গাজীপুর মহানগরীর নাওজোর এলাকায় এক বিধবা গৃহকত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ ও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
ভিকটিম গৃহকত্রী বাদী হয়ে ১১ এপ্রিল রোববার সকালে বাসন থানায় মামলাটি দায়ের করেন।পুলিশ দুপুরে ওই ভাড়াটিয়াকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
গ্রেফতার নয়ন কুমার ঘোষ (৩০) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার ঘোষপাড়া সাতোর গ্রামের সুকুমার ঘোষের ছেলে।
বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মিজানুর রহমান মামলার বরাত দিয়ে জানান, দুই বছর আগে ভিকটিমের স্বামী মারা যান।
ভিকটিম তাদের তিন কন্যাকে নিয়ে মহানগরে স্বামীর বাড়িতেই বসবাস করছেন।তার স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ি ভাড়া, দুইটি ট্রাক ও ইটভাটার আয় থেকে মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালান ওই নারী।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, গত ২৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের বাসার তিন তলার ভাড়াটিয়া নয়ন ভাড়া দেওয়ার কথা বলে দরজায় টোকা দিলে গৃহকত্রী দরজা খুলে দেন। এ সময় তার মেয়েরা ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে এবং তাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ওই ভাড়াটিয়া।
একপর্যায়ে নয়ন ধর্ষণের ঘটনা তার মোবাইলেও ধারণ করেন।পরে ঘটনাটি কারও কাছে বললে তাকে ও মেয়েকে এসিডে পুড়ে মারার হুমকি দিয়ে চলে যান নয়ন।
পরবর্তীতে ধর্ষণের ভিডিওটি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গৃহকর্ত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন এবং মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নয়নের সঙ্গে মীমাংসা করতে চাইলে নয়ন মোবাইল থেকে ধর্ষণ ভিডিওটি মুছে দেওয়ার শর্তে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন এবং এলাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যাওয়ার প্রস্তাব মেনে নেন।
নয়নের প্রস্তাবে রাজি হয়ে ভিকটিম স্বামীর রেখে যাওয়া দুইটি ট্রাক বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা নয়নকে দেন। পরে নয়ন কিছু দিনের জন্য গ্রামের বাড়ি চলে গিয়ে আবার গাজীপুরের নাওজোর এলাকায় ফিরে আসেন এবং ভিকটিমের কাছে আবারও ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন।
তা না হলে তাদের সবাইকে এসিড ছুড়ে মারার হুমকি দেন। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নয়ন ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অবারও একাধিকবার ধর্ষণ করেন।
পরে বিষয়টি নিয়ে স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে ভিকটিম রোববার সকালে বাসন থানায় নয়নের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। রোববার দুপুরে নাওজোর এলাকা থেকে নয়নকে গ্রেফতার করে গাজীপর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।