চাঁদপুরে অচেতন করে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মিলন মীর (২৩) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই দুই কিশোরী চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) প্রাথমিক ডাক্তারি পরীক্ষায় তাদের শরীরে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এর আগে সোমবার রাতে চান্দ্রা ইউনিয়নের দক্ষিণ মদনা গ্রামে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
নির্যাতিত কিশোরীর মা খাদিজা বেগম জানান, “আমার বোন অসুস্থ হওয়ায় দুই মেয়েকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় যাই। রাতে তাদের সাথে থাকার জন্য অভিযুক্ত মিলন মীরের চাচাতো বোন আসে। সেই সুযোগে প্রতিবেশী বাচ্চু মীরের ছেলে মিলন মীর রবিবার রাতে আমাদের ঘরে আসে। এ সময় সে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে মুড়ি-চানাচুর ও কোকাকোলা খাওয়ায় সেখানে অবস্থানরত তিন কিশোরীকে। তারা ঘুমিয়ে পড়লে ঘরের সিঁধ কেটে ভিতরে ঢোকে সে। এরপর তাদের সঙ্গে কি হয়েছে তারা তা বলতে পারছে না।”
তিনি আরও জানান, “পরে আমার ঘরে সিঁধ কাটা হয়েছে বলে ফোনে আমার জা জানায়। এ সময় তাদেরকে আমি বাচ্চারা ঠিক আছে কিনা দেখার জন্য বলি। এরপর অনেকক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করার পর আমার এক মেয়ে উঠে দরজা খোলে। কিন্তু দরজা খুলেই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। অন্য দুইজন তখনও অচেতন হয়ে পড়েছিল।”
“পরে জ্ঞান ফিরলে কিছু মনে নেই বলে জানায় তারা। এ সময় বুকে ব্যাথা হচ্ছে বলেও জানায় তারা। পরে তাদের চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার পর থেকেই মিলন এলাকা ছেড়ে গা ডাকা দিয়েছে,” যোগ করেন তিনি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিলনের চাচাতো বোন জানায়, “মিলন ঘরে এসে মুড়ি-চানাচুর আছে কি না জানতে চাইলে আমরা বলি নাই। পরে সে মুড়ি-চানাচুর ও কোকাকোলা নিয়ে আসে। আমরা সবাই মিলে খেয়েছি। এরপর সে চলে গেলে দরজা বন্ধ করে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। পরে কি হয়েছে তা বলতে পারছি না।”
চান্দ্র ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী বলেন, “বিষয়টি জানার পর পুলিশসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। যতদুর জেনেছি তাতে মনে হচ্ছে, সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তবে পরীক্ষা করলে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।”
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার। তবে এ ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম উদ্দিন। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি।”
এদিকে প্রাথমিক পরীক্ষায় তিন ছাত্রীর মধ্যে দু’জনকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র গাইনোলোজিস্ট ডা. নওশাবা রুমু। তিনি বলেন, “গাইনি ওয়ার্ডে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা করে তাদের মধ্যে দু’জনের শরীর ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে নিশ্চিত করে বলা যাবে।”