বিএনপির সন্ত্রাসী কর্তৃক খ্রিস্টান পরিবারের ৩ জন সদস্যকে অপহরণের পর বড়াইগ্রাম উপজেলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। অপহৃতরা হচ্ছেন, ছাতিয়ান গাছি এলাকার রবি কোরাইয়া (৩০), শ্যামল কোরাইয়া (২৮) এবং তাদের পিতা জিমি কোরাইয়া। পারিবারিক সূত্রে জানায়, এর আগে সন্ত্রাসীরা তাদের এসএসসি পরীক্ষার্থী কন্যা সুফলা কোরাইয়াকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এর আগে শনিবার রাতে সন্ত্রাসীরা বনপাড়ার খ্রিস্টানপাড়ায় হামলা চালায় এবং মদ কেনার টাকা না দেওয়ায় প্রভাত রোজারিও (৫০) কে মারধর করে। অভিযোগ পাওয়া গেছে যে, ১ অক্টোবর নির্বাচনের পর থেকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ছাতিয়ানগাছি এলাকায় বসবাসকারী ৫০টি খ্রিস্টান পরিবারকে ক্রমাগতভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা এই সমস্ত পরিবারের অনেকের ক্ষেতের আমন ধান জোর করে কেটে নিয়ে গেছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে গ্রামবাসী জানায়, সন্ত্রাসীরা বনপাড়া বাজারে তাদের তথাকথিত সালিসকে “টর্চার সেল” বানিয়েছে। যারা তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে তাদের এখানে এনে মারধর করা হচ্ছে। সন্ত্রাসীরা গ্রামবাসীকে তাদের দাবি সমূহ লিখে চিঠি দিয়েছে এবং তাদের সাথে দেখা করতে বলেছে। সারোয়ার যোশেফ গোমেজ অনুরূপ একটি চিঠি পান। চিঠিতে সানাউল্লাহ নূর বাবুর বরাত দিয়ে যোশেফকে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তার অফিসে দেখা করতে বলা হয়। দেখা না করলে রোববার সকালে বাবুর ক্যাডাররা তাকে তার বাড়ি থেকে অপহরণ করে বনপাড়া বাজারের ঐ অফিসে নিয়ে যায়। দুপুরে ছাড়া পাওয়ার আগ পর্যন্ত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতির জন্য তাকে বেদম মারধর করা হয়। বনপাড়া পুলিশ এ ব্যাপারে ডেইলি স্টারকে জানায় যে, এ ধরণের কোন অভিযোগ তারা পায়নি। এদিকে বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে এসব ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং সুষ্ঠু তদন্ত করে সন্ত্রাসীদের শাস্তি দেয়ার জন্য ̄ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
ডেইলি স্টার, ১১ ডিসেম্বর ২০০১