ফরিদপুরের মধুখালীতে এক তরুণীকে ‘দলবেঁধে ধর্ষণে’ জড়িত অভিযোগে দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 

১৪ এপ্রিল বুধবার দুপুরে আটকদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন রোজিনা আক্তার, তার মা পারুল আক্তার এবং জাকিরুল হক।

মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে তিনজনের নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩/৪ ব্যক্তিকে আসামি করে মানবপাচার ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী ওই তরুণীর বাবা বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত রোজিনা, পারুল আক্তার ও জাকিরুল হকের নামে এবং অজ্ঞাত আরও ৩/৪ ব্যক্তিকে আসামি করেছেন মামলায়।

“আমার মেয়ে এখন কিছুটা সুস্থ আছে। সে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে।”

মামলায় অভিযোগ করা হয়, মধুখালী পৌর এলাকার আশ্রায়ন কেন্দ্রে বসবাস করেন পারুল আক্তার ও তার মেয়ে রোজিনা। পার্শ্ববর্তী গ্রামের একটি মেয়ে (১৮) রোজিনার বান্ধবী। ওই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে উপজেলার মাকড়াইল গ্রামে। তার তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে। কয়েকদিন আগে ওই মেয়েটি তার বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে রোজিনা ওই মেয়েটির বাড়ি গিয়ে গল্পগুজব করতেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত রোববার রোজিনা ও তার মা পারুলসহ কয়েকজন ওই মেয়েটির বাড়ি গিয়ে গল্প করে চলে আসেন। কিছুক্ষণ পর রোজিনা মোবাইল ফেলে যাওয়ার কথা বলে আবার সেখানে যান। কিন্তু ওই সেখানে মোবাইল না পেলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।

“এরপর বিকালে রোজিনা ও তার মা পারুল কয়েকজন লোক নিয়ে ওই মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসেন। এরপর দুই দিন তারা বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে দলবেঁধে ধর্ষণে সহযোগিতা করেন।”

মঙ্গলবার সকালে মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় তাদের বাড়িতে ফেলে রেখে আসে বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

মধুখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রথিন্দ্র নাথ তরফদার বলেন, মঙ্গলবার রাতে ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর রাতেই জাকিরুল হককে আটক করা হয়। এর আগে রোজিনা ও তার মা পারুল আক্তারকে আটক করা হয়।

পরিদর্শক রথিন্দ্র আরও বলেন, রোজিনা ও পারুল আক্তার মধুখালী আশ্রয়ণ কেন্দ্রের বাসিন্দা। জাকিরুল হকের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়। তিনি মধুখালীতে অবস্থিত ফরিদপুর চিনিকলের বিদ্যুৎ বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কর্মরত।

আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই তরুণী সুস্থ হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় তার জবানবন্দি নিয়ে ঘটনার সঙ্গে আরও জড়িতদের আটক করা হবে।

ফরিদপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম কবির বলেন, “তরুণীর সঙ্গে খুবই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় চিনিকলের বিদ্যুৎ বিভাগের চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী জাকিরুল হক জড়িত জানতে পেরেছি। পুলিশ তাকে আটক করেছে। চিনিকল থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।”

ভুক্তভোগী ওই তরুণীর মা জানান, মেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে মঙ্গলবার রাতে ফরেনসিক পরীক্ষানিরীক্ষার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বৃহস্পতিবার পরিক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মন্তব্য করুন