বগুড়ার ধুনটে প্রতিপক্ষের মারধরে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীসহ চারজন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার আপস মীমাংসার টাকা নিয়ে কথা–কাটাকাটি থেকে ৩ জুন শনিবার বেলা দেড়টায় উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

 

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছ থেকে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৩) আনারপুর দহপাড়া গ্রামের আকাশ, শামীম ও মোতালিব নামের তিন বন্ধু অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অপহৃত স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ধুনট থানায় অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি আকাশকে (২৭) বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে। ২০ জুন আসামি আকাশ আদালত থেকে জামিনের মুক্তি পেয়ে বাদীপক্ষের সঙ্গে মামলা আপস মীমাংসার চেষ্টা চালায়।

একপর্যায়ে গত ২৫ জুন কাজীপুর উপজেলার থলবাড়ী গ্রামের আব্বাস আলী নামের এক মাতবরের মাধ্যমে দুই লাখ টাকায় আপস মীমাংসা হয়। এ টাকা লেনদেন নিয়ে শনিবার দেড়টার দিকে আসামি পক্ষের লোকজনের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর পরিবারের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামিপক্ষের লোকজনের মারধরে স্কুলছাত্রীসহ তার মা, খালা ও নানি আহত হন। আহত ব্যক্তিরা ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় স্কুলছাত্রীর নানি বাদী হয়ে আসামিপক্ষের আবদুল আজিজসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে বিকেল পাঁচটার দিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে আবদুল আজিজ বলেন, থলবাড়ী গ্রামের আব্বাস আলী নামের এক মাতবরের মাধ্যমে দুই লাখ টাকায় মামলাটি আপস–মীমাংসা হয়েছে। বাদীর কথায় মীমাংসার সব টাকা আব্বাস আলীর হাতে দেওয়া হয়েছে। এ টাকা না পেয়ে আমাকে গালিগালাজ করছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওরাই তাঁর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে মিথ্যা অভিযোগ করছে।

থলবাড়ী গ্রামের মাতবর আব্বাস আলী বলেন, দুই পক্ষের কথামতোই মামলা আপস–মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহারের পর বাদীকে দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে।

ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র তৈরি করা হয়েছে। দু-এক দিনে মধ্যে অভিযোগপত্র আদালতে পাঠানো হবে। আপস–মীমাংসার বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, অপহরণের ও ধর্ষণ মামলা আপস–মীমাংসার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি তাঁর জানা নেই। মামলার বাদীপক্ষকের কাউকে মারধরের অভিযোগ তদন্ত করে সত্য প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রথম আলো

মন্তব্য করুন