বরগুনার আমতলীতে এক যুবতীকে ধর্ষণ করেছে মিজান মোল্লা নামের দুই সন্তানের জনক। ওই যুবতী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হলে ওষুধ খাইয়ে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করেছে মিজান এমন অভিযোগ ওই যুবতীর।

পুলিশ ২১ মে মঙ্গলবার রাতে মিজান মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে। ২২ মে বুধবার আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখারী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের মিজান মোল্লা কলাগাছিয়া বাজারে মোবাইল মেরামতের কাজ করে। মোরাইল মেরামতের আড়ালে ওই যুবতীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে মিজান মোল্লা ওই যুবতীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয় কিন্তু তার প্রস্তাবে যুবতী রাজি হয়নি। গত বছর ৩০ মে মিজান মোল্লা ওই যুবতীর বাড়িতে যায়। ওই সময় ওই বাড়িতে কেউ ছিল না। যুবতীকে একা পেয়ে মিজান মোল্লা তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর থেকে প্রায়ই মিজান ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে আসছে। এতে ওই যুবতী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মিজান তাৎক্ষণিক ওই যুবতীকে এ বছর ৯ মার্চ আমতলীর মহিষকাটা সিলভি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ওই সেন্টার যুবতীর আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। আল্ট্রাসনোলজিস্ট বিএম মাসুদ রানা ওই যুবতীর আল্ট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদনে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করেছেন। এ আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রতিবেদনে সন্তুষ্ট হতে পারেনি মিজান। এরপর ২৭ মার্চ ওই যুবতীকে নিয়ে পটুয়াখালীর এফপিএবি ক্লিনিকে ডাক্তারি পরীক্ষা করান। ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক তাহমিনা খানম সিদ্দিকা ডাক্তারি পরীক্ষা প্রতিবেদনে ওই যুবতী ছয় মাস ৫ দিনের অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করেন। এরপরে ওই যুবতী মিজান মোল্লাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন কিন্তু মিজান মোল্লা আজ-কাল করে টালবাহানা করতে থাকে। গত ২৮ মার্চ মিজান ওই যুবতীকে ভিটামিন ট্যাবলেটের সঙ্গে কিট-৩ নামক একটি ওষুধ এনে দেয় এবং এই ওষুধ খেলে পেটের বাচ্চা ভাল থাকবে বলে জানায়। সরল বিশ্বাসে ওই যুবতী ওই ওষুধ খাওয়ার তিন দিন পরে রক্তক্ষরণ হয় এবং বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। বাচ্চা নষ্টের খবর মিজানকে জানালে মিজান ওই যুবতীকে নিয়ে পটুয়াখালী হার্ট ফাউন্ডেশন এ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। ওই সেন্টারে যুবতীর অন্তঃসত্ত্বা পরীক্ষা করান। ওই সেন্টারের চিকিৎসক মোঃ দেলোয়ার হোসেন তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন ওই যুবতীর গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। মিজান গর্ভের বাচ্চা নষ্ট জেনে ওই যুবতীর সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। নিরুপায় হয়ে ওই যুবতী মঙ্গলবার রাতে বাদী হয়ে আমতলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) তৎসহ ৩১৩ ধারায় জোরপূর্বক ধর্ষণ ও গর্ভপাত করানোর অপরাধে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই পুলিশ মিজান মোল্লাকে তার গ্রামের বাড়ি কলাগাছিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার পুলিশ তাকে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

জনকণ্ঠ

মন্তব্য করুন