ফেসবুকের পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে এক হিন্দু প্রবাসীর বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৪ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ ও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় প্রবাসী এক হিন্দু ব্যক্তির ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া হয় বলে গুঁজব ছড়ানো হয়। এরই জের ধরে স্থানীয় একদল উগ্রপন্থী মুসলমান বুধবার (৪ নভেম্বর ) রাতে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় হামলাকারীরা বাড়িতে ভাঙচুর করার পাশাপাশি লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ উঠে।
এদিকে হামলার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নেন। এ কারণে তারা হামলা থেকে বেঁচে যান।
হামলার ঘটনার খবর পেয়ে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন আহাম্মেদ পুলিশ ফোর্সের পাশাপাশি স্থানীয় দড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা শফিকুল ইসলাম স্বপনকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে ওই বাড়ি ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান ঐক্য পরিষদের উপজেলা শাখার সভাপতি মিন্টু রঞ্জন সাহা বলেন, আমরা ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলেছি। তার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের এলাকার সংসদ সদস্য ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলামকেও জানানো হয়েছে। তিনি তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাড়ির মেরামত করার জন্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢেউটিন দেওয়া হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারাই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক তাদের সবার গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয়দের কাছ থেকে খোঁজ খবর নেন। হামলার পর ৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় চার কিশোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আনিসুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে ও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।