নারায়ণগঞ্জে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীকে হাত পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটুনির অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর ) সকালে উপজেলার তারাবো পৌরসভার মোগড়াকুল এলাকার হাদিউল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত শিক্ষক রাশেদ ও আব্দুর রহিম ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে।
নির্যাতনের শিকার মাদ্রাসা ছাত্র ইয়াছিনকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন রয়েছে। বিশেষ করে শরীরের পেছন দিকে পিঠ থেকে পা পর্যন্ত রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। মাদ্রাসা ছাত্র ইয়াসিন মিয়া উপজেলার উত্তর কায়েতপাড়া এলাকার কামাল মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ঘটনার পর এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে মাদ্রাসাটি বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
ছাত্রের বাবার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শিক্ষকদের নির্দেশ অনুযায়ী মাদ্রাসার উন্নয়নকল্পে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে মাইকিং করে ছাত্ররা পথচারীদের কাছ থেকে টাকা তোলার কাজ করছিল। মঙ্গলবার সকালে টাকা তোলার কাজে যেতে কিছুটা বিলম্ব হয় ইয়াছিনের। পরে ইয়াসিন মিয়াকে শিক্ষক রাশেদ তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বিলম্বের কারণ জানতে চান। পরে শিক্ষক রাশেদ ও আব্দুর রহিম দুজনে মিলে ইয়াছিনের হাত-পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। এরপর তারা লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেন। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আহত ইয়াছিনকে উদ্ধার করে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করান।
বাদীর আরো অভিযোগ, ইয়াছিনকে মারধরের ব্যাপারে কোন ধরণের আইনি পদক্ষেপ না নিতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন মাদ্রাসার অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ও তাদের নিয়োজিত সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, এটা অমানবিক কাজ হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত করে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর এলাকাবাসী মাদ্রাসাটি বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দিলে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক পালিয়ে যান। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।