কুমিল্লার দেবিদ্বারে ধর্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেওয়ায় এক কিশোরী ও তার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
তবে মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের কুরছাপ পূর্বপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাতে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা।
মামলার আসামিরা হলেন কুরছাপ পূর্বপাড়া গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে মো. কাউছার আহমেদ এবং মো. হাসান, দুই পুত্রবধূ আনিকা ও নারগিস আক্তার।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ধর্ষণচেষ্টার মামলার আসামি মো. হাসানের বড় ভাই কাউছার আহমেদসহ অন্য আসামিরা ভুক্তভোগী কিশোরীর মাকে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করে। এ সময় কাউছারকে স্থানীয়রা থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে কিশোরীর মা অচেতন অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকেন। এর আগে ১৭ ও ১৮ আগস্ট বিকালে কিশোরী ও তার বাবাকে প্রকাশ্যে মারধর করে কাউছার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মে বিকাল ৩টায় কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় একই গ্রামের হাসান। এ সময় স্থানীয়দের দেখে পালিয়ে যায়। অসুস্থ অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা কুমিল্লা আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাসানের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয় হাসানের পরিবার। স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মামলা তুলে নিতে কিশোরীর পরিবারকে চাপ প্রয়োগসহ বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। এতে কাজ না হওয়ায় প্রথমে কিশোরীর বাবা পরে কিশোরীকে মারধর করা হয়। ২০ আগস্ট দুুপুরে হাসানের বড় ভাই কাউছার ওই কিশোরীর মাকে রাস্তায় ফেলে লাঠিপেটা করে। এতে অজ্ঞান হয়ে যান কিশোরীর মা।
কিশোরীর বাবা বলেন, হাসান ধর্ষণের চেষ্টা করায় কুমিল্লা আদালতে মামলা করেছি। এরপর থেকে মামলা তুলে নিতে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। মামলা তুলে না নেওয়ায় আমার স্ত্রীকে লাঠিপেটা করে হাসানের ভাই। এর আগে আমার মেয়ে ও আমাকে একইভাবে রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করেছে।
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশের টিম পাঠিয়েছি। ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা মামলা করেছেন। দোষীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হবে।