নাটোরের গুরুদাসপুরে সাকের উল্লাহ খোকন (৫০) নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রাইভেট পড়ানোর নামে এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার দুইদিন পর ২৯ জুন শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ওই লম্পট শিক্ষককে তার বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন সাকের উল্লাহ। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার আপোষের চেষ্টা করা হয়। সাকের উল্লাহ পলাতক থাকলেও শনিবার আপোষের জন্য তিনি বাড়িতে আসেন। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ তাকে আটক করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৭ জুন বৃহস্পতিবার বিকালে সাকের উল্লাহ তার শয়ন কক্ষে শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলো। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাঁচশিশা গ্রামের মৃত রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে সাকের উল্লাহ। একই গ্রামে শিশুটির বাড়ি। সাকের উল্লাহ গুরুদাসপুর মহিলা টেকনিক্যাল কলেজের বিজ্ঞান ল্যাব পদে চাকরি করছেন। তিনি তার বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে শিশুদের প্রাইভেট পড়ান।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, একটি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে শিশুটি। বুধবার শিক্ষক সাকের উল্লাহ গুরুত্বপূর্ণ সাজেশন দেওয়ার কথা বলে শিশুকে একা বাড়িতে আসতে বলেন। বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটার দিকে শিশুটি না আসলে ওই শিক্ষক শিশুর পিতাকে ফোন করে মেয়েকে প্রাইভেটে পাঠাতে বলেন। শিশুটি প্রাইভেট সেন্টারে আসার আগেই কৌশলে অন্যদের ছুটি দেন ওই শিক্ষক। এরপর শিশুটি প্রাইভেট সেন্টারে আসলে শিক্ষক সাকের উল্লাহ তার শয়নকক্ষে শিশুটিকে নিয়ে যান। এ সময় সাজেশন দেওয়ার নাম করে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলাতে থাকেন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। এ সময় শিশুর চিৎকার শুনে শিশুটিকে তার মা উদ্ধার করেন।
ভুক্তভোগী শিশুর পিতা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোবাইলে জানান, শিক্ষক সাকের উল্লাহ ও তার বাড়ি পাশাপাশি। সম্পর্কে সাকের উল্লাহ তার ভাই হন। ঘটনার দিন তাকে ফোন করে তার মেয়েকে পড়ানোর নামে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সামাজিকতার ভয়ে বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশ করেননি। কিন্তু শনিবার বিকালে আপোষের নামে সাকের উল্লাহরা তাদের ওপর চড়াও হন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রাইভেট পড়ানোর নামে শিশুদের বিভিন্নভাবে যৌন নির্যাতন করতেন ওই শিক্ষক। এছাড়া একাধিক শিশুকে সরাসরি ধর্ষণ করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু শিক্ষক প্রভাবখাটিয়ে সেসব ঘটনা ধামাচাপা দিয়েছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ওই শিশুটিকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় এলাকাবাসী ফুঁসে উঠে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোজাহারুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক সাকের উল্লাহকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’