কেশবপুরে এক গৃহবধূকে অপহরণের পর একটি বাসায় আটকে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গৃহবধুর স্বামী কেশবপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

 

কেশবপুর থানার ওসি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর পৌর শহরের বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় মনিরামপুর উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ তার স্ত্রীকে নিয়ে রবিউল ইসলামের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করেন। গত ২৪ জুন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আব্দুল লতিফের স্ত্রী ভাড়ার বাড়ি থেকে বাজার করার উদ্দেশ্যে শহরের বের হন। শহরের টাইগার মোড়ে মিন্টুর মোটরসাইকেল গ্যারেজের সামনে পৌছালে সেখানে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবস্থানরত মিশু দফতরি ও সাগর কৌশলে একটি সাদা প্রাইভেটকারে গৃহবধূকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

পরের দিন ২৫ জুন ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডাস্থ ময়লার মোড়ে প্রাইমারি স্কুলের সংলগ্ন এলাকায় কবির হোসেন নামের একজনের বাসার আটকে রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। খোজাখুজি করেও আব্দুল লতিফ স্ত্রীর কোন সন্ধ্যান পাননি তিন দিনে। এরপর ২৭ জুন সন্ধ্যায় আব্দুল লতিফের স্ত্রী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায়, শেখ কবির, মিশু দফতরি, সাগর ও মোশাররফ হোসেন তাকে অপহরণ করে নিয়ে আটকে রেখেছে। সেখানে একটি রুমের মধ্যে শেখ কবির তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে মোবাইলে জানান গৃহবধূ।

অপহরনকারীরা ২৮ জুন স্ত্রীকে ফেরত দেওয়ার কথা বলে স্বামী আব্দুল লতিফের কাছে দুই লক্ষ টাকা দাবি করে। লতিফ অপহরকারীদের দেওয়া বিকাশ নাম্বারে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন এবং বাকি টাকা দেওয়ার জন্য তাদের অবস্থান জেনে নেন।

এরপর বাকি টাকা নিয়ে ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডাস্থ ময়লার মোড়ে প্রাইমারি স্কুলের সংলগ্ন এলাকায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে তাদের সহযোগিতা কামনা করেন আব্দুল লতিফ। খবরের ভিত্তিতে সাভার মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কবির হোসেনের ভাড়ার বাড়ি থেকে ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে। এসময় অপহরণের ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই বাড়ি থেকে সাগর নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকি অপহরকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর স্বামী আব্দুল লতিফ কেশবপুর থানায় ৩০ জুন একটি মামলা করেন। মামলা নং-১২। থানা পুলিশ ১ জুন ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করেছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার ওসি বোরহান উদ্ধিন জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণের ঘটনায় কেশবপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকেই সাভার থানা পুলিশ গৃহবধূকে উদ্ধার এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। আমরা তাকে এই মামলা গ্রেফতার দেখিয়েছি। ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা করানো হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং বাকী আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

জনকণ্ঠ

মন্তব্য করুন