ইসলাম নিয়ে কথিত কটূক্তির অভিযোগে দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার জজ কোর্টের আইনজীবী ইমরুল হাসান এই নোটিশ পাঠান।
আইনি নোটিশে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের স্বনামধন্য দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সব ভার্সনের আমি একজন নিয়মিত পাঠক এবং গ্রাহক। আপনার পত্রিকার কোনও সংবাদ প্রতিবেদন ও কলাম আমার পড়া হয় না— এমনটি ভাবা আমার জন্য কষ্টের। আপনার কালের কণ্ঠ পত্রিকার সংবাদ, প্রতিবেদন ও গল্প আমিসহ সারাবিশ্বের কোটি কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের প্রাণ ও হৃদয়জুড়ে অবস্থান করছে। আমি সুদৃঢ় চিত্তে বলতে পারি যে , অত্র কালের কণ্ঠ পত্রিকা পাঠক জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকে অসাম্প্রদায়িক মনোভাব প্রদর্শন করে সমগ্র জাতির মধ্যে একতা সৃষ্টি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এ কারণে বাংলা ভাষাভাষী সকল মানুষ যার যার নিজস্ব ধর্মীয় সম্মান বজায় রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে আপনাদের প্রকাশিত কালের কণ্ঠ পত্রিকা পড়ে কাজ শুরু করেন এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে কালের কণ্ঠ পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে না নিলে অনেকের ঘুম ব্যাহত হয় বটে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে , আপনি / আপনারা লিগ্যাল নোটিশ প্রাপক/ প্রাপকরা এবং আপনি/ আপনারা কর্তৃক সম্পাদিত/ প্রকাশিত কালের কণ্ঠ ( অনলাইন ভার্সন ) এর অনলাইন ডেস্ক কর্তৃক বিগত ২২ অক্টোবর ৭টা ৫১ মিনিটের দিকে ‘পূজায় নতুন জামা পেয়ে মুখে তার বিশ্বজয়ের হাসি’ শিরোনামে একটি সংবাদ/ প্রতিবেদন / কলাম প্রকাশ করেন।’
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ‘উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন/ কলামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ফেইসবুক পেজ থেকে একটি শিশু বাচ্চা যে মুসলিম ঐতিহ্যের পাঞ্জাবি এবং মাথায় টুপি পরিহিত ছিল, তার ছবি সংগ্রহ করে তা সংবাদ/ প্রতিবেদন/ কলাম এর মধ্যে প্রকাশ/ প্রচার করেন।’
‘উক্ত সংবাদের ষষ্ঠ লাইনে আপনি/আপনারা মন্তব্য করেন যে, ‘মাদ্রাসা পড়ুয়া এই ছেলেটিও এসে দাঁড়িয়েছিল পূজার বাজারের সামনে। সে বুঝতে পারছিল না,ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের বাজারে তার জন্য একটি পাঞ্জাবি জুটবে কিনা। কারণ, ইতোমধ্যে তার মাথায় হয়তো সাম্প্রদায়িক বিষ ঢুকিয়ে দিয়েছে কেউ।’
‘অথচ সাম্প্রদায়িকতা হলো— নিজের ধর্মকে প্রাধান্য দিয়ে, অন্য ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ বা ক্ষতি সাধন করা বা করতে প্রস্তুত থাকা। অর্থাৎ ধর্মনিষ্ঠার ক্ষেত্রে ব্যক্তি নিজের আচরণ এবং ধর্ম বিশ্বাসের গুরুত্ব বেশি দেয়। আর মুসলিম সাম্প্রদায়িক বিষ মানে মুসলিম পরিবার বা মাদ্রাসা আরও বেশি কট্টর, যা মোটেও সঠিক নয়।’
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘এখানে সাম্প্রদায়িক বিষ বলতে আপনি ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মুসলিম পরিবার কর্তৃক প্রদত্ত শিক্ষা নিয়ে, তথা ইসলাম নিয়ে এবং উপরোক্ত হাদিস ও পবিত্র কোরানের আয়াত নিয়ে কটূক্তি করেছেন। তর্কিত চরণগুলো উপরোল্লিখিত হাদিস এবং কোরানকে কটূক্তি করে, ইসলামকে ছোট করে প্রকাশ ও প্রচারের জন্য এই সংবাদ/ প্রতিবেদন/ কলামের মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে অত্র কটূক্তির বাক্য ব্যবহার করেছেন।’
‘নোটিশের মাধ্যমে অবহিত করছি যে, এই লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে অত্র অনলাইন সংবাদের তর্কিত উল্লিখিত অংশ প্রত্যাহার/ কর্তন করে ভুল স্বীকার করে জনসম্মুখে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের চলমান ফৌজদারি, দেওয়ানি বা উভয় আইনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমি হকদার হই বটে এবং অত্র ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সব খরচ আপনার ওপর বর্তাবে।’