চার বছর ধরে দফায় দফায় ধর্ষণের অভিযোগে মানিকগঞ্জে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী।

অভিযুক্তের নাম মো. আলী উজ্জ্বল (৪০)। তিনি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার হেলাচিয়া গ্রামের দরবেশ বেপারীর ছেলে। এলাকায় তার স মিল, রাইস মিল ও আসবাবপত্রের দোকান রয়েছে।

ওই নারীর অভিযোগ, তাকে অমানবিক শারীরীক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতেও বাধ্য করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, উজ্জ্বল তাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ তুলে নিয়েছেন। ধর্ষণের ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে এসব করিয়েছে উজ্জ্বল।

চার বছর আগে প্রথম ধর্ষণের কথা জানাতে গিয়ে ওই নারী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার দুই বাড়ি পরই আলী উজ্জ্বলের বাড়ি। মিথ্যা অজুহাত দিয়ে একদিন ফোন করে তাকে বাড়িতে ডেকেছিল উজ্জ্বল। ফাঁকা বাড়িতে সেদিনই তাকে প্রথম ধর্ষণ করা হয়। এই ধর্ষণের ভিডিও প্রবাসী স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন তাকে ধর্ষণ করেছে, বিভিন্ন জনের সঙ্গে যৌনসম্পর্কে বাধ্য করেছে। এখন তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের দিকে উজ্জ্বলের নজর পড়ায় মামলা করেছেন।

তিনি বলেন, মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না করতে দিলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখাচ্ছিল উজ্জ্বল। প্রথমে মান সম্মানের ভয়ে কাউকে কিছু না বললেও, মেয়েকে রক্ষায় মঙ্গলবার রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেছি।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীকে তার মেয়েসহ মানিকগঞ্জের উত্তর সেওতা এলাকার মনিরা বেগম মনোয়ারার বাড়ির চিলাকোঠায় যেতে বলেন অভিযুক্ত। না গেলে ঋণের ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ফেরত না দেওয়া, প্রাণনাশের হুমকিসহ ইন্টানেটে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।

নিরুপায় হয়ে মেয়েকে নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়ির চিলে কোঠায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে উজ্জ্বল তাকে ফের ধর্ষণ করে। পরে অন্য কক্ষ থেকে তার মেয়েকে এনে ধর্ষণ করতে উদ্যত হয়। কিন্তু বাড়িতে অপরিচিত নারী পুরুষের প্রবেশে সন্দেহ হওয়ায় কয়েকজন সেখানে গেলে মোবাইল ফেলে পালিয়ে যায় উজ্জ্বল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে লোমহর্ষক নির্যাতনের কথা বেরিয়ে আসে।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে মো. আলী উজ্জ্বল এবং তাকে সহায়তা করার জন্য বাড়ির মালিক মনিরা বেগম মনোয়ারার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামীদের ধরার চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনটি পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ওই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।

ডেইলি স্টার

মন্তব্য করুন