ঢাকার সাভারে লেনদেন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে বিচার চাইতে গিয়ে এক ইউপি চেয়ারম্যানের ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন এক তরুণী।
এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার ভুক্তভোগী তরুণী বাদি হয়ে অভিযুক্ত আশুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যানসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- আশুলিয়ার টঙ্গিবাড়ি এলাকার মৃত ওহাব মাদবরের ছেলে ও আশুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাবুদ্দিন মাদবর (৫০), তার শ্যালক একই এলাকার মৃত হালিম মাদবরের ছেলে মো. আলমগীর (৩৮) ও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আশুলিয়ার আবুল শিকদারের ছেলে সবুজ শিকদার (৩৫)।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে লেনদেন সংক্রান্ত একটি বিষয়ে আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাবুদ্দিন মাদবরের কাছে বিচার চাইতে যান ওই তরুণী। পরে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে তার বাসায় যান ভুক্তভোগী। এ সময় চেয়ারম্যান ভুক্তভোগীকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
পরে চেয়ারম্যানের বাসা থেকে ফেরার পথে ওই তরুণী চেয়ারম্যানের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন এমন অভিযোগ এনে চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার শ্যালক মো. আলমগীর ও ব্যক্তিগত সহকারী সবুজ শিকদার ওই তরুণীসহ তার আত্মীয়কে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। তাদের দু’জনকে আলাদাভাবে ইউনিয়ন পরিষদের দুটি কক্ষে আটকে রাখে।
পরে সেই কক্ষে ঢুকে চেয়ারম্যান জোরপূর্বক ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। এছাড়াও চেয়ারম্যান ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তার শ্যালক আলমগীর ও পিএস সবুজও ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে তরুণী ও তার আত্মীয়কে ছেড়ে দেয় অভিযুক্তরা।
এছাড়াও মামলায় অভিযোগ করা হয়, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর ভুক্তভোগী তরুণী আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ তার মামলা রেকর্ড করেনি। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউর রহমান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত নই, থানায় এমন কোনো অভিযোগ দেয়া হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
উল্লেখ্য, আশুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাবুদ্দিন মাদবরের বিরুদ্ধে এর আগেও চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে মামলা দায়ের হলেও বারবার গ্রেফতার এড়িয়ে যান এই জনপ্রতিনিধি।