কুমিল্লার দেবিদ্বারে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভানী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নবীরুল ইসলাম নবী ও তার সহযোগীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। শনিবার (১১ মে) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন কুমিল্লা আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া বেগম।

ইউপি সদস্য নবীরুল ইসলাম নবী দেবিদ্বার ভানী ইউনিয়নের সূর্যপুর গ্রামের মৃত মো. সামসুল হকের ছেলে। তার সহযোগী হলো মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের বাবুল খানের ছেলে মো. শহীদ খান ওরফে পাখি (৩২)। শুক্রবার (১০ মে) ধর্ষক নবীরুল ও মো. শহীদ খান পাখিকে মুরাদনগর উপজেলার প্রান্তিবাজারে অভিযান চালিয়ে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে ধর্ষণের শিকার তরুণী ইউপি সদস্য নবীরুল ইসলাম নবীসহ ছয় জনের নাম উল্লেখ করে দেবিদ্বার থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলো সূর্যপুর গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে মো. আকাশ (৩০), মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের বাবুল খানের ছেলে মো. শহীদ খান ওরফে পাখি (৩২), একই গ্রামের সুলতান আহম্মেদ খন্দকারের ছেলে মো. শামীম খন্দকার (২৮), সূর্যপুর গ্রামের মালেক ওরফে মালু মিয়ার ছেলে মো. মোস্তফা (২৭), একই গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. আলীম (২৮) এবং অজ্ঞাত আরও দুই জন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি রাত ১০টা থেকে পরদিন রাত ২টা পর্যন্ত দেবিদ্বার উপজেলার সাহারপাড় গ্রামের মাঝিবাড়ির দক্ষিণ পাশে মোস্তফা মিয়ার পরিত্যক্ত ঘরের পাশের খালি জায়গায় ওই তরুণীকে ইউপি সদস্য নবীরুলসহ ৯ জন পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে তারা ওই তরুণীকে ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের এক পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।

ওই তরুণী মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, ইউপি সদস্য নবীরুল ইসলামের নেতৃত্বে শামীম, আকাশ, পাখিসহ অজ্ঞাত আরও ৮-৯ যুবক তাকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। নির্যাতনের শিকার তরুণী ধর্ষকদের মুখে একে অপরকে ডাকার সময় শুনে ২-৩ জনের নাম জানতে পেরেছেন। ওই তরুণী আরও জানান, তিনি চিৎকার করতে পারেননি। কারণ তারা তার হাত-মুখ চেপে ধরে রেখেছিল। তারা চিৎকার করলে তাকে মেরে ফেলবে বলে বারবার হুমকি দিতে থাকে। তার হাতে কনডম দিয়ে তাকে খারাপ মেয়ে বলে চালিয়ে দেওয়ার জন্য মোবাইলে ভিডিও করে।

এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি মো. জহিরুল আনোয়ার জানান, ইউপি সদস্য নবীরুল ইসলাম নবী ও শহীদ খান ওরফে পাখি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দির রের্কড শেষে আসামিদের কুমিল্লা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এজাহারে অজ্ঞাত দুই জনসহ আরও ছয় জনের নামে মামলা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন