ভালো নম্বর পাইয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন আশ্বাসে পীরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘি গালর্স একাডেমি বালিকা বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক অনুপ কুমার মোহন্ত নামে ধর্মীয় (কাব্যতীর্থ) বিভাগের শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে ম্যানেজিং কমিটি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় ওই শিক্ষক এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তবে শিক্ষককে গ্রেফতার ও চাকরি থেকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্তের দাবিতে স্থানীয়রা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।

ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অনুপ কুমার মোহন্ত নামে ওই শিক্ষক তার কাছে প্রাইভেট পড়তে আসা ছাত্রীদের যৌন নির্যাতন করেছেন। ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটি জরুরি সভা ডেকে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে।

অভিযুক্ত শিক্ষক অনুপ কুমার মোহন্ত গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট হাসানপাড়া (বাজারপাড়া) গ্রামের শ্রী অনিল চন্দ্র মহন্তের ছেলে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক জানান, শুধু একজন নয় বেশ ক’জন ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই ধর্মীয় (কাব্যতীর্থ) শিক্ষক হিসেবে অনুপ কুমার মোহন্ত উক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় ফাঁদে ফেলে যৌন নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ১০-১২ জন ছাত্রীর অভিভাবক মৌখিক এবং এক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক অনুপ একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক থাকার কথা লিখিতভাবে স্বীকারও করেন।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আরও জানান, শিক্ষক অনুপ কুমার প্রায় ৩-৪ মাস আগে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে একের পর এক ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের ঘটনা ফাঁস হতে থাকে। শুধু তাই নয় একাধিক শিক্ষার্থীকে বিয়ের কথা বলেও যৌন সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার ও চূড়ান্ত বরখাস্তের দাবিতে গত তিনদিন ধরে স্থানীয়রা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন। স্থানীয়রা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মন্ডলকে একই দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন মন্ডল বলেন তদন্ত করে সত্যতা মিললে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাশেদুন্নবী তালুকদার বলেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভা করে কেন চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হবে না জবাব চেয়ে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অনুপ কুমার মোহন্তের মোবাইলফোনে একাধিকবার কল করেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন