সরকারি দলের সমর্থনপুষ্ট একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী যশোর জেলার অভয়নগর থানার ধুলগ্রামের একটি অসহায় সংখ্যালঘু পরিবারকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করেই ক্ষান্ত হয়নি, মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেছে পরিবারের সকল (বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ) সদস্যের নামে। পুলিশকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করে গ্রেফতার করানো হয়েছে ৭২ বছর বয়স্ক পরিবারপ্রধান তারাপদ গজী ও তার ৩ ছেলেকে। তারাপদ ও তার ২ ছেলে এখনও খুলনা জেলা কারাগারে ভোগ করছেন অসহনীয় যন্ত্রণা। আর ৬৫ বছর বয়স্ক উষারানী গজী স্বামী-ছেলেকে ছাড়ানোর জন্য খুলনা-যশোরের পথে পথে ঘুরছেন। এক লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, যশোর জেলার অভয়নগর থানার সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রামের তারাপদ গজীর বাড়িতে ৪ ডিসেম্বর একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তারাপদ, তার স্ত্রী ও ছেলেদের মারাত্মক আহত করে। ওইদিন ও পরে একাধিকবার সন্ত্রাসীরা চড়াও হয়ে বাড়ির সমস্ত মূল্যবান গাছপালা কেটে নিয়ে যায়। হামলায় আহত তারাপদ ও তার পরিবারের সদস্যরা নদীর অন্য পার ফুলতলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন চিকিৎসার জন্য। সেই থেকে তারাপদ গজী জীবনের ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে ফুলতলায় একটি ঘর ভাড়া করে কোনরকম বেঁচে ছিলেন। স্ত্রী উষারানী দিনের বেলায় মাঝে মধ্যে নদী পার হয়ে গোপনে বাড়িঘর দেখে আসতেন। সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা তারাপদ গজীর পরিবারের সকলকে মারধর করল এবং বাড়ির সমস্ত মূল্যবান গাছপালা কেটে নিয়ে গেল তারপরও তাদের কিছুই হলো না। প্রশাসনের এ আচরণে দ্বিগুণ উৎসাহিত হয়ে সম্প্রতি ওই সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে যশোর জেলা সদরের এক আদালতে তারাপদসহ পরিবারের সকলের নামে চাঁদাবাজি, বোমা হামলা, সন্ত্রাস সৃষ্টিসহ নানা কাল্পনিক অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরই তারাপদ গজীর ছোট ছেলে বিকাশ কুমার গজীকে অভয়নগর পুলিশ গ্রেফতার করে এবং প্রেরণ করা হয় যশোর আদালতে। বিকাশ এবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এ যুক্তি দেখিয়ে সে জামিন লাভ করেছে। অন্যদিকে ফুলতলা পুলিশকে প্রভাবিত করে তারাপদ গজী তার ছেলে প্রদীপ কুমার গজী ও অসিত কুমার গজীকে (২৫) পাঠানো হয়েছে খুলনা জেলা কারাগারে। কারণ ফুলতলা থানা খুলনা জেলার মধ্যে। যশোরের মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর খুলনায় পাঠানো হলেও মামলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এখানে নেই। এজন্য সৃষ্টি হয়েছে বিরাট জটিলতা।
সংবাদ, ২৮ মে ২০০২