গণধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে মাগুরার শ্রীপুর থানায় গিয়ে রীতিমতো অপমানিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক গৃহবধূ। তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। এরপর গতকাল শুক্রবার থেকে মাগুরা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় ওই নারী এবং স্থানীয় সাংবাদিকদের ডেকে বক্তব্য শুনেছেন। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।

 

ওই নারীর অভিযোগ, গত ২৮ জুন রাতে তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া ছেলেকে নিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় দরজায় কড়া নাড়েন গ্রামের যুবক দিপুল। দরজা খোলার পর দিপুলের আচরণে সন্দেহ হলে তিনি সাহায্যের জন্য স্বামীর এক বন্ধুকে ফোন করেন। ওই বন্ধু সাহায্য করতে এলে দিপুল, মাজেদুল ও আশরাফুল তাঁকে ধরে বাড়িতে এনে নানা আপত্তিকর কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁদের বিবস্ত্র করে ছবি তুলে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়, দাবি করা হয় নগদ অর্থও। পরে ওই ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্রের মুখে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন ওই তিন যুবক। এ সময় পাশের ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল তাঁর শিশুপুত্র।

ওই নারীর অভিযোগ, তিনি শ্রীপুর থানায় গেলে ওসি মাহাবুবুর রহমান তাঁকে উল্টো অভিযুক্ত করে বলেন, নিজের পরকীয়া চাপা দিতে তিনি মিথ্যা ধর্ষণের মামলা করতে চান।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ওই নারী থানায় এসেছিলেন। তবে তাঁর অভিযোগ তদন্ত করে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামীর বন্ধুর পরকীয়া সম্পর্ক। পরকীয়ার ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন ওই গৃহবধূ।

এ বিষয়ে মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান গত বৃহস্পতিবার বলেন, অভিযোগের সত্যতা না পেলে মামলা না নেওয়ার এখতিয়ার একজন ওসির আছে। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে কক্সবাজারের মহেশখালীতে পাহাড়ে নিয়ে একদল যুবক এক তরুণীকে (১৮) গণধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে মাতারবাড়ী ইউনিয়নের নারী ইউপি সদস্য শামীমা বেগমের বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৯ থেকে ১০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।

মহেশখালী থানার পুলিশ জানায়, ওই তরুণী চট্টগ্রামে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। গত শনিবার দুপুরে তিনি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। চকরিয়া এলাকায় তাঁর মানিব্যাগটি হারিয়ে যায়। এ সুযোগে এক সিএনজিচালক তাঁকে মাতারবাড়ী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে গাড়িতে তোলেন। গাড়িটি চালিয়াতলী বালুর ডেইল এলাকায় আসার পর আরও ১০–১২ যুবক মেয়েটিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে সিএনজিচালকসহ পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে সবাই মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পাঁচ দিন পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তৎপর হয়।

মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি জানার পর তাঁকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ মাঠে নামে। গতকাল বিকেলে তাঁকে উদ্ধারের পর মামলা হয়েছে।

প্রথম আলো

মন্তব্য করুন