জাতীয় সম্প্রচার কমিশন এবং অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই অনলাইন নিউজ পোর্টাল, পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন সংস্করণ আলাদাভাবে নিবন্ধন করতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশকে সংবাদ মাধ্যমের উপর সরকারের ‘সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণ ও হস্তক্ষেপ’ প্রতিষ্ঠা করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি।

 

সংস্থাটি বলছে, এই নির্দেশ মূলত গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে সরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অপচেষ্টা বাস্তবায়নের পথে আরও এক ‘আত্মঘাতী পদক্ষেপ’।

১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দেশের সমস্ত অনলাইন সংবাদ মাধ্যম এমনকি দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশন চ্যানেলের অনলাইন পোর্টালকে নতুন করে নিবন্ধনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“তথ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে এই নির্দেশ নিবন্ধিত সংবাদ মাধ্যমগুলোকে সরকারি সুযোগ সুবিধার আওতায় আনা এবং অপসাংবাদিকতা রোধের কৌশল বলা হলেও মূলত এটি দেশের গণমাধ্যমের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ নিশ্চিত করবে।”

টেলিভিশন, বেতার ও ছাপা পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণ এবং আইপি টিভি ও ইন্টারনেট রেডিও চালাতে হলেও সরকারের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে-এমন বাধ্যবাধকতা রেখে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা সংশোধনের প্রস্তাবে সোমবার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক সরকারের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনার করে বিবৃতিতে বলেন, “দেশে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা বিদ্যমান থাকার পরও পৃথক নিবন্ধনের এই নির্দেশ সাংবাদিকতার স্বার্থে নাকি গণমাধ্যমকে চাপে রেখে সরকার ও স্বার্থান্বেষী মহলকে সমালোচনা ও জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা – এ প্রশ্ন আসাটা অবান্তর নয়।

“করোনা অতিমারির সংকটকালে যখন গণমাধ্যমগুলো টিকে থাকার লড়াইয়ে, তখন খসড়া অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা চূড়ান্ত না করেই তাড়াহুড়ো করে নিবন্ধনের এই নির্দেশ রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রচেষ্টার নিদর্শন।”

ইফতেখারুজ্জমান বলেন, “প্রচলিত নিবন্ধনের আওতায় দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনগুলোর অনলাইন পোর্টাল চালু থাকা উচিত- গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের এমন মতের তোয়াক্কাই করা হলো না।

“বিশেষ করে অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা অনুযায়ী নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বা কমিশন গঠন চূড়ান্ত না করেই নতুন নিবন্ধনের এই নির্দেশ মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য কার্যকর হুমকি হয়ে উঠার আশঙ্কা অমূলক নয়।”

আবার নীতিমালায় কমিশন গঠনের কথা বলা হলেও সেই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার কোন ক্ষমতা না থাকায় তা তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘আজ্ঞাবহ’ কর্তৃপক্ষে পরিণত হবে বলেও মনে করছে টিআইবি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

 

 

মন্তব্য করুন