ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা এ চার্জশিট দাখিল করেন।
বুধবার (১৭ মার্চ)পুলিশ ও আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর আসামি শফিকুল ইসলাম কাজল তার ফেসবুক আইডি থেকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে থাকেন। এ সকল অনলাইন মাধ্যম থেকে অসত্য তথ্য দিয়ে খবর প্রচার করেন আসামি কাজল। বাদীকে পাপিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে যৌন সম্রাজ্ঞী হিসাবে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে তীর চিহ্ন দিয়ে মিথ্যা শনাক্ত করেন। পাশাপাশি বাদীকে নারী ব্যবসা ও মাদক ব্যবসায় পাপিয়ার অন্যতম সহযোগী হিসেবে অপমানকর মিথ্যা তথ্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। ’
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আসামি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিভিন্ন এমপি মন্ত্রীসহ বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিলসহ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা মানহানিকর তথ্য আপলোড করেন।’
এ ঘটনায় বাদী সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কামরাঙ্গীরচর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে মোট নয়জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর রাজধানী হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাজলকে জামিন দেন হাইকোর্ট। গত ২৪ নভেম্বর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় দায়ের করা আরেকটি মামলায় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত বছরের ৯ মার্চ কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর। এরপর ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানী হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাজলের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হয়।
গত বছরের ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে ফটোসাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এরপর গত বছরের ৩ মে অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির দায়ের করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫৪ ধারায় অপর একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।