হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের মুহতামিম কর্তৃক ছাত্রকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ২০ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মাদরাসায়ে আনোয়ারে মদিনা ফদ্রখলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নোমান কবীর এ ঘটনা ঘটায়। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্র একটি মসজিদের ইমামের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।

 

এদিকে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে গ্রাম্য মাতব্বরা রফদফা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২১ অক্টোবর বুধবার সকালে ফদ্রখলা গ্রামের মুরব্বি শওকত, ছোবান, মর্তুজ আলী রফাদফার চেষ্টা চালান। গ্রাম্য মাতব্বরের তিন সদস্যের এই দল নির্যাতিত ছাত্রের বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলার রামশ্রী গ্রামে যায়। সেখানে ওই পরিবারের কাছে আগামী শুক্রবারের মধ্যে মাদরাসা থেকে ওই মুহতামিমকে বহিষ্কার করা এবং উপযুক্ত বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এ সময় ওই বিষয়টি যাতে র‌্যাব বা পুলিশ কেউ না জানে সে বিষয়েও হুসিয়ারি দেন মাতব্বরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, র্দীঘদিন যাবৎ মাদরাসার ছাত্রদের সাথে এমন খারাপ কাজ করে আসছেন মুহতামিম। এর আগেও কয়েকবার কয়েকটি বিষয়ে সালিস করে সমাধান করে দেওয়া হয়েছে। তার এমন আচরণে মাদরাসার শিক্ষকরা চাকরি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদরাসার সাবেক এক শিক্ষক জানান, তার রুমে সবসময় ছেলেদের আড্ডা থাকে। মাদরাসার সাবেক ছাত্ররাও তার খেদমত করতে মাদরাসায় আসে। আমরা ছাত্রদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক না রাখতে নিষেধ করার কারণেই আমাদের বেতন বন্ধ করে দেয়। মুহতামিমের এমন আচরণে কোনো শিক্ষক ওই মাদরাসায় থাকতে চায় না।

তিনি আরো বলেন, নিজের বাড়িতে মাদরাসা হওয়ায় তিনি গ্রামের মুরব্বিদের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে বীরদর্পে তার অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের মাতব্বর শওকত, ছুবান, রেজাক, মর্তুজ আলী ও কোনাপাড়ার মাইল্লার ছেলে সাইফুল তার কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করে আসছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সাবেক শিক্ষক মাওলানা আফসার উদ্দিন বলেন, মাদরাসার পরিচালকের এমন আচরণেই আমিসহ চারজন চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।

মাদরাসা ও মসজিদের সেক্রেটারি আকবর মিয়া বলেন, নোমানের আচরণ এত খারাপ যে এলাকায় মুখ দেখানোর মত নয়। সে ছেলে ছাড়া কিছুই বুঝে না। আমরা বহুনিষেধ করেছি। গ্রামের কয়েকটি লোকের কারণে সে এসবের সাহস পাচ্ছে।

নির্যাতিত ছাত্রের বাবা বলেন, মাদরাসার শিক্ষকসহ কয়েকজন আসছিলেন। শুক্রবারের মধ্যে সমাধান না হলে তিনি সাংবাদিকের সাথে দেখা করবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, আমি নবীগঞ্জে একটি মসজিদের ইমাম। তাকে এমনভাবে শাস্তি দেওয়া হোক যাতে আর কোনো ছাত্র যেন নির্যাতনের শিকার না হয়।

এ ব্যাপারে মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নোমান কবীরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ব্যাক্তিগত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালের কণ্ঠ

মন্তব্য করুন