কক্সবাজার শহরে রবিবার সন্ধ্যায় একদল সংঘবদ্ধ চিহ্নিত সন্ত্রাসী এক ছাত্রলীগ কর্মীকে অপহরণের পর পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে। নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর নাম সুজন বড়–য়া (২০)। তাকে প্রকাশ্যে অপহরণ করার পর নিহত ছাত্রলীগ কর্মীর বড় ভাই স্থানীয় থানায় গিয়ে অপহৃত ভাইকে উদ্ধারের জন্য সাহায্য চাইলে থানার সেকেন্ড অফিসার উল্টো তাকে শাসায় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রত্যক্ষদর্শী, হাসপাতাল ও পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, শহরের বইল্লাপাড়ার বাসিন্দা সহজ-সরল যুবক সুজন বড়ুয়া ক্রিকেট খেলার জন্য বৈদ্যেরঘোনা নামক স্থানে যায় রবিবার বিকালে। তাকে সেখানে দেখতে পেয়ে ওই এলাকার ৭/৮ সন্ত্রাসী তাকে অপহরণ করে স্থানীয় পাহাড়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা সুজনের পা ও হাতের রগ কেটে ফেলে। এর পর তার হাতের ৫টি আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়। পরবর্তীতে হাত ও পায়ের আঙ্গুলের নখ তুলে বুকে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে তারা। তার মৃত্যু নিশ্চিত জেনে সন্ত্রাসীরা পাহাড় থেকে ফেলে দেয় তাকে। স্থানীয় লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। সে হাসপাতালে সন্ত্রাসীদের নাম-ধাম বলে গেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নিহত সুজনের বড় ভাই ছাত্রলীগ নেতা। এ দিকে পারিবারিক সূত্রে অভিযোগ করা হয়েছে যে, অপহরণের পর পরই তার বড় ভাই থানায় গিয়ে পুলিশের সাহায্য চাইলে থানার সেকেন্ড অফিসার দারোগা শাহজাহান তাকে শাসিয়ে বলে, পরের বেলা অন্য রকম এবার নিজের বেলা মজা বোঝ। এ ব্যাপারে সোমবার উক্ত দারোগার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি স্বীকার করে বলেন, ঘটনা এ রকম ভয়াবহ, তা বিশ্বাস না করেই বলেছেন। এদিকে ছাত্রলীগ সোমবার বিকালে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে এক প্রতিবাদসভায় হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও থানার বিতর্কিত দারোগার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে মামলা হয়েছে। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
দৈনিক জনকন্ঠ, ৮ জানুয়ারি ২০০২