গাজীপুরের টঙ্গীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ ও গোপনে ভিডিও ধারনের পর তা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে টঙ্গীর মাছিমপুর নামাবাজার বস্তির একটি ঘর থেকে আমিনুর মিয়া নামে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

প্রেপ্তার আমিনুরের বাড়ি জামালপুর জেলার আরংহাটি গ্রামে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আমিনুরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও পর্ণোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা। শুক্রবার সকালে আসামিকে গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়। পরে বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, প্রায় দেড় বছর আগে টঙ্গীর কলাবাগান বস্তির এক তরুণীর সঙ্গে গার্মেন্টস কর্মী আমিনুরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দেড় মাস আগে আমিনুর ওই তরুণীকে গাজীপুর মহানগরের গাছা (তারগাছ) এলাকার একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও তরুণীর ইমো অ্যাপে পাঠায়। ওই ভিডিওটি এলাকার আরও কয়েকজনের কাছে চলে যায়। গত রবিবার টঙ্গীর অলিম্পিয়া স্কুলমাঠে আমিনুরকে ডেকে নেয় ওয়ার্ড ছাত্রলীগের তিন নেতা। পরে টাকার বিনিময়ে স্থানীয়দের নিয়ে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ তদন্তে নামে। শুক্রবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার পিযুষ দে’র নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে নামাবাজার বস্তির একটি ঘর থেকে অভিযুক্ত আমিনুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওসি আরও জানায়, ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, কয়েকদিন আগে টাকা নিয়ে স্থানীয়রা সালিশ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমরা কোনো টাকাও পাইনি। বৃহস্পতিবার সকালে থানায় গিয়ে আমিনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।

এদিকে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে টাকার বিনিময়ে মীমাংসার চেষ্টাকারী ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহসভাপতি পারভেজ ঢালি, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম সানি ও সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ধর্ষণের আসামি আমিনুরকে মারধর ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে মীমাংসার কথা বলে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা দাবি করেন তারা। এছাড়াও আমিনুরের কাছ থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নেয় এবং খোলা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে রাখে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি টঙ্গী) পিযূষ দে বলেন, যে তিনজন ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা টাইমস

মন্তব্য করুন