কক্সবাজারের চকরিয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যুগান্তরের চকরিয়া প্রতিনিধি মনসুর মহসিনসহ তিন সংবাদকর্মী আদর বাহিনী এবং নয়ন বাহিনীর হাতে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন।
২ মে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের সাফারি পার্কের গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত অন্য দুইজন হলেন- আমার সংবাদ পত্রিকার চকরিয়া প্রতিনিধি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ এবং কক্সবাজারের আঞ্চলিক পত্রিকা আজকের দেশ-বিদেশের চকরিয়া প্রতিনিধি মোস্তাফা কামাল।
জানা যায়, রোববার দুপুরে ডুলাহাজারায় পাহাড় ও বালুখেকো কথিত যুবলীগ নেতা হাসানুল ইসলাম আদরের মাটি কাটা এবং বালু উত্তোলনের বিভিন্ন আস্তানায় হানা দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর। খবর পেয়ে এই তিন সংবাদকর্মী পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানের খবরাখবর সংগ্রহ করে ফেরার পথে সাফারি পার্কের গেটের সামনে যুগান্তরের চকরিয়া প্রতিনিধি মনসুর মহসিনসহ দুই সংবাদকর্মীর ওপর প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে অনুপ্রবেশকারী যুবলীগ নেতা সন্ত্রাসী হাসানুল ইসলাম আদর ওরফে আদর বাহিনী এবং আদরের বড়ভাই ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম নয়ন ওরফে নয়ন বাহিনী।
এ বাহিনী দুটির মধ্যে ছিল ডুলাহাজারা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনাস, ভোলা মেম্বারের ছেলে তানবীর, রুস্তম গনির ছেলে সাকিব এবং চকরিয়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মহিউদ্দিন মেম্বারের ছেলে মিসকাত খোকাসহ প্রায় ১২ জন সন্ত্রাসী।
এসব সন্ত্রাসী শুধু সাফারি পার্কের গেটে হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি, চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দ্বিতীয় দফায় আবারও হামলার চেষ্টা করে বলে জানান যুগান্তর চকরিয়া প্রতিনিধি মনসুর মহসিন। এ নিয়ে পুরো চকরিয়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ২৬ এপ্রিল ‘অল্পদিনে যেভাবে অর্ধশত কোটি টাকার মালিক যুবলীগ নেতা’ এবং ২৭ এপ্রিল ‘যুবলীগ নেতার নেতৃত্বে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি’ হেডলাইনে যুগান্তরের অনলাইনে দুটি নিউজ প্রকাশিত হয়। তাছাড়াও জাতীয় এবং স্থানীয় পত্রিকায় তার বিভিন্ন কুকীর্তির কথা তুলে ধরেন চকরিয়ার সাংবাদিকমহল। ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এমপি জাফর আলমের কথিত পিএস হাসানুল ইসলাম আদর এবং তার ভাই হাবিবুল ইসলাম নয়ন; যার ফলশ্রুতিতে আজকে হামলার স্বীকার হন তিনজন সংবাদকর্মী।
এ ব্যাপারে যুগান্তরের চকরিয়া প্রতিনিধি মনসুর মহসিন বলেন, আমরা তিনজন পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানের নিউজ সংগ্রহ করে ফেরার সময় আমাদের ওপর আদর বাহিনী এবং নয়ন বাহিনীর প্রায় ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আচমকা হামলা চালিয়ে আমাদের মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা আইফোন মোবাইলসহ টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ডুলাহাজারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি চকরিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমার এলাকায় এরকম ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি সাকের মোহাম্মদ জুবাইর বলেন, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফোর্স পাঠিয়েছি। অলরেডি কয়েকটা টিম সন্ত্রাসীদের ধরার জন্য মাঠে কাজ করছে এবং মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।