রাজধানীর উত্তরায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই গৃহকর্মীকে নাপা খাওয়ার পরামর্শ দেন ওই চিকিৎসক।
১৯ জুন শনিবার বিকালে উত্তরার ১৩নং সেক্টরের ১৩নং রোডের ৪৩নং বাড়ির পঞ্চমতলায় ওই চিকিৎসকের ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত চিকিৎসক নিজের দোষ ঢাকতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ভয়ভীতি, হুমকি ও চুরির অভিযোগে উল্টো ভুক্তভোগীর বোনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
ভুক্তভোগী জানান, নেত্রকোনা থেকে কাজের খোঁজে পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে উত্তরা এলাকায় আসেন তিনি। রুবেল নামের একজনের মাধ্যমে ডা. আহসান নুরের বাসায় দুই সপ্তাহ আগে খণ্ডকালীন চাকরি নেন। বাসাটিতে সপ্তাহে দুই দিন কাজ করতে হতো তাকে। সেখানে ডা. নুর একাই থাকতেন। শনিবার বেলা ২টার দিকে কাজে গেলে হঠাৎ ডা. আহসান তাকে পাশের রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন ডা. নুর।
তিনি আরও জানান, ডাক্তার আমাকে বলেন- ‘আমি ডাক্তার আমার কাছে অনেক ওষুধ আছে, যা দিয়ে তোমাকে কয়েক মুহূর্তের ভেতরে মেরে ফেলতে পারি। তোমার মেয়ে আছে তাকে দেখতে চাও?’
ভুক্তভোগী বলেন, একপর্যায়ে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বাসা থেকে বের করে দেয়। বাসায় গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে ওই চিকিৎসককে ফোন করলে তিনি একটি নাপা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন, নাপা খাওয়ার পর আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে ফোনে ওই চিকিৎসককে জানানো হয়। তখন তিনি দুইটি নাপা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
অসুস্থতার একপর্যায়ে ভুক্তভোগী তার বড়বোনকে ধর্ষণের বিষয়ে খুলে বললে ডা. আহসানকে ফোন করেন তার বড়বোন। পরে বিষয়টি জানাজানি হচ্ছে মনে করে তড়িঘড়ি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় ভুক্তভোগীর বড়বোনের নম্বর দিয়ে চুরি ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ তুলে সাধারণ ডায়েরি করেন অভিযুক্ত ডা. আহসান নুর।
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ডা. নুরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনি আমাকে কেন ফোন করেছেন? অভিযোগ করলেই কি ধর্ষণ হয়ে গেল। প্রমাণ থাকতে হবে। আমি একটা কাজের লোকের সঙ্গে এ কাজ করব নাকি। দেশে কি মেয়ের অভাব পড়েছে। এটা কোনো দেশ হলো, আমি এখানকার না আমেরিকান সিটিজেন। আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকি। উত্তরায় ওটা আমার নিজস্ব ফ্ল্যাট। আপনি ফোন দেওয়ার কে, কিসের সাংবাদিক।’
থানায় জিডি করেছেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি স্বীকার করে বলেন, আমাকে থ্রেট করা হয়েছে তাই আমি জিডি করেছি।
ভুক্তভোগীর বড়বোন রোববার সকালে জানান, অভিযুক্ত চিকিৎসক তার দোষ স্বীকার করে এখন আপোস করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস জানান, এ ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীকে মেডিকেল টেস্টের জন্য সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।