চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কওমিপন্থী এক মওলানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৩০ অক্টোবর বুধবার সকালে উপজেলার জিরি ইউনিয়নের মোহাম্মদিয়া তালিমুল কুরআন নুরানী মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মওলানার নাম ফারুক চৌধুরী (৫৫)। সে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এবং জিরি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিয়ার পুত্র।

জানা গেছে, বেশকিছুদিন ধরে ওই মাদ্রাসার শিশু ছাত্রীদের নানাভাবে যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন ফারুক। প্রায় সময় ক্লাস রুম থেকে ব্যক্তিগত রুমে ডেকে দিয়ে নানাভাবে যৌন নিপীড়ন করতেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসার ব্যক্তিগত রুমে কৌশলে ডেকে নিয়ে যৌন নিপীড়নের চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী চিৎকার করলে এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।এ সময় ফারুক কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে মাদ্রাসার দরজা, জানালাসহ বেশকিছু আসবাবপত্র ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পটিয়া থানার এসআই মো. মোক্তারসহ একদল পুলিশ ছুটে আসে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় পরে পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিনসহ আরেকদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মওলানাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদিয়া তালিমুল কুরআন মাদ্রাসাটি মূলত কওমি আকিদার। এখানে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। মাদ্রাসার পাশাপাশি হেফজখানাও রয়েছে। মওলানা ফারুখ চৌধুরী প্রায় সময় শিশু ছাত্রীদের ব্যক্তিগত রুমে ঢেকে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করতেন। গত বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার ৫ ছাত্রীকে বাড়িতে ঢেকে নিয়ে যায়। এর মধ্যে তিন শিশুকে বাড়ি ঝাড়ু দিতে বলে অন্য দুই শিশু ছাত্রীকে তার শয়ন কক্ষে নিয়ে যায় এবং একজনকে পাশের রুমে নিয়ে যৌন নিপীড়ন করে। এভাবে তিনি প্রায়ই ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করে থাকে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এসব কর্মকাণ্ডে মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকরা অবগত হলেও ভয়ে চুপ থাকতেন। এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিক্ষক হাফেজ রিফাত ও জিয়াউর রহমান লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেও স্থানীয়রা জানান।

জিরি ইউনিয়নের মেম্বার মোহাম্মদ হাসান জানান, কওমি আকিদার এই মাদ্রাসার মওলানা ফারুক শিশুদের আদর করার কৌশলে প্রায় সময় যৌন নিপীড়ন করে আসছেন।

পটিয়া থানার ওসি বোরহান উদ্দিন জানান, শিশু ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগে মওলানা ফারুককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মামা মাহবুবুর রহমান আরিফ বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ইত্তেফাক

মন্তব্য করুন