয়া এখান থেকেই প্রেরণা পেয়েছিলো হয়ত। সংগীত শিল্প সাহিত্য সমস্ত কিছু যা দুনিয়াবী বিষয় নিয়ে রচিত হয় তাকে কুরআনের সুরা লোকমানের ৬-৭ আয়াত দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সমস্ত তাফসিরকারক এই আয়াতকে গান বাজনার বিরুদ্ধে কথা বলা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন। ইসলামে ‘দফ’ নামের একটা বাদ্যযন্ত্র বাজানোর অনুমতি আছে তাও কেবল ইসলামী গান গাওয়ার সময়। অন্যসব বাদ্যই ইসলামে হারাম। কাজেই মারফতিদের নিজেদের পক্ষে দলিল খুব দুর্বল হওয়াতে তাদের টিকে থাকা কঠিন হচ্ছে। তবে উপমহাদেশের ওয়াজ মাহফিলে মারফতিদের অনুষ্ঠানে এরকম সংগীত আগে থেকেই ছিলো। আবার এরকম ইসলামের বিরোধীতা বহু আগে থেকেই ছিলো। তীতুমীর হজ্ব করে আসার পর ভারতীয় মুসলমানদের হিন্দুদের মত নাম রাখার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেন। আমরা সব সময় বলার চেষ্টা করি ৯০ দশকের পর আরবী ইসলামের আমদানি ঘটে ভারতীয় উপমহাদেশের সহজীয়া ইসলামের অবসান ঘটেছে। এটা মোটা দাগে সঠিক নয়। শাহ আবদুল করিম-সহ অনেক বাউল সাধকই মোল্লাদের বাধার মুখে পড়ে নিজ গ্রাম ছেড়েছিলেন।

অবিশ্বাস: ওয়াজ মাহফিলে বক্তারা বিভিন্ন ধরনের গল্প বা কিচ্ছা ব্যবহার করেন। যার সাথে কোরআন বা হাদিসের সূত্রতা মেলে না। এ কারণে একটি প্রশ্ন বেশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। উপমহাদেশের মানুষ কি কোরআন হাদিসের বাংলা অনুবাদ পড়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে, নাকি ওয়াজ মাহফিলের এসব গুল্প শুনে? ইসলাম গ্রহণের আরো অনেক কারণ থাকতে পারে, কিন্তু আমি কেবল ওয়াজ মাহফিলে বলা এসব গল্পের প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইছি।

সুষুপ্ত পাঠক: উপমহাদেশের মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেছে দুটি উপায়ে। প্রথমত- রাজশক্তির দুঃশাসন-দুরাবস্থা থেকে মুক্তি পেতে, দ্বিতীয়ত- হিন্দুদের কঠিন জাতপাত থেকে মুক্তি পেতে। মুসলমান হলে বেশ কিছু সুবিধাও পাওয়া যেতো। আবার শাসকের কঠিন শর্ত থেকে মুক্তি পেতেও ধর্মত্যাগ করেছে মানুষ। হাদিস কুরআন পড়ে জেনে বুঝে দলে দলে সব হিন্দু মুসলমান হয়েছে ইতিহাসে এর কোন হদিস নেই। এভাবে পৃথিবীতে কোথাও ঢালাওভাবে ধর্মান্তরে নজির নেই। ইসলামের নানা রকম কিচ্ছা কাহিনী শুনে বিচ্ছিন্নভাবে কারোর ইসলাম গ্রহণ ভিন্ন বিষয়। জাকির নায়েকের লেকচারে হিন্দু থেকে মুসলিম হবার বানানো নাটক পরে ধরা পড়েছে। নওমুসলিম মাওলানার ওয়াজে সে কিভাবে হিন্দু ধর্ম ভুয়া এটা বুঝতে পেরে এবং ইসলামের আধ্যাত্মিক সত্য প্রমাণ পেয়ে মুসলমান হয়েছিলো- এরকম ওয়াজ শুনেও একজন হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করেনি। ওয়াজ মাহফিল কেবল মুসলমানদের মধ্যেই প্রভাব রাখতে পারে- এর বাইরে অন্য ধর্মের মানুষদের মধ্যে কোন প্রভাব রাখে না। ওয়াজ নিয়ে যদি আপনি হিন্দুদের সঙ্গে কথা বলেন, যদি তারা মনের সত্য কথাটা বলে তাহলে তারা ওয়াজ নিয়ে তাদের অসন্তুষ্ট হবার কথাই বলবে। তাদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে উপহাস করায় তারা মন:ক্ষুণ্ন। উপমহাদেশের মানুষদের ইসলাম গ্রহণ করার কিছু কিচ্ছা কাহিনী প্রচলিত আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্থানীয় হিন্দুরা দেখল মুসলমানরা তাদের চাকরবাকর সমেত এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ে। এটা দেখে ব্রাহ্মণ সমাজের হাতে নিপীড়িত নিম্মবর্ণের হিন্দুরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলো দলে দলে…। এরকম কোন প্রমাণ ইতিহাসে নেই। বরং ইতিহাসে খান জাহান আলীর মত শাসকদের কথাই জানা যায় যারা প্রতারণা করে ইসলামের প্রসার করার চেষ্টা করেছিলেন। সুফি দরগা থেকে গরু জবাই করে তার নাড়িভূঁড়ি হিন্দু মন্দিরে ফেলার ঘটনা বরং তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েছিলো। মধ্যযুগের কাব্য ‘মনসা মঙ্গল’ কিন্তু নিন্মবর্ণের হিন্দু দেবী মনসাকে নিয়ে লেখা। কাজেই এটা ব্রাহ্মণ্যবাদীদের লেখা কোন সাহিত্য নয়। এই মনসা মঙ্গলে দেখা যাচ্ছে গরীব রাখাল বালকদের ঘট পূজা ভেঙ্গে তছনছ করে দিচ্ছে কাজির লোকজন। তখন সুফির দরবারে যে ‘ওয়াজ’ হতো সেখানে শিরনি বা তোবারক দেয়া হতো গরু জবাই করে। হিন্দুদের জন্য গরুর মাংস নিষিদ্ধ। সেই গোমাংস রন্ধনই তো স্থানীয়দের দরগা জলসা ওয়াজ থেকে বহুদূরে রাখবে। এটাই আমার মত।

অবিশ্বাস: অতীতের সাথে বর্তমান ওয়াজের পার্থক্য কী? আপনি কি ওয়াজ মাহফিলের বিবর্তনকে বিভিন্ন অধ্যায়ে ভাগ করতে চাইবেন?

সুষুপ্ত পাঠক: আগের ওয়াজ মাহফিল থেকে বর্তমানে ওয়াজ মাহফিলের একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। আগের জনপ্রিয় বক্তারা কেঁদেকেটে বিভিন্ন নবী সাহাবীর করুণ কাহিনী বলে ওয়াজ করতেন। মানুষ আসলে গল্প শুনতে ভালোবাসে। এইসব বক্তারা একটা দীর্ঘ গল্প বলা শুরু করতেন। তারা একজন দক্ষ টিভি সিরিয়াল রাইটারদের মত কাহিনীকে টানটান উত্তেজনাপূর্ণভাবে গোটা ওয়াজের সময় পর্যন্ত ধরে রাখে। গল্পের নানা বাঁকে বয়ানকারী ইসলামে নারীর পর্দা, শিরক, হারাম হালাল এই বিষয়গুলিকে হাইলাইট করে শ্রোতাদের মনোযোগ দিয়ে বুঝতে বলত। এভাবেই একটি নির্দিষ্ট গল্প চলতে থাকত। আমি দেখেছি শীতের রাতে বাড়ির মহিলারা মাইকে সেই গল্পের সমাপ্তির আশায় কান পেতে শুনতে চাইতেন এরপর কী ঘটে…। এরকম ওয়াজের দিন শেষ বলতে গেলে। এখন ওয়াজ কয়েকভাগে বিভক্ত। কমেডিয়ান ওয়াজকারী হিসেবে বেশ কয়েকজন জনপ্রিয়। এরা মূলত নারীদের বেপর্দা চলাফেলা নিয়ে নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করে শ্রোতাদের হাসায়। তাদের ওয়াজের প্রধান অংশ হচ্ছে নারী শরীর। নারীর শরীর যে পৃথিবীকে ধ্বংস করে ফেলছে এটাই তাদের প্রধান কথা। এর পাশাপাশি আল্লার আইনে দেশ পরিচালনা করা, কুরআনকে সংবিধান বানানো, হিন্দু-ইয়াহুদিদের ষড়যন্ত্র থেকে সতর্ক থাকার উপদেশ হচ্ছে তাদের ওয়াজের প্রধান দিক। এই ওয়াজকারীরা এখনো নানা রকম কিচ্ছাকাহিনী বানায় ওয়াজের স্বার্থে। তবে সেটা হাদিস জাল করার মত নয়। প্রত্যহ জীবনে হুজুরের অভিজ্ঞতার কথা। যেমন হুজুর এক বাড়িতে গিয়ে দেখে সেই বাড়ির মহিলা রাতদিন ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখে আর স্বামীর কোন খোঁজখবর রাখে না ইত্যাদি। কিংবা হুজুর বাসে উঠেছে আর এক নারী তাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে… এইসব হচ্ছে কিয়ামতের যে ক’টা নতিজা, তার একটা… এরকম গল্প বলে শ্রোতাদের মজিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। দ্বিতীয় গ্রুপকে যদি এভাবে বলি ‘আবদুর রাজ্বাক বিন ইউসুফ ঘরানার’ ওয়াজ তাহলে বোধহয় ভুল হবে না। এখানে কোন কিচ্ছাকাহিনী ঠাট্টা তামাশা, অভিনয়, কৌতুকের স্থান নেই। সরাসরি হাদিস অনুবাদ করে শোনানো হবে। কুরআনের অর্থ করে বাংলা তাফসির করে শোনানো হবে। নির্দিষ্ট বিষয় ধরে বক্তা তার কথা শেষ করবে। গল্প থেকে গল্পে ছুটবে না। কুরআন হাদিসের বাইরে একটাও নিজের মতামত তারা দিবে না। বর্তমানে এই ওয়াজই অনলাইনে তুমুল জনপ্রিয়। মজাটা হচ্ছে মডারেট ইসলামের উত্থানের পর এই মোহাম্মদী ইসলামের উত্থান একটা গৃহযুদ্ধের মত! যেমন এই ঘরানার হুজুররা মডারেটদের সব রকম দাবীকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে দলিল সহকারে। এরা হাই প্রোফাইল মুফতি, আল আজহার থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। এদের মডারেটরা ‘কাঠমোল্লা’ বলে রেহাই পায় না। আবদুর রাজ্বাক, মুফতি তারিক মুনায়ের মত বক্তারা গুলশান হামলার পর তাদের ওয়াজ জঙ্গিবাদের ভূমিকা রাখছে কাগজে নাম আসলে তারা দুজনের একজন দুবাই, অপরজন আমেরিকা ট্যুরে গিয়ে কিছুদিন চুপ করে থাকে। ইউটিউবে ৬০ ভাগ জিহাদী ওয়াজ এই দুজনের একার! এদের বাইরে আরো দুটি গ্রুপ আছে যাদের নিজেদের ব্যবসা ও পার্টির পলিটিক্যাল ইন্টারেস্টের উপর ওয়াজ করে থাকে। যেমন চরমোনাই পীর, মাইজভান্ডারী, জামাতের দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। এগুলোকে রাজনৈতিক ওয়াজ বলাই শ্রেয়। এই ওয়াজকেই রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়। জামাত বা চরমোনাই পীরের ওয়াজে ঘটমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করা হয়। তাই অনেক সময়ই আওয়ামী লীগ বিএনপির মত মূলধারার পার্টির সমর্থকদের এইসব ওয়াজের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা যায়।

পরবর্তী অংশ

কপিরাইট সংক্রান্ত

এই ওয়েবসাইটের কোন লেখা ভালো লাগলে, গুরুত্বপূর্ণ মনে করলে, কিংবা অপছন্দ করলে নিজে বকা দিয়ে অন্যকে বকা দেয়ার সুযোগ করে দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন। লেখার শুরুতে এবং শেষে ফেসবুকসহ ডজনখানেক এপসে শেয়ার দেয়ার অপশন আছে। চাইলে কপি করেও শেয়ার দিতে পারেন। কিন্তু দয়া করে নিজের নামে অথবা জনাবা সংগৃহীত ভাইয়ের নামে, কিংবা মিস্টার কালেক্টেড এর নামে চালিয়ে দিবেন না। মূল লেখক এবং ওয়েবসাইটের নাম উল্লেখ করবেন। এবং দোহাই লাগে, এখান থেকে কপি করে নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবেন না।

নতুন সাক্ষাৎকারের নোটিফিকেশন পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন