নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিক্রিতে নানা অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন একজন সাংবাদিক। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের নেতৃত্বে তার কর্মী-সমর্থকরা ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এই হামলার ঘটনা ঘটে। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হামলার শিকার সজল ভূঁইয়া নামের ওই সাংবাদিক বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এসএ টিভির নরসিংদী প্রতিনিধি। ঘটনার পরপর স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেওয়ার পর তাকে হাসপাতালটির পুরুষ বিভাগে ভর্তি করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাল চুরি ও ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রিতে নানা অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন করতে বৃহস্পতিবার আমিরগঞ্জে আসেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এশিয়ান টিভির সিনিয়র রিপোর্টার বাতেন বিপ্লব। তার পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ওই প্রতিবেদনের তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন এসএ টিভির নরসিংদী প্রতিনিধি সজল ভূঁইয়া। তথ্য সংগ্রহ শেষে অনিয়মের বিষয়ে আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের বক্তব্য নিতে গেলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

সাংবাদিক সজল ভূঁইয়ার অভিযোগ করে বলেন, ‘চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ চাল না দেওয়া ও আত্মসাতের বিস্তর অভিযোগ আছে স্থানীয় লোকজনের। এসব তথ্যের অনুসন্ধান করতে বাতেন বিপ্লবের সঙ্গে রায়পুরার আমিরগঞ্জে গিয়েছিলাম। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে আমাকে দেখেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন চেয়ারম্যান নাসির। কারণ এর আগেও তার বিরুদ্ধে কয়েকটি প্রতিবেদন করায় তিনি আমার প্রতি ক্ষুব্ধ।’

নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দ আমীরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সাংবাদিক সজল ভূঁইয়াকে হাসপাতালে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। তার শরীরে রক্তাক্ত জখম ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।

অভিযুক্ত আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান মুঠোফোনে জানান, ঘটনার সময় আমরা আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছিলাম। ওই সাংবাদিকই প্রথম আমাদের ওপর হামলা করে। পরে আমরা প্রতিহত করি। আমাদেরও কয়েকজন লোক হাসপাতালে ভর্তি আছে। তবে কাকে, কোন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে প্রতিবেদকের এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কাদির জানান, এই ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বাড়িতে রাতেই অভিযান চালিয়েছি। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যানসহ জড়িতরা সবাই পলাতক থাকায় তাদের আটক করা যায়নি।

বাংলা ট্রিবিউন

মন্তব্য করুন