ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সংবাদ ও বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেওয়ায় ‘অপপ্রচার’ চালানোর অভিযোগে নলছিটি উপজেলার অবসরকালীন ছুটিতে থাকা (এলপিআর) হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ডানিডা প্রকল্পের ঠিকাদার ফিরোজ আলম জোমাদ্দার, নলছিটির স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা আমির সোহেল মল্লিকসহ ১৬ জনকে।সা
ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক মামলার অভিযোগ তদন্ত করে আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন জাকির হোসেন সাইদুল জোমাদ্দার, ওবায়দুল জোমাদ্দার, সাইফুল জোমাদ্দার, হৃদয় জোমাদ্দার, নজরম্নল ইসলাম, স্বপন জোমাদ্দার, মনির জোমাদ্দার, সুমনা আক্তার, জাহানারা বেগম, রেহেনা বেগম হাওয়া, শাহিনুর বেগম, লিলি বেগম ও তানিয়া বেগম।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, নলছিটি উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ঠিকাদার ফিরোজ আলম জোমাদ্দার সুবিদপুর ইউনিয়নে ২৪ লাখ টাকার একটি সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ৪৬ জন দরিদ্র মানুষকে দিয়ে প্রতিদিন জনপ্রতি ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করানোর শর্ত থাকলেও ঠিকাদার স্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটেন। ফলে দরিদ্র মানুষ তাদের আয় থেকে বঞ্চিত হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই কাজ স্থগিত এবং বাকি অর্থ আটকে দেওয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজ আলম হিসাবরক্ষক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ এবং বাকি টাকা ছাড়ে পাঁচ শতাংশ হারে ঘুষ দাবির অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। এতে মানহানি হয়েছে বলে দাবি করে এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামি নলছিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক আমির সোহেল মলিস্নক বলেন, আমি সুবিদপুর ইউনিয়নের একজন বাসিন্দা। হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার বাড়িও একই ইউনিয়নে। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির বিরোধ থাকায় রাস্তার কাজ নিয়ে ঝামেলা করছিলেন। এখানে আমাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। আমাকে এবং অনেক নিরাপরাধ নারী-পুরুষকে আসামি করা হয়েছে। মিথ্যা মামলাটি পিবিআই তদন্ত করলেই সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে।
আগে শুধু রাজধানীতেই সাইবার ট্রাইব্যুনাল ছিল। গত জুলাই মাসে ঢাকার বাইরে বরিশালসহ আটটি বিভাগীয় শহরে সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা এটাই প্রথম মামলা।