টাঙ্গাইলের নাগরপুরে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পচাসারুটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলীর (৪৫) বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ফরহাদ আলীসহ ৩ জনকে আসামি করে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি আদালত তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডিবিকে (গোয়েন্দা শাখা) দায়িত্ব দেন। এদিকে ওই গৃহবধূর সাথে শিক্ষক ফরহাদ আলীর আপত্তিকর কথপোকথনের একাধিক অডিও ক্লিপস ভাইরাল হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, চাকরি দেওয়ার সূত্র ধরে ওই গৃহবধূর সাথে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলীর পরিচয় ঘটে। চাকরি প্রত্যাশী ওই গৃহবধূর দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে মোবাইল ফোনে ও সরাসরি শারিরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দিতে শুরু করেন ফরহাদ আলী। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি এলাকার মাতাব্বরদের জানালে, এ নিয়ে একটি গ্রাম্য সালিশ বসে। প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী প্রভাবশালী হওয়ায় গ্রাম্য সালিশে বসতে রাজি হননি।
পরে গত ১ নভেম্বর ফরহাদ আলী তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে মুখ চেপে ধরে বিবস্ত্র করে ফেলে এবং কাপড়ের আচল দিয়ে তার গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করে। পরে সেটি ব্যর্থ হয়ে লাঠি দিয়ে গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। সে সময় তার চিৎকারে গৃহবধূর স্বামীসহ আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে এ ঘটনা কাউকে জানালে ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়াসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।
পরে আত্মীয় স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ওই নারী গত ৯ নভেম্বর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলী আদালতে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক ফরহাদ গ্রামের প্রভাবশালীদের দিয়ে মামলা তুলে নিতে গৃহবধূর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ বলেন, “সভাপতির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলার বিষয়টি আমরা জেনেছি, তবে সংগঠন তার ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় নেবে না।”
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবির (দক্ষিণ) এসআই ওবায়দুর রহমান বলেন, “মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।”