বাবা-মায়ের চাপে পড়ে মাদ্রাসার গেটে হাজির হয় ১১ বছরের শিশুটি। কিন্তু ভেতরে না ঢুকে সেখানকার এক শিক্ষকের নাম ধরে গালাগাল করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার গেট থেকে সে দৌঁড়ে যায় থানার সামনে। সেখানে গিয়ে সে জানায় তার ওপর চলা অত্যাচারের কথা। ৭ এপ্রিল বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলায়।
৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে নির্যাতিত শিশুটির মা জানান, তার ছেলে উপজেলার বড়খারচর আদর্শ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থী গায়ে জ্বর নিয়ে বাড়ি আসে। জ্বরের জন্য শিশুটিকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর তাকে মাদ্রাসায় যেতে চাপাচাপি করা হলেও সে যেতে রাজি হয়নি। পরে বুধবার জোর করে শিশুটিকে বাড়ির পাশের ওই মাদ্রাসায় নেওয়া হলেও সে মাদ্রাসার ভেতরে ঢুকতে চায়নি। বরং গেটের সামনে দাঁড়িয়ে সে মাদ্রাসার মুহ্তামিম মুফতি ইয়াকুব আলীকে (৩৫) উদ্দেশ্য করে গালাগাল শুরু করে।
শিশুটির মা আরও জানান, এক পর্যায়ে তার ছেলে দৌড়ে মাদ্রাসার অদূরে থানার সামনে চলে যায়। পেছন পেছন মা ছুটে গেলে শিশুটি তাকে জানায়, এটাই তার বিচারের স্থান। থানায় বিষয়টি জানানোর পর শিশুটিকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নূর মোহাম্মদ রফিক জানান, শিশুটি তার কাছে বলাৎকারের বর্ণনা দিয়েছে। পরে পরীক্ষা করে তাকে বলাৎকারের আলামত মিলেছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটির মা ছেলের বরাত দিয়ে জানান, বাড়িতে আসার আগে ছেলেটিকে গত মঙ্গল ও বুধবার রাতে মুফতি ইয়াকুব আলী বলাৎকার করেন। এ ছাড়া ঘটনা প্রকাশ করলে শিশুটিকে তিনি মেরে ফেলার হুমকিও দেন।
এদিকে, শিশু বলাৎকারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বুধবার রাতে নির্যাতিত শিশুটির বাবা বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান জানান, নির্যাতিত শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কিশোরগঞ্জে পাঠানো হচ্ছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বড়খারচর আদর্শ নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আ. সাত্তার মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ঘটনায় মাদ্রাসা মুহতামিম মুফতি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।