বিএনপির ডাকে হরতালের প্রথম দিন ১৮ মার্চ সোমবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত নগরের দৌলতপুর পাবলা বণিকপাড়ার দুটি হিন্দু মন্দির ও তাদের বেশ কিছু বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে শতাধিক যুবক দৌলতপুর পাবলা সর্বজনীন কালীমন্দিরের কাছে একটা ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তারা মন্দিরের গেটে হামলা চালায়। তারা তিনটি দলে ভাগ হয়ে লাঠি, রামদা ও ইট নিয়ে গালিগালাজ করতে করতে বণিকপাড়ার হিন্দুদের বাড়িঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় হামলাকারীরা অশালীন ও সাম্প্রদায়িক গালিগালাজ করে ঘর থেকে অনেককে বের হতে বলে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে এ তাণ্ডব চলে। এরপর হামলাকারীরা পাশের গাছতলা মন্দিরের সামনেও দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। একই সঙ্গে তারা মন্দিরের ভেতর ইট ও কাচের বোতল ছোড়ে। হামলাকারীদের লাঠির আঘাতে স্মৃতি রানী দত্ত (৪০) নামের এক নারীসহ কয়েকজন আহত হন।
সরেজিমনে গিয়ে ১৯ মার্চ পাবলা বণিকপাড়ার একটি মন্দিরের ও ৫০-৬০টি বাড়িঘরের ফটকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। বাড়ির জানালা, ঘরের চালা ও গ্রিলে কোপের চিহ্ন রয়েছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে পাড়ার লোকজন দাবি করেন, শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে দুবৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে পাবলা বণিকপাড়া সর্বজনীন কালীমন্দিরের সেবায়েত দুর্গা রানী পাল বলেন, ‘বোমা ফাটানোর পর ওরা দৌড়ে এসে মন্দিরে ঢুকতে চেষ্টা করে। আমি দরজা আটকে তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তখন ওরা খুব খারাপ গালিগালাজ করে কাচের বোতল ও ইট ছুড়তে থাকে। একপর্যায় তারা লাফিয়ে ভেতরে ঢুকে মন্দিরের টাইলস ও কাচ ভাঙচুর করে।’
পাবলা বণিকপাড়া সর্বজনীন কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক তিলক গোস্বামী বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর আগে কখনো এমন ঘটনা দেখিনি। আজ কেন যে আমাদের ওপর এমন হামলা হলো, তা বলতে পারছি না।’
এ ঘটনার পর রাতে খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ও মেট্রোপলিটান পুলিশ কমিশনার শফিকুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন জানান, ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হুমায়ুন কবির (২৬) ও আরমান হোসেন (১৮) নামের দুজনকে আটক করা হয়েছে।