বহুল  আলোচিত চিত্রনায়িকাপরীমনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৪ আগস্ট বুধবার চার ঘণ্টার এক অভিযানে তাকে আটক করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে এই অভিযান শুরু হয়। রাত সোয়া আটটায় তাকে র‌্যাবের গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। এ সময় তার বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশী মদ উদ্ধার দেখানো হয়।

 

একজন প্রত্যক্ষদর্শী  জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে ফটক খুলে র‌্যাবের একটি মাইক্রোবাস ভেতরে ঢোকে। পরে রাত সোয়া ৮টায় পরীমনিকে গাড়িতে তুলে র‌্যাব অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় মদের কয়েকটি বোতল তোলা হয় সেই গাড়িতে। তখনও শত শত লোক ও সাংবাদিক বাড়ির বাইরে উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়েছিলেন। সে সময় জানতে চাইলে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের উপপরিচালক মেজর হুসাইন রইসুল আজম বলেন, অভিযান চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

লাইভে যা বলেন ॥ প্রায় আধঘণ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দরজার বাইরে রেখে ফেসবুক লাইভ করেন তিনি। বুধবার দুপুর সোয়া চারটার দিকে হঠাৎ করেই ফেসবুক লাইভে আসেন পরীমনি। তিনি প্রথমে জানান, তার দরজার বাইরে অজ্ঞাত কিছু লোক জড়ো হয়েছেন। তারা বাড়িতে প্রবেশের জন্য দরজায় জোরে আঘাত করছেন। এতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। এ সময় লাইভে কলিং বেল বাজানোর আওয়াজও শোনা যায়। লাইভের এক পর্যায়ে জানালা দিয়ে বাসার নিচে গণমাধ্যমকর্মীদের দেখতে বলেন পরীমনি। এ সময় বলেন, আমি এ কারণেই ভয় পাচ্ছিলাম। এখানে আমার কোন নিরাপত্তা নেই। আমি এত অসুস্থ। তিনদিন ধরে ঠিকমতো উঠতেই পারছি না। এক পর্যায়ে সহকর্মী, সাংবাদিক ও পরিচিতদের দ্রুত তার বাসায় যাওয়ার অনুরোধ করেন আলোচিত এ অভিনেত্রী। বেশ কজন সাংবাদিক ও সুহৃদ সেখানে হাজিরও হন। কিন্তু কেউ বাসায় ঢুকতে পারেননি। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা আসলে দরজা খুলে দেবেন বলে শর্ত দেন। লাইভের এক পর্যায়ে, বাসার ভেতর থেকে সিকিউরিটি সিস্টেমে কিছু কাজ করতেও দেখা যায় পরীমনিকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি পরীমনির বাধা। প্রায় আধঘণ্টার মতো তাদের প্রবেশ রুখে দিতে পারলেও অবশেষে দরজা খুলে দিতে বাধ্য হন তিনি। বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করলে এক পর্যায়ে লাইভও বন্ধ করে দেন তিনি।

লাইভের এক পর্যায়ে তিনি বার বার হারুনকে ফোনে লাগানোর নির্দেশ দেন তার এক স্বজনকে। কিন্তু বার বার ফোন করার পরও হারুন ফোন না ধরায় তিনি হতাশ হন। এরপর তিনি বনানী থানা পুলিশের সহযোগিতা চান। কিন্তু কেউ আসেনি। বাইরে র‌্যাব রেখে তিনি যতক্ষণ পারেন চেষ্টা চালান বিভিন্ন মহলের সহযোগিতা পাওয়ার। সর্বশেষ তিনি শর্ত দেন যেন তার বাসায় ঢোকার আগে মিডিয়ার লোকজনকে অনুমতি দেয়া হয়। তার এ শর্তেও রাজি হয়নি র‌্যাব। শেষ পর্যন্ত গেট খোলার আগে পরীমনি ভাল করে দেখতে চান বাসার সিসি টিভির ফুটেজ চালু আছে কিনা। তখন নিচে নেমে দেখেন সেটা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। হতাশ হয়ে ফেসবুকে লাইভে থেকেই গেট খুলতে বাধ্য হন। সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাব ঢুকেই তার ফেসবুক বন্ধ করে দেন। তারপর বাইরে বিপুল সংখ্যক সাংবাদিককে অপেক্ষায় রেখেই গেট বন্ধ করে অভিযান চালায় র‌্যাব।

জনকণ্ঠ

মন্তব্য করুন