গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সহকারী প্রক্টর ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মো. হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে নেপালি শিক্ষার্থীরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচার বিভাগের নেপালি এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ১৭ অক্টোবর রবিবার দুপুরে এ মানববন্ধন করেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে আন্দোলনকারীরা ব্যানার ও বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড বহন করে এবং অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানান।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) ওই ছাত্রী তার সাথে শিক্ষক হুমায়ুন কবীরের যৌন নিপিড়ন বিষয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পেশ করেন।

অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী জানান, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের প্রভাষক হুমায়ুন কবির স্যার তাদের কৃষি বিজ্ঞান অনুষদের ক্লাস নিতেন। ক্লাস শেষে তাকে প্রায়ই ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে বলতেন। তিনিও ছাত্রীর সাথে দেখা করতেন। দেখা করার পরে তিনি তার সাথে ফ্রি-ভাবে কথা বলতে ও বন্ধুসুলভ আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করতেন এবং হুমায়ুন কবির স্যার তাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান ও তা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি তার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করেন। তারপর থেকে ওই শিক্ষক ছাত্রীর সাথে যৌনতাপূর্ণ ম্যাসেজ করতে থাকেন এবং ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন এবং খুব খারাপ ম্যাসেজিং করতে থাকেন। শিক্ষক তাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তাব দিতে থাকেন। মেয়েটি এসব কথা অন্য শিক্ষকদের কাছে বলে দেওয়ার কথা বললে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়।

শিক্ষার্থী বলেন, তিনি আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো প্রকার সার্টিফিকেট নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যেতে দেবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন। এসব কারণে আমি নিরাপত্তাহীনতা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছি। এসব কারণে পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গতকাল রবিবার যৌন নিপিড়ন প্রতিরোধ সেলের প্রধান ও আইন বিভাগের শিক্ষক মানসুরা খানমকে প্রধান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান মানসুরা খানমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, রবিবার সকালে পত্র পেয়েছি। আশা করি নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবো। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় একটু সময় বেশি লাগতে পারে।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন