দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলা প্রতিনিধি গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপুর হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ২৬ এপ্রিল সোমবার সকালে নবীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনি।
সাধারণ ডায়েরিতে গৌরাঙ্গ দেবনাথ অপু উল্লেখ করেন, গতকাল দিবাগত রাত অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় মাঝিকাড়া গ্রামের ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী তার বাসার সামনে এসে তার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে নবীনগরে সাংবাদিকতা করতে হলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের (এবাদুল করিম বুলবুল) বিরুদ্ধে কিছু লেখা যাবে না এবং কোনো টক শোতে তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ সময় তারা চিৎকার করে হুমকি দিতে থাকেন, ভবিষ্যতে এমপির বিরুদ্ধে পত্রিকায় কিছু লেখা হলে বা টক শোতে কিছু বলা হলে অপুর হাত-পা কেটে নেওয়া হবে।
অপু সে সময় আদালত সড়কে অবস্থিত তার বাসার রাতের খাবার খাচ্ছিলেন।
ঘরে বসে এসব চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে তিনি নবীনগর থানার ওসি আমিনুর রশীদকে ফোনে বিষয়টি জানান। ওসি তাৎক্ষণিক কয়েকজন উপপরিদর্শককে ঘটনাস্থলে পাঠান। পুলিশ সদস্যরা পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
অপু জানান, গত শুক্রবার একটি ভার্চুয়াল টক শোতে নবীনগরের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথার বলার পর স্থানীয় সংসদ সদস্যের কয়েকজন অনুসারী তার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর শনিবার এমপির অনুসারী বলে পরিচিত মাঝিকাড়ার বাসিন্দা সুমন উদ্দিন ফেসবুকে অপুকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টের পরই রোববার রাতে তার হাত-পা কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হলো।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুল বলেন, ‘সম্প্রতি আমার বিরুদ্ধে কোনো খবর হয়েছে বা কোনো টক শোতে কিছু বলা হয়েছে বলে আমার তো জানাই নেই। আর জানলেও তার প্রতিবাদ করার যথাযথ পদ্ধতি আছে। এভাবে পেশীশক্তি দেখিয়ে উত্তর দিতে যাব কেন?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার নাম জড়িয়ে এসব করে আমাকে অপদস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার নাম জড়িয়ে এ কাজ করায় আমি বিব্রত। আমিও চাই যারা এই অপকর্ম করেছে তাদের শাস্তি হোক। পুলিশ এ বিষয়ে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করছি।’
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রশীদ বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কারা সাংবাদিক অপুর বাসার সামনে এমন হুমকি দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।’