গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে এক গৃহবধূ (৩৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া পেয়ারাবাগান এলাকায় ঢাকা বাইপাস সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে এজাহারভুক্ত তিন ধর্ষককে বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলো শেরপুরের নকলা থানার ধনাকুশ গ্রামের বাসিন্দা এবং বাসচালক আমীর হোসেন (২৭), একই জেলা ও থানার ইশিবপুর এলাকার বাসিন্দা এবং বাসের কন্ডাক্টর অমিত শীল (২২) ও ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ঠাকুরবাহাই এলাকার বাসিন্দা এবং বাসের হেলপার মো. মোজাম্মেল (২৩)।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নন্দলাল চৌধুরী জানান, বুধবার রাতে এক নারী টঙ্গী থেকে গাজীপুর সদর উপজেলার মেম্বার বাড়ি এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে যান। বেড়ান শেষে তিনি রাতেই টঙ্গী যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্থানীয় মেম্বারবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ইছামতি পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। একপর্যায়ে বাসটি গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তায় পৌঁছানোর পর বাসে থাকা যাত্রীদের নামিয়ে দেয় বাস চালক ও সহকারীরা। তখন বাসে ওই নারী ও তার সঙ্গে থাকা আরো এক নারীসহ (৫০) চার/পাঁচজন যাত্রী ছিলেন। চালক বাসটি নিয়ে চান্দনা চৌরাস্তা হতে ভোগড়া বাইপাস মোড় পৌঁছার পর দুই নারী ছাড়া বাস থেকে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয় চালকের সহকারীরা। পরে ওই দুই নারী বাস থেকে নামার চেষ্টা করলেও বাসের চালকের সহযোগীরা তাদের ধাক্কা দিয়া বাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দ্রুত গতিতে ভোগড়া পেয়ারা বাগানের দিকে চলে যায়।
পুলিশ জানায়, পরে ধর্ষকরা রাত পৌনে ১২টার দিকে ভোগড়া এলাকার গরুকাটা ব্রিজের কাছে পৌঁছালে একপর্যায়ে বাসের দরজা বন্ধ করে দেয় সহকারীরা। এ সময় দুই নারী চিৎকারের চেষ্টা করলে ধর্ষকরা ওই দুই গৃহবধূকে হত্যার ভয় দেখিয়ে বাসের পেছনে নিয়ে বেঁধে রাখে। রাত ১২টার দিকে গ্রেপ্তাররা এক নারীকে (৩৫) বেঁধে ফেলে। পরে বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপার এবং অজ্ঞাত আরো এক ব্যক্তি মিলে ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে ধর্ষকরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে দুই নারী চিৎকার করলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাসটি জব্দ করে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার এক নারী (৫০) বাসন থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিনই মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে।
১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার তিন ধর্ষক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলেও জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।