নোয়াখালীতে গণধর্ষণ

রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন এলাকায় দুই বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের পর তিনতলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়।

শনিবার (৫ জানুয়ারি) বিকালে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার আদ্যোপান্ত জানাগেছে নাহিদের মেয়ে ফাতেমা জাহান বুশরার (১২) জবানবন্দিতে। গতকাল মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বাবার কুকর্মের কথা তুলে ধরে আদালতে জবানবন্দি দেয় সপ্তম শ্রেণির এই শিশু।

বুধবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ফরিদ উদ্দিন।

ফরিদ উদ্দিন জানান, শনিবার ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। পরদিন রবিবার (৬ জানুয়ারি) নিহতের বাবা ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনে প্রতিবেশী নাহিদকে আসামি করে গেন্ডারিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

উপ-কমিশনার জানান, ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলার আসামি নাহিদকে গ্রেপ্তার করতে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে নিজ বাসার তৃতীয় তলার খোলা জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এতে তার দুই পা ভেঙে যায়। গ্রেপ্তারের পর আসামি নাহিদ পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে রয়েছেন।

উপ-কমিশনার (ডিসি) ফরিদ উদ্দিন জানান, শিশু আয়েশা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে এগিয়ে আসে গ্রেপ্তারকৃত আসামি নাহিদের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বুশরা। গতকাল মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বাবার কুকর্মের কথা তুলে ধরে আদালতে জবানবন্দি দেয় সে।

ফরিদ উদ্দিন বলেন, আদালতে বুশরা জানায়, ঘটনার দিন শনিবার সন্ধ্যার দিকে বাসার বারান্দায় বসে ছিল সে। এ সময় বাবা নাহিদের শোবার কক্ষ থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পায় সে। এরপর সে বাবার কক্ষে যায়। দরজা খুলে দেখে তার বাবা বিছানায় আর শিশু আয়েশা তার কোলে কাঁদছে। তখন নাহিদ বুশরাকে ধমক দিয়ে বলে, এই তুই এখানে এসেছিস কেন? তখন বুশরা অন্য রুমে চলে যায়। এরপর নাহিদ শিশু আয়েশাকে তিনতলার খোলা জানালা দিয়ে ফেলে দেয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা জানতে পেরেছি পাঁচ বছর আগে নাহিদের স্ত্রী মারা যায়। এরপর সে আর বিয়ে করেনি। ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে নাহিদ ওই বাসার তৃতীয় তলায় থাকে। আর গেণ্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডের একটি টিনশেড বাড়িতে বাবা-মা ও বোনদের সঙ্গে থাকতো শিশু আয়েশা (২)। প্রতিদিন সকালে আয়েশার মা-বাবা কাজে চলে যেতেন। আর দিনের বিভিন্ন সময় গেণ্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয়ের সামনের গলিতে চারতলা ভবনের সামনে খেলা করতো সে।

গ্রেপ্তার নাহিদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রতিবেশী শিশু আয়েশাকে খিচুড়ি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় ডেকে নেয় নাহিদ। পরে শিশুটিকে তিনতলা থেকে ফেলে হত্যা করে সে। তাকে এর বেশি কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। কারণ সে অনেক বেশি অসুস্থ।

শিশুদের টার্গেট হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিসি বলেন, এটি বিকৃত মানসিকতা থেকে হচ্ছে। তাছাড়া মাদকাসক্তি এর বড় কারণ। সামাজিক অবক্ষয়ও এর অন্যতম কারণ। আর যেসব জায়গায় এসব ঘটনা ঘটছে সেসব জায়গার অভিভাবকরা একটু কম সচেতন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সূত্র: বাংলাট্রিবিউন

মন্তব্য করুন