ফেনীর সোনাগাজীতে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। ৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। আইসিইউতে রাখা হয়েছে তাকে।
মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাওয়ার পর একজন পরীক্ষার্থী নুসরাতকে বলে, তার এক বান্ধবীকে ছাদে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এটা শুনে সে দ্রুত ছাদে যায়। এরপরই এই ঘটনা ঘটে।
তিনি আরো জানান, বোরকা পরা চারজনের মধ্যে একজনের নারীকণ্ঠ ছিল। ঘটনার পর তার বোন এসব কথা তাদের বলে গেছে।
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, নুসরাতের শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। শ্বাসনালী পুড়ে না গেলেও তার অবস্থা সংকটাপন্ন। হাসপাতালে আনার পর আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। সে বলেছে, ‘স্যার আমাকে বাঁচান’।
নুসরাতের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলি ইত্তেফাক বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা তার বোনকে যৌন হয়রানি করেন। থানায় এর অভিযোগ করা হলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগ করার কারণে নুসরাতের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নুসরাত জাহান আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় যায়। পরে সে প্রকৃতির ডাকে বাথরুমে যায়। সেখানে থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার অনুগত কয়েক দুর্বৃত্ত তাকে ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তার আত্মচিৎকারে শিক্ষকরা এসে তাকে উদ্ধার করে।
সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ইতিপূর্বে ওই ছাত্রীর মা শিরিনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী থানায় অভিযোগ করেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলা সবসময় তার মেয়ে নুসরাত জাহানকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করতেন। এ অভিযোগে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।