চাঁদা না পেয়ে জোট সরকার সমর্থক সন্ত্রাসীরা লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হাত-পায়ের হাড়গোড় ভেঙে হাসপাতালে পাঠিয়েছে বিধান রায় (৩৫) নামে এক সংতবচৃলঘু সাধারণ কৃষককে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে বিধান। অন্যদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ থানায় মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো আপসের প্রস্তাব দিয়েছে সংখ্যালঘু পরিবারটিকে। এ ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামে। জানা গেছে, জোট সন্ত্রাসীরা ৫০ হাজার টাকা চাঁদার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে বিধান ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিধান রায় গত ২৬ মে বোয়ালমারী থানায় একটি জিডি এন্ট্রি করলে সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্ধ হয়। গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি সংলগ্ন একটি জমিতে চাষ করার সময় সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় বিধান রায়ের ওপর হামলা চালায়। তারা রামদা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করাসহ লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে তার দুই হাত ও দুই পায়ের হাড়গোড় ভেঙে ফেলে। এ সময় তার আর্তচিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদেরও ধাওয়া করে। এলাকার লোকজন পরে মৃতপ্রায় বিধানকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে পরদিন রোববার বিধান রায়ের পক্ষে তার বড়ো ভাই ননী গোপাল সুনির্দিষ্ট অভিযোগ সম্বলিত মামলা দায়ের করার উদ্দেশ্যে বোয়ালমারী থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। বোয়ালমারী থানার ওসি আমজাদ হোসেন রহস্যজনক কারণে মামলা রেকর্ড না করে বাদীপক্ষকে আপস করার প্রস্তাব দেয়। এমনকি ওসি নিজেই জোট সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যানকে আপসের দায়িত্ব দেন। একদিকে গত ৫ দিনেও থানা মামলা নেয়নি, অন্যদিকে জোট সন্ত্রাসীরা সরকার সমর্থক প্রভাবশালী নেতাদের ইন্ধনে সংখ্যালঘু পরিবারকে নানা ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। কথিত আপস প্রক্রিয়ার পাশাপাশি হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এই সংখ্যালঘু পরিবারটি।
ভোরের কাগজ, ১৫ জুন ২০০২