ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় দুই সন্তানের জননীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে রাজ্জাক ও সজীব নামের দুই যুবক।১ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের নৈকাঠি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার দুদিন পার হলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে থানায় অভিযোগ কিংবা মামলা করতে পারেননি গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ।
ঘটনা জানাজানি হলে মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি মীমাংসার জন্য সালিশ ডাকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। সালিশ-বৈঠকে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য ও চিকিৎসা খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এ অবস্থায় ৩ জুলাই বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমানের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানান গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ। পরে গৃহবধূকে থানায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান।
গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূর ভাষ্য, ‘রাস্তাঘাটে চলাফেরার সময় অনেক আগ থেকে রাজ্জাক ও সজীব আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সোমবার সন্ধ্যায় আমি গোয়ালঘরে গরু বাঁধতে যাই। এ সময় গোয়ালঘরের পাশে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা রাজ্জাক ও সজীব আমার মুখ চেপে ধরে তুলে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আমাকে গণধর্ষণের সময় অজ্ঞাত আরও দুই যুবক পাশে দাঁড়িয়েছিল।’
গৃহবধূ বলেন, এ ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। সেই সঙ্গে আমাকে বিচারের আশ্বাস দেয় তারা। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাতে সালিশ ডাকা হয়। সালিশে আমার ইজ্জত ও চিকিৎসা খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ঘটনাটি চেপে যেতে বলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাদের প্রস্তাব না মেনে বুধবার সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ঘটনাটি খুলে বলি। বিষয়টি শুনে আমাকে মামলা করার পরামর্শ দেন চেয়ারম্যান।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত সজীব রাজাপুর উপজেলার নৈকাঠি গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে ও রাজ্জাক মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে।
এ ব্যাপারে সাতুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এটি একটি জঘন্য ঘটনা। বিস্তারিত শুনে গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রাজাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদ হোসেন বলেন, বুধবার বিকেলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন গণধর্ষণের শিকার গৃহবধূ। দুই ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।