মাদারীপুরে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মোক্তার হোসেন নামে এক পুলিশ সদস্যের (নায়েক) বিরুদ্ধে। ধর্ষণের পর ওই স্কুলছাত্রীকে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাইরে ফেলে দেয় মোক্তার হোসেন। এ ঘটনায় আহত ওই স্কুলছাত্রীকে রবিবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর বাবা নেই। তার মা মানসিক রোগী। তারা শহরের টিবি ক্লিনিক সড়কে বাস করে। মাদারীপুর পুলিশ লাইনের পুলিশ সদস্য নায়েক মোক্তার হোসেনও দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। কয়েক দিন আগে মোক্তারের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এই সুযোগে রবিবার রাতে প্রতিবেশী এক স্কুলছাত্রীকে ঘরে ডেকে নেয় মোক্তার হোসেন। এরপর দরোজা বন্ধ করে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা বাইরে থেকে দরোজা বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ সদস্য মোক্তার হোসেন ওই স্কুলছাত্রীকে ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়। এতে ওই মেয়েটি গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

ঘটনার শিকার ওই স্কুলছাত্রী বলেন, ‘মোক্তার হোসেন আমাকে তার ঘরে ডেকে নিয়ে দরোজা বন্ধ করে আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিলে আমাকে সে ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। এর আগে সে আমাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে।’

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘দীর্ঘক্ষণ ঘরের মধ্যে ওই মেয়েকে নিয়ে থাকায় আমাদের সন্দেহ হয়। পরে আমরা বাইরে থেকে ঘরের দরোজা বন্ধ করে দিলে মোক্তার মেয়েটিকে ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়।’

এ ব্যাপারে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. লেলিন জানান, ‘মেয়েটির পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সেরে উঠতে কমপক্ষে ৩ মাস সময় লাগবে।’

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।’

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাদারীপুর সদর থানার ওসি মো. কামরুল হাসান ইত্তেফাক অনলাইনকে জানান, ‘গতকাল রাতে ওই শিক্ষার্থী (১৬) হাসপাতালে ভর্তি হয়। হাসপাতাল থেকে ফোন করে আমাদের জানানো হয়। এরপর আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আমরা সেখানে ওই ছাত্রীর বক্তব্য গ্রহণ করি। তার বক্তব্য অনুযায়ী, তাকে এবং নায়েক মোক্তার হোসেনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বাইরে থেকে দরোজা বন্ধ করে দেয়। তখন ভেন্টিলেটর দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তাকে বের করে দেয় মোক্তার হোসেন।’

ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় নায়েক মোক্তার হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে মোক্তারকে দোষী পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেবল একজন পুলিশের কারণে পুরো পুলিশ বাহিনী কেন বদনাম নেবে!’

ইত্তেফাক

মন্তব্য করুন